"আব্বু, ওই পাজিগুলো আমাকে পদে-পদে বেইজ্জতি করে! তুমি ওদেরকে নিষেধ করে দাও যাতে আমাকে আর অপমান না করে!"
ঠিক এরকম অভিযোগের সুর পেলাম জাতিসংঘের কাছে Islamic Educational, Scientific and Cultural Organization (ISESCO)-র করা দাবির ভেতরে। তাদের আব্দার: ধর্মগুলোর বিরুদ্ধে সব ধরনের offence নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে!
লক্ষ্য করুন, বলা হচ্ছে "ধর্মগুলো", কিন্তু আসল উদ্দেশ্য যে ইসলামকে সমালোচনা, কৌতুক বা ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ থেকে রক্ষা করা, তা বুঝতে বাকি থাকে না। ইসলামের মতো স্পর্শকাতর ধর্ম আর নেই। বাকি প্রধান ধর্মগুলো অনেকখানিই সমালোচনা-প্রুফ। ব্যঙ্গ-বিদ্রূপও তাদের বেশ গা-সওয়া। অপছন্দ করে নিশ্চয়ই, তবে সেটির প্রকাশ খুব কম ক্ষেত্রেই বিধ্বংসী।
এক চার্চের উন্মাদ যাজকের কোরান পোড়ানোর পরিকল্পনার পরিপ্রেক্ষিতে দাবিটি তুলেছে এই ইসলামী সংগঠন। কোরান পোড়ানো প্রকল্প সমর্থনের প্রশ্নই আসে না, তবে ইসলামীদের দাবি প্রসঙ্গে মনে যে প্রশ্নগুলো জাগে, সেগুলো করার আগে গুগলিয়ে-নিমেষে-পাওয়া কয়েকটি খবর (বা অন্তত হেডিং) পড়ে নেয়া যাক:
১. মুসলিম ছাত্ররা বাইবেলের ওপরে মুত্রত্যাগ করে, থুতু ফেলে পরে তা পুড়িয়ে ফেলে (ডিসেম্বর, ২০০৬)
২. গাজায় মুসলিমরা বাইবেল পুড়িয়েছে (জুন, ২০০৭)
৩. পাকিস্তানে বাইবেল পুড়িয়েছে মুসলিমরা (ডিসেম্বর ২০০৮)
৪. সৌদি সরকার শত-শত বাইবেল পুড়িয়ে ধ্বংস করেছে (মে, ২০০৫)
...
খুঁজলে আরও নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে।
এখন কথা হচ্ছে, এই ঘটনাগুলোর পরে এরা নীরব ছিলো কেন? সব ধর্ম রক্ষা করার মহান উদ্যোগটি তারা তখন কেন নেয়নি? কেন তাদের আবেদনপত্রে এই ঘটনাগুলোর উল্লেখ নেই, আছে শুধু কোরান পোড়ানোর অবাস্তবায়িত পরিকল্পনার কথা?
কারণ আর কিছুই নয়। এই আবেদন বস্তুত সমালোচনা ও ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের হাত থেকে ইসলাম রক্ষার অসহায় আবেদন। এটি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে আবেদনপত্রে সব ধর্মের পক্ষ নিয়ে কথা বলতে শুরু করে পরে এসে বক্তব্য ইসলামমুখী হয়ে পড়ে দেখে: It is a blot on humanity that such discriminatory attack against Islam and Islamic holy sites is continuing in the absence of deterrent legal measures, local and international.
বুঝি না, জাতিসংঘের কাছে কেন আবেদন করতে হবে? তাদের আল্লাহ কি নাকে তেল দিয়ে ঘুমায়? তার পেয়ারে বান্দাদের আকুতিতে সাড়া দিয়ে ইসলাম ও কোরানকে কাফেরদের হাত থেকে রক্ষা করতে সর্বশক্তিমান আল্লাহ কি কার্যত অক্ষম? omnipotent হিসেবে প্রচারিত আল্লাহ কি তাহলে impotent?
ইসলামের বিরুদ্ধে এতো "অনাচার" দেখেও আল্লাহর নির্বিকার নিষ্ক্রিয়তা একটি কথাই প্রমাণ করে শুধু: কী ভীষণ অনুপস্থিত সে!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন