আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১০

গোখরো কি শান্তির প্রাণী?

লিখেছেন আসিফ মহিউদ্দীন

আজকে আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি অত্যন্ত জটিল একটি আলোচনা করতে, যেই আলোচনাটা এতই জটিল যে আমরা এই বিতর্ক চালাবার জন্য নিয়ে এসেছি একজন মহান আধ্যাত্মিক জ্ঞানীকে, এবং একজন ফাউল নাচ-তিককে। আপনাদের ধৈর্য্যচূত্যি না ঘটিয়ে তবে শুরু করে দিচ্ছি আমাদের আজকের বিতর্ক।


বিতর্ক নং ১:
বিতর্কের বিষয়ঃ গোখরো কি শান্তির প্রাণী?

আলোচনার বিষয়বস্তুর পক্ষে রয়েছেন জনাব মৌলানা আলহাজ্ব হয়রানপুরী শানে মাহফুজীয়া কাঙ্গালিলিয়া আল্লামা তালগাছ। এবং আলোচনার বিপক্ষে আছেন ফেইসবুক ভিআইপি মেম্বার স্বঘোষিত ফাউল নাচ-তিক জনাব আচিপ।

আসুন তবে শুরু করা যাক বিতর্ক।

আল্লামা তালগাছ: শুরু করিতেছি পরম করুণাময় এবং অসীম দয়ালু মহান সর্পেশ্বরের নামে, যিনি সৃষ্টি করিয়াছেন মাম মিনারেল ওয়াটার এবং বানাইয়াছেন তালগাছ।

গোখরো অবশ্যই শান্তির প্রাণী৷

গোখরো ঐক্যের প্রাণী। গোখরো সর্বশেষ ঐশী প্রাণী হিসেবে সর্ব যুগেই মানুষের জন্যে বয়ে এনেছে তৌহিদের থুক্কু, শান্তির বিশ্বজনীন বার্তা এবং স্বাগত জানিয়েছে আলাপ-আলোচনা, অভিন্ন চিন্তা এবং আন্তরিক অভিন্নতার দিকে ৷

সেইযুগে শান্তির বার্তাবাহী এবং ঐক্যের পয়গম্বর মহান সর্প গোখড়িয়াহ শান্তির ছন্দময় শ্লোগান দিয়েছিলেন এবং অন্ধকারাচ্ছন্ন শীতল বা অনুর্বর ভূমিতে শান্তির সূর্যালোক বিকিরণ করেছিলেন। সেই আলোর বরকতে সেই সর্প-অন্তরগুলোতে জেগে উঠেছিল আশার আলো এবং মুক্তির উদ্ভাস৷ বিচ্ছিন্ন সর্প গোত্র ও বংশের মধ্যে ঐক্য গড়ে উঠলো এবং পরস্পরে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হলো ৷ শতাব্দীর পর শতাব্দী পেরিয়ে আজো সেই মোহনীয় সুর সমস্ত জাহানের ছোটবড় প্রাচীনপন্থী, মডারেটপন্থী মন ও মননকে পরস্পরের দিকে টানছে এবং তাঁদেরকে সর্বোন্নত পথের দিকে আহ্বান জানাচ্ছে ৷

নাচ-তিক আচিপ: হালায় কয় কি? গোখরো ক্যামতে শান্তির প্রাণী হইতে পারে? গাঞ্জা খায়া আইছোস নাকি রে বলদা?

আল্লামা তালগাছ: দেখুন নাচ-তিক সাহেব, গালাগালি করবেন না। গোখরোদের মধ্যে গালাগালি করা ঠিক না। গালাগালি করা খুব খারাপ, পবিত্র কেতাবে বর্ণিত আছে, "হে গোখরো কুল, তোমরা গালাগালি করিয় না, প্রয়োজন পরিলে অবিশ্বাসীদের কল্লা ফালাইতে পারো, তবে গালাগালি করা চরম অমানবিক এবং নিডচয়ই গালাগালকারীর স্থান হইবে নরকের নিম্নতম স্থানে।"

দেখলেন তো, পবিত্র কেতাবে কতই না মানবতার কথা বলা রয়েছে। এই জন্যেই তো বলা হয় এই গ্রন্থই সকল নৈতিকতার উৎস।

গুটিকয় বিচ্ছিন্ন গোখরো সাপের কর্মকাণ্ডকে বিবেচনায় এনে সমগ্র গোখরো সম্প্রদায়কে সমালোচনা করবেন না। আমি স্বীকার করি কতিপয় মৌলবাদী গোখরো সাপ মানুষকে কামড়ায়, তবে তার মানে এই না যে সব গোখরোই মানুষকে কামড়ায়। দেখুন আফ্রিকার জঙ্গলে এমন অনেক গোখরো আছে যারা কোনদিন মানুষই দেখেনি, তারা কি মানুষকে কামড়েছে? তাহলে তাদেরকে কেন দোষ দিচ্ছেন? গুটিকয় সাপের কামড়ের কারনে তামাম সর্প গোষ্ঠীকে মৌলবাদী অশান্তির ধারক আর বিষধর বলা যায় না, বললে সেটা যৌক্তিক আচরন হয় না।

নাচ-তিক আচিপ: ঐ বেটা ****দা, একটা সাপ এদিকে নিয়া আইসা তোর কোলে ছাইরা দেই, তারপরে দেখ ক্যামনে কামড় দেয়। কামড় দিলে বিষ শরীরে গেলেই মৃত্যু!

আল্লামা তালগাছ: দেখুন এটা তো গোখরো সাপের দোষ হতে পারে না। এটা বিষের দোষ। গোখরো সাপের বিষ মানব শরীরে গেলে মানুষের মৃত্যু ঘটে, এখানে গোখরো সাপের কি দোষ? সে হয়ত ভালবেসে আপনাকে চুম্বন করলো, তার বিষে আপনি মারা গেলেন। এটা নিশ্চয়ই সাপের দোষ নয়, দোষ হচ্ছে বিষের, বিষের ব্যবহারের।

এখন কে কীভাবে এই বিষ ব্যবহার করছে সেটাই মুখ্য। এই বিষ দিয়ে অনেক রোগের মহাঔষধও তৈরি হয়, যা মানুষের জীবন বাঁচায়। তাই গোখরো সাপকে দোষ কেন দেবেন? দোষ হচ্ছে এই বিষের ব্যাবহারের।

নাচ-তিক আচিপ: আরে **ল, সমস্ত বিশ্ব জানে যে গোখরো সাপ কতটা ভয়াবহ, যান গিয়া বৈজ্ঞানিক গবেষনা আর জিওগ্রাফিক/ডিসকভারী চ্যানেল খুইজা দেখেন কী অবস্থা।

আল্লামা তালগাছ: ভাই আপনি তো পশ্চিমাদের শিখানো বুলি এবং তাদের কাছে পাওয়া ষড়যন্ত্রমূলক প্রপাগান্ডাকে ধরে বসে আছেন। ঐ সবই গোখরোর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার এবং প্রপাগান্ডা। ওগুলো বিশ্বাস করবেন না। আপনি কি গোখরোদের সম্পর্কে জানেন? না জেনে কথা বলবেন না, তাদের সম্পর্কে জেনে কথা বলুন।

নিশ্চয়ই গোখরোই সবচাইতে শান্তিশীল প্রাণী এবং একমাত্র সত্য ঐশী জীব। নিশ্চয়ই গোখরাই হইলো সর্পকুলের সর্বশ্রেষ্ঠ সাপ, পবিত্র কেতাবে এই ভাবেই বর্ণিত আছে। যেহেতু পবিত্র কেতাবে বলা আছে সেহেতু এইটা নিয়া কোনো সন্দেহের অবকাশই থাকিতে পারে না।

নাচ-তিক আচিপ: আরে তাদের সম্পর্কে কী জানুম? তাদের একটু সমালোচনা করলেই তো ফোঁস ফোঁস কইরা ফনা তুলে। আর ছোবল মারতে উঠে।

আল্লামা তালগাছ: ভাই আপনি কি গোখরোদের ভাষা বুঝেন? তাদের পবিত্র পুস্তক পড়ে দেখেছেন?

নাচ-তিক আচিপ: হ, আমি জানি, তাগো পুস্তকে শুধু মানুষরে মাইরা ফালা কাইট্টা ফালাতে ভরপুর। নিজের মতে না আইলে বা দলত্যাগ করলেই ছোবল দেওনের নিয়ম আছে।

আল্লামা তালগাছ: ভাই ভুল ব্যাখ্যা করবেন না। আগে বিশ্বাস আনেন যে গোখরোই শান্তির প্রাণী, তারপরে দেখবেন তাদের নিয়মগুলাও কত শান্তির সুবাতাস নিয়ে আসবে আপনার মনে।

নাচ-তিক আচিপ: এই বো**দায় তো পুরাই টাল। কী কইতাছে এইসব? আমি বিস্তর রেফারেন্স নিয়া আসতে পারি যেইখানে বলা আছে মানুষ দেখলেই ছোবল মার, ওগো পবিত্র পুস্তকে লেখা আছে এইসব। ওগুলা কি ভুল ব্যাখ্যা নাকি? যেইখানে সরাসরিই বলা আছে, সেইখানে আবার ব্যাখ্যার কী দরকার?

তার উপরে সর্পসর্দার গোখড়িয়াহ, সে আছিল এক নম্বরের লুইচ্চা। ছোটবড় কোনো মাইয়া সাপই তার সামনে দিয়ে ইজ্জত নিয়া যাইতে পারে নাই। দাসী সর্প, বান্দী সর্প সবই তার চলতো। এগুলা কি পশ্চিমা প্রপাগান্ডা নাকি? সর্পদের লেখা ইতিহাসেই তো এডি আছে।

আল্লামা তালগাছ: ভাই আপনি আবারও ভুল ব্যাখ্যা করছেন। সর্পসর্দার যিনি ছিলেন, তিনি ছিলেন নরম দিলের মানুষ। মেয়ে সর্পদের দুঃখ তার সহ্য হত না, তার বুক ফাইট্টা যাইতো মেয়েদের দুঃখে। তাই তিনি যারে সামনে পাইতেন সবাইকে নিজের বুকে ঠাই দিতেন। এইটাকে নিয়ে পশ্চিমারা প্রপাগান্ডা চালাবেই, তাই বলে তাদের প্রপাগান্ডায় বিশ্বাস করলে তো হবে না।

পবিত্র কেতাবেই বলা আছে সর্পসর্দার সাহেব হচ্ছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সর্প। তার জীবনী প্রত্যেক গোখরোর জন্য অবশ্যঅনুসরণীয়। পবিত্র কেতাবে বলা থাকার পরে কোন যুক্তিতে ইহা অস্বীকার করিতেছেন?

নাচ-তিক আচিপ: ধুর বাল। পবিত্র কেতাবে থাকলেই হইলো নাকি? এই রকম পবিত্র কেতাবে তো কত বালছালই থাকে।

আল্লামা তালগাছ: দেখুন ভাই, আমার সর্পানুভূতিতে আঘাত করবেন না। আপনি কি জানেন পবিত্র কেতাবে সর্প শব্দটা ৯১ বার রয়েছে, আর ৯১ হইতেছে একটি মৌলিক সংখ্যা। তাই গণিত দ্বারাও প্রমাণ হইলো পবিত্র কেতাব সত্য, না হইলে ৯১ এর মত একটা পবিত্র মৌলিক সংখ্যার সমান সংখ্যকবার সর্প শব্দটা কীভাবে রয়েছে?

নাচ-তিক আচিপ: ধুর **। এই সব *** যে কইত্থেইকা আহে বুঝি না। সারা পৃথিবীর দিকে তাকাইয়া দেখেন মিয়া, চোখ বন্ধ কইরা গোখরো শান্তির প্রাণী জপ করলেই তো হইবো না। সারা দুনিয়াতে গোখরো সাপেরা মানুষ মারতাছে সমানে, আর আপনি কইতাছেন গোখরো শান্তির সাপ।

আল্লামা তালগাছ: ভাই একবার তো কইলাম গুটিকয়েক গোখরোরে দিয়া তামাম গোখরো সর্পকুলরে বিবেচনা করলে হইবো না। যারা কামড় দেতেছে গিয়া দেখেন কেন দিতেছে। নিশ্চয়ই মানুষ কোন আকাম করছে, বা তার ল্যাঞ্জে পা দিছে, সেই জন্যই তো এইরকম হইছে।

আর তাছাড়া যারা নিরীহ মানুষ মারতেছে তাগো লগে গোখরো সর্পকুলের কোনোরকম সম্পর্ক নাই। তারা আপনের মতই নাচ-তিক গোখরো।

নাচ-তিক আচিপ: ভাই এইসব কয়া আর কতদিন খাইবেন? আজকে সারা দুনিয়া সবাই ছিঃ ছিঃ করতেছে, আর কত শাক দিয়া মাছ... (এই সময়ে আল্লামা তালগাছ তার ঝোলার ভিতর থেকে একটা গোখরো সাপ বাইর কইরা নাচ-তিকরে দেখাইয়া ঈশারা দিয়া কইলো চুপ না থাকলে কইলাম খবর আছে, এক্কেরে খায়া লামু) ...... না না, ইয়ে মানে, হা মানে, ভাই, আসলে ঠিকই কইছেন। গোখরো আসলেই শান্তির প্রাণী। আমি আপনের কথা সমর্থন করি, তালগাছ আপনের আছিল, আছে এবং থাকবে।

আল্লামা তালগাছ: এইতো ভাইজান এইবার লাইনে আইছেন। ধন্যবাদ। আপনের উপরে সমস্ত গোখরো কুলের দোয়া বর্ষণ হউক। আহেন আপনিও আমাগো দলে গলা মিলাইয়া চুক্কুর দিয়া কন, গোখরো হইতাছে শান্তির প্রাণী। তালগাছের জয় হোক।

আমিন।

এইবার শুরু হইবে দ্বিতীয় এবং শেষ বিতর্ক।

বিতর্ক নং ২:
বিতর্কের বিষয়ঃ এচলাম কি শান্তির ধর্ম?

নাচ-তিক আচিপ: বিতর্কে আর কিছু নাইরে ভাই। এচলাম অবশ্যই শান্তির ধর্ম। কোন হারামীর বাচ্চায় কয় এচলাম জঙ্গী, হালারে কোপাইয়া তামা তামা করুম না!

আল্লামা তালগাছ: আলহামদুলিল্লাহ। সকল প্রশংসাই পরম করুনাময় সর্পেশ্বরের।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন