বুধবার, ১১ আগস্ট, ২০১০

ছাগুপোন্দনপুরাণ


এবারের পর্ব লিখেছেন প্রিয়াম শংকর ঘোষ। 
বাকি ছাগুপোন্দকগুলান চুপ ক্যান? জলদি আওয়াজ দ্যান!


তিন.

এটা মাত্র কয়দিন আগের ঘটনা। আমি এক কোম্পানি আয়োজিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে গেসিলাম। যেহেতু এটা বাংলাদেশ, কাজেই স্বাভাবিকভাবেই অনুষ্ঠান শুরুর আগে দিয়েও হল অনেকটাই ফাঁকা। আমি পিছনের দিকে একটা সারিতে চেয়ারে বৈসা গেলাম এবং দেখলাম ঐখানে পুরা সারিতে আমি আর আমার পাশের মানুষটা ছাড়া সব সিট খালি। যথারীতি অনুষ্ঠান শুরু হলো কোরান তেলোয়াতের মাধ্যমে। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হলো, তারপরেই একজন উঠল গীতা পাঠ করার জন্য। আমি আয়োজকদের ধর্মীয় অনুভূতির ব্যাপারে সচেতনতা দেখে পাশের মানুষটাকে বললাম:
- ভাই, দেখলেন, এরা কতজন এর প্রতি সুবিচার কররার চেষ্টা করতেসে?
সে বলল, হাঁ ভাই, ঠিকই বলেছেন।
- এটাই মনে হয় প্রকৃত মুসলিম এর দায়িত্ব, তাই না? মানে সব ধর্ম কে সম্মান দেখানো।
- অবশ্যই ভাইয়া। এটা যদি সবাই বুঝত, তাহলে জানতে পারত ইসলাম কত মহান।
- তাহলে আমার মনে হয় এখানে অবশ্যই বাইবেলও পাঠ করা উচিত, কী বলেন?
এইবার লোকটা বিরক্তি নিয়ে আমার দিকে তাকালো।
আমি থামলাম না, বলে গেলাম:
- তবে ভাই, এখানে আমাদের মাঝে হয়ত কোনো ইহুদি ভয়ে লুকিয়ে আছে। তাদের জন্যও তো তরাহ অবশ্যই পাঠ করা উচিত, কী বলেন?

এইবার লোকটা খেপে গিয়ে আমার পাশ থেকে উঠে গেল এবং আরো ১০ সিট দূরে গিয়া বসলো। মজার ব্যাপার হলো, গীতা পাঠ শেষ হবার লগে লগে শুরু হলো বৌদ্ধদের ত্রিপিটক পাঠ। এবং আমি সাথে সাথে ওই লোক এর দিকে হাসি মুখে তাকালাম. তাকায়ে দেখি ওই লোক নিজেও আমার দিকে তাকায়ে ছিল এবং এই বার সে উঠে এক্কেবারে সামনের দিকে চলে গেল।

আরে ভাই আমি কি দোষ করলাম? কেউ কি একটু বলবেন?


চার.

আমার এক পরিচিত মুসলিম মেয়ে "মাই নেইম ইজ খান" মুক্তি পাবার পর আমাকে বলতেসিল সিনেমাটা আসলে কতো অসাধারণ হইসে। আমি তখনো সিনেমাটা দেখি নাই, তাই তার কাছেই কাহিনী জানতে চাইলাম। ও আমাকে পুরা কাহিনী বলল। শুনে আমার কাছে যেই অংশটা খটকা লাগলো, সেটা হলো - শাহরুখ এখানে কাজলকে কনভার্ট হতে বলেনি কিন্তু নাম ঠিকই পাল্টায়ে দিসে। আমি ওকে এই ব্যাপারটা নিয়ে বলার পর সে আমাকে বলল ,যে এখানে নামটা আসল না, ওরা যেভাবে নিজদের মধ্যে অনুভূতিটাকে গুরুত্ব দিয়ে বিয়ে করে নিজ নিজ ধর্ম রক্ষা করসে সেটাই আসল।

ইসলামে বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে মুসলিম পুরুষ পরধর্মের নারীকে বিয়া করতে পারে, কিন্তু পরধর্মের পুরুষকে কোনো মুসলিম মেয়ে কোনো শর্তেই বিয়া করতে পারেনা। এই নিয়মটা আমি জানতাম এবং আমার কাছে মনে হলো, ও নিজেও জানে। তাই আমি শুধু ওকে একটা কথাই বললাম, আচ্ছা দেখো, আমি তো মুর্খ মানুষ তাই জিগায়তেসি। নাম তা না হয় ব্যাপার না। কিন্তু এখানে যদি ছেলেটা হিন্দু আর মেয়ে তা মুসলিম হত এবং তারা এভাবে বিয়া করত মেয়েটার নামে হিন্দুয়ানি লাগায়ে, তাহলেও কি তুমি একইভাবে ব্যাপারটা নিতে পারতা?

মেয়ে আমারে পারলে তখন পুইড়া ফেলে! সে প্রায় ৫ মিনিট ধইরা ভাবলো এবং তারপর কোনো কথা না বইলা মুখ ফিরায়ে চইলা গেল।

হায় রে ধর্মের মহত্বের মুখোশ। কেন আমার সামনে দেখাইতে আসে?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন