শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১০

মাঙ্গলিক মাতুব্বর


গতকাল ছিলো বাংলাদেশের স্বশিক্ষিত দার্শনিক ও চিন্তাবিদ আরজ আলী মাতুব্বরের জন্মদিন।

প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি থাকলেই কাউকেই শিক্ষিত বলা কি উচিত, যদি সে মুক্তচিন্তা করতে না পারে? কয়েকটি পাঠ্যপুস্তক পড়ে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করাটাই কি শিক্ষিত হবার পরিচায়ক? বিশ্বাস ভেঙে যাবে বলে প্রশ্ন করতে ভীত হলে সেই শিক্ষার মূল্য কতোটা? তেমন তথাকথিত শিক্ষিত ব্যক্তিকে সুশিক্ষিত বলা যাবে? 

আরজ আলী মাতুব্বর। জন্ম ১৯০১, মৃত্যু ১৯৮৬। গ্রাম্য কৃষক। স্কুল-কলেজের ডিগ্রি তাঁর ছিলো না। পড়েছেন "সেকালের পাঠশালার দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত" (তাঁর ভাষায়)। কৃষিকাজের অবসরে নিজ উৎসাহে ও উদ্যোগে পড়াশোনা করেছেন দূর শহরের লাইব্রেরিতে পায়ে হেঁটে গিয়ে। তিনি স্ব-শিক্ষিত এবং সুশিক্ষিতও। তিনি কুসংস্কারমুক্ত ছিলেন বলে মুক্তচিন্তা করতে পারতেন। ধর্মীয় রীতিনীতি ও কুসংস্কার বিষয়ে যতো প্রশ্ন এসেছে তাঁর যুক্তিমনস্ক মস্তিষ্কে, তিনি সেসবের উত্তর খুঁজেছেন, বিশ্লেষণ করেছেন, প্রচ্ছন্ন সরস কটাক্ষ করেছেন। ডিগ্রিধারী ক'জন শিক্ষিত লোক তা করে থাকে?

তিনি তাঁর লব্ধ জ্ঞান ও নিজস্ব অনুসন্ধিৎসু বুদ্ধিবৃত্তির অপূর্ব সমন্বয় ঘটিয়ে কয়েকটি বই রচনা করেন। তাঁর ভাষাজ্ঞান, রসবোধ অপূর্ব। মুক্তচিন্তাশীল প্রতিটি পাঠকের অবশ্যপাঠ্য বই সেগুলো। তাঁর জীবনকাহিনীও খুব বিচিত্র। তাঁর সম্পর্কে অনেক লেখালেখি হয়েছে পত্র-পত্রিকায়, নানান বাংলা ব্লগে।

আমি মনে করি, তাঁর লেখা অন্তত একটি বই প্রতিটি মুক্তমনের মানুষের পড়া উচিত অতিঅবশ্য। নাম "সত্যের সন্ধানে"। বাংলাদেশবাসী পাঠকদের আহ্বান জানাই বইটি কিনে পড়তে। প্রবাসীদের জন্য ডাউনলোড লিংক (সায়কা শাহরিন-এর সৌজন্যে)। পিডিএফ-এর মান অতি উন্নত নয় বটে, তবে যেহেতু মাত্র ৮৬ পৃষ্ঠার বই, তা মনিটরেই পড়ে নেয়া যাবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন