রবিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১০

কোরানের বাণী / কেন এতো ফানি – ১০

লিখেছেন ব্লগার রাইয়ান

আমাদের মানবজীবনে যত রকমের সমস্যা আছে, তার সকল সমাধান নাকি কোরানে দেয়া আছে। কোরান ঠিকভাবে অর্থ বুঝে পড়লেই নাকি জাগতিক সকল সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। ইতিপূর্বে আমরা কোরান পাঠ করে জানতে পেরেছি, কীভাবে নারীকে ব্যবহার করতে হবে, কোন নারীকে বিবাহ করতে হবে, কোন নারীকে ঈমানের পথে ধরে রাখার জন্য প্রহার করতে হবে, কীভাবে মুসলমান হত্যার প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে, কীভাবে বিধর্মীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য অন্য মুসলমানদের উৎসাহিত করতে হবে, বিধর্মীদের বিশ্বাস করা সমীচীন কি না, "ঘরের পেছনের দরজা" ব্যবহার করা যাবে কি না, পানি পাওয়া না গেলে আকাম-কুকামের পর কীভাবে নিজেকে পবিত্র করতে হবে, ব্যাংকিং ব্যবস্থার স্বরূপ কেমন হবে ... ইত্যাদি। আরও পড়তে থাকলে আরও হয়তো অনেক কিছুই জানতে পারবো। আজকে দেখবো, সম্পত্তি ভাগ-বাটোয়ারা কীভাবে করতে হবে, রসূলের সাথে বে-তমিজ আচরণ করলে কী শাস্তি দিতে হবে এবং চুরি করলে কী সাজা হবে ইত্যাদি। নিচের আয়াত গুলো পড়ুন।


সূরা আন-নিসা, আয়াত ১৭৬: এখানে সম্পত্তির বন্টন কীভাবে হবে, তাই আলোচনা করা হয়েছে। একেকজন মানুষের ভাই-বোন, পুত্র-কন্যার সংখ্যা একেক রকম। কারও ভাই আছে তো বোন নেই, কারও বোন আছে তো ভাই নেই, কারও কোনোটাই নেই, আবার কারও উভয়ই আছে কিন্তু সংখ্যা সমান নয় অথবা সমান। একই কথা পুত্র-কন্যার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। Permutation & Combination করলে অসীম সংখ্যক ফলাফল পাওয়া যাবে। কিন্তু এর মধ্য থেকে আল্লাহ মাত্র তিনটি ক্ষেত্র নিয়ে কেন আলোচনা করেছেন, তা বুঝলাম না। আবার যে তিনটি ক্ষেত্রে সম্পত্তির বন্টন করেছেন, তারও পুরো হিসাব দেননি। ক্ষেত্র তিনটি নিম্নরূপ:

ক্ষেত্র ১) একজন নি:সন্তান পুরুষ, যার একজন বোন আছে: এক্ষেত্রে বোন পাবে তার সম্পত্তির অর্ধেক। বাকি অর্ধেক কই যাবে? বোনটিও যদি নি:সন্তান হয়, তবে তার ভাই (অর্থাৎ প্রথম ব্যক্তিরই ভাই) এই সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে। 

আল্লাহর পেঁচিয়ে কথা বলার বদ অভ্যাস আছে। সোজাসুজি বললেই পারতো, এক ব্যক্তির এক বোন ও এক ভাই থাকলে...। তা না বলে বললেন, এক ব্যক্তির এক বোন থাকলে এবং ঐ বোনের এক ভাই থাকলে ...।

ক্ষেত্র ২) এক ব্যক্তির দুই বোন আছে: এক্ষেত্রে দুই বোন পাবে সম্পত্তির ২/৩ অংশ অর্থাৎ প্রত্যেক বোন পাবে ১/৩ অংশ। বেশ ভাল কথা! কিন্তু বাকি ১/৩ অংশ কই যাবে?

ক্ষেত্র ৩) এক ব্যক্তির ভাই-বোন উভয়ই আছে: এক্ষেত্রে একজন পুরুষ (ভাই) পাবে একজন জন নারীর (বোনের) দ্বিগুণ। কেন? ভাই-বোন সমান পাবে না কেন? এখানেও কুটিল আল্লাহ নারীদের বঞ্চিত করেছেন।

সূরা আল-মায়েদা (ময়দা নয়), আয়াত ৩৩: এখানে আল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি রসূলের পায়ুপথে অঙ্গুলি সঞ্চালন করে, তবে তাকে খুন করতে অথবা শুলে চড়াতে অথবা হাত-পা কেটে তাকে পঙ্গু করে দিতে, অথবা দেশ থেকে বের করে দিতে। এখানেই শেষ নয়। এগুলো হল ইহলৌকিক শাস্তি। পরলোকেও তাদের জন্য শাস্তি রয়েছে।

আর রসূল যখন রাতের অন্ধকারে দলবলসহ আক্রমণ করে নিরীহ ব্যক্তিদের হত্যা করত, তাদের মালামাল লুন্ঠন করত, তাদের স্ত্রী-কন্যাদের বন্দী করে ক্রীতদাসী বানাত এবং ইচ্ছেমত ভোগ করত, তখন নপুংসক আল্লা, নবীর সেই পর্ণো লাইভ দেখত আর গীটার বাজাত। 

সূরা আল-মায়েদা, আয়াত ৩৮: এখানে আল্লাহ চুরির শাস্তি হিসেবে হাত কাটার নির্দেশ দিয়েছেন। এ থেকে প্রমাণিত হয়, আল্লাহ অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ। কিন্তু একই আল্লাহ যখন ধর্মান্ধ মানুষকে বিধর্মীদের খুনের নির্দেশ দেন, তাদেরকে যে কোনো অবস্থায় অবিশ্বাস করতে বলেন, বিধর্মীদের কোনো কারণ ছাড়াই দোযখে নিক্ষেপের কথা বলেন, তখন আল্লাহর ন্যায়পরায়ণতা নিয়ে শুধু প্রশ্নই জাগে না, তাকে একজন সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদ বলে মনে হয়। শাস্তির কথা যখন আসলোই, তখন শুধু চুরি কেন, সব অপরাধ নিয়ে বলতে হবে। পারমানবিক বোমা বর্ষন, জীবাণু অস্ত্র তৈরি ও ব্যবহার করা, সাইবার ক্রাইম, ডাটাবেজ হ্যাকিং, ভাইরাসের মাধ্যমে অমূল্য ডাটাবেজ নষ্ট করা ইত্যাদির শাস্তি নিয়েও বলতে হবে। এগুলোর প্রতিটি, চুরির চেয়ে কোটি গুণ বড় অপরাধ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন