সোমবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১১

২০০৯ সালে নাস্তিকেরা যা যা করেনি – ০২


নাস্তিক মানেই তার চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র - এ কথা ভেবে নেয়ার কোনও ভিত্তি নেই। খুনি, অপরাধী, বদমাশ, লম্পট ধর্মবিশ্বাসীদের মধ্যে যেমন আছে, আছে নাস্তিকদের মধ্যেও। 

তবে এমন কিছু অপরাধ, কুকীর্তি আছে, যেগুলো নাস্তিকদের পক্ষে করা সম্ভব নয় বাই ডেফিনিশন। কারণ সেসব করতে গেলে অনিবার্যভাবে প্রয়োজন ধর্ম- ও ঈশ্বরবিশ্বাসের। 

এই জাতীয় কাজের ফিরিস্তিওয়ালা একটি নিবন্ধ বাংলায় ভাবানুবাদ করেছেন ধর্মকারীর স্বেচ্ছাঅনুবাদকগোষ্ঠীর একজন একলা চলো। খবরগুলো পুরনো হলেও বড়োই কৌতূহলোদ্দীপক। পড়েই দেখুন না!

৩৫ জন ইসলামী পণ্ডিত ঘোষণা করেছে, মহিলাদের চেহারা যে কোনো গণমাধ্যমে দেখানো নাজায়েজ - না টেলিভিশনে, না খবরের কাগজে। একজন মহিলা সাংবাদিক টেলিভিশনে শুধু চেহারা দেখিয়েই ক্ষান্ত হননি, তিনি আবার সেক্স নিয়ে কথা বলেছেন, সুতরাং তাকে ৬০টি দোররা মারার নির্দেশ দিয়েছে ইসলামী আদালত। বাচ্চা, বুড়ো, পশুদের সাথে সেক্স করতে বাধা নেই, কিন্তু সেক্স নিয়ে কথা বলা যাবেনা।

পৃথিবীর মানুষের অত্যাচারে জর্জরিত, দিন দিন বাড়ছে জনসংখ্যা, যেখানে বিভিন্ন দেশ নবদম্পতীদের জন্মনিয়ন্ত্রনে উৎসাহিত করছে (এমনকি বাংলাদেশও), সেখানে একজন এক বই লিখেছে যার নাম বাংলায় অনুবাদ করলে হতে পারে “খৃষ্টান বিবাহে জন্মনিয়ন্ত্রন পাপ এবং এটি ঈশ্বরকে সম্ভাব্য যাজক পাওয়া থেকে বঞ্চিত করছে”।

ইলিনয়ের এর কিছু খ্রিষ্টান “ইলিনয় পারিবারিক সংস্থা” নামের এক প্রতিষ্ঠান বানিয়েছে, তারা একজন স্কুলশিক্ষককে বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছে, কারণ তিনি ব্যাক্তিগত জীবনে “The Friendly Atheist” নাম নিয়ে নাস্তিকতা সম্পর্কিত একটি ব্লগ চালান। এখানে বলে রাখা ভাল তার ব্লগটি সম্ভবত সব থেকে আস্তিক-বান্ধব নাস্তিক ব্লগ। (এখানে একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলি, আমি যখন “The Friendly Atheist” সাইটটি ভিজিট করতে যাই, তখন নরটন ইন্টারনেট সিকিউরিটি আমাকে সাবধান করে “সাইটটি ক্ষতিকর”)।

মিনিয়াপলিসের এক পাদ্রী তার অনুসারীদের বলেছে, ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে লুথেরানদের প্রতি ঈশ্বর প্রেরিত শাস্তি, কারণ তারা সমকামীদের যথেষ্ট পরিমাণ ঘৃণা করে না। কথা সত্যি হলে হতেও পারে, যীশুকে তো বাতাস নিয়ন্ত্রন করতে দেখা গেছে, আর মনে হয় ঘূর্ণিঝড়ে তার অনুসারীদের কোন ক্ষতি হয় না।

মুসলিম মহিলাদেরও নিশ্চয়ই অধিকার আছে বোরখার নিচে হলেও আবেদনময়ী হওয়ার, হোক না তা শুধু স্বামীর জন্য। তাই অনেক গবেষণা করে বানানো হয়েছে এমন এক বোরখা যা ব্যায়ামাগারের যন্ত্রপাতিতে আটকে যাবেনা।

সমকামিতা ইসলামে হারাম (খ্রিষ্টান ধর্মেও)। শিশুকামে অবশ্য কোন সমস্যা নেই, তা ছেলে হোক কি মেয়ে। এটা অবশ্য আশ্চর্য হওয়ার বিষয় নয় কারন তাদের গুরুই যে ছিল শিশুকামি।

দক্ষিন আফ্রিকায় চারজন লোক ডুবে মারা গেছেন, ব্যাপ্টাইজড হবার সময়। মাঝে মাঝে এরা মনে হয় ভুলে যায়, ঈশ্বরের হয়ত শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হয় না, কিন্তু মানুষের নিতে হয়। 

অ্যামেরিকান মুসলিম বাবারা মেয়ে বেশী পশ্চিমা হয়ে গেলে কী করে? তাকে ও তার বন্ধুকে গাড়ি চাপা দেয়। (আমি ভাবি পশ্চিমা মেয়েরা বেশী “পুর্বী” হয়ে গেলে তাদের বাবারা কি করে?)। আর সোমালিয়ায় কোনো মেয়ে ছেলেবন্ধুর সঙ্গে প্রেমের কথা স্বীকার করলে তাকে মাটিতে অর্ধেক পুঁতে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা হয়।

অস্ট্রেলিয়ার সিডনীতে ১২ বছরের এক ছেলে তার বন্ধুকে নিয়ে ঘণ্টাখানেক লাইব্রেরীতে পালিয়ে থাকে, সে রমজান মাসে দুপুরের খাবার হিসেবে হ্যাম স্যান্ডুইচ নিয়ে এসেছিল। একে তো রমজান মাসে খাওয়া-দাওয়া করার চেষ্টা, তার ওপর হ্যাম? মুসলিম ছাত্রদের বিষয়টা পছন্দ হয়নি, তারা প্রথমে শান্তিপূর্ণ ভাবে ছেলেটিকে না খেয়ে থাকার আহ্বান জানায়, মেনে না নেয়ায় তাকে শান্তিপূর্ণ ভাবেই তারা ধাওয়া করে, তাকে ধরতে পারলে নিশ্চই শান্তিপূর্ণ কোনো পদক্ষেপ নিতো।

কেনিয়াতে এখনো চলছে ডাইনী অপবাদ দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার রীতি, বাদ জাচ্ছে না বাচ্চা কিংবা বুড়ো কেওই।

"যিহোভার সাক্ষী" খ্রিষ্টান ধর্মের একটি সম্প্রদায়, তারা ক্যাথলিকদের দিকে সব দিক থেকেই আলাদা, মিল শুধু একটাই: শিশুকামীদের রক্ষা করা। ভিডিও দেখুন। 


জার্মানিতে উপন্যাস, কবিতা, গল্প, নাটক এবং অবশ্যই কার্টুন প্রকাশ করতে ভয় পাচ্ছে গণমাধ্যমগুলো, কারণ যদি শান্তির ধর্মের কারুর ধর্মানুভুতিতে আঘাত লাগে?

নাইজেরিয়াতে ১৫ বছরের এক মেয়েকে পুলিশি প্রহরায় রাখা হয়েছে, জাগ্রত (মতভেদে উচ্ছৃঙ্খল) জনতা তাকে খুন করার উদ্দেশে তাড়া করছিল, তাদের দাবি, তারা মেয়েটিকে প্রথমে বিড়াল এবং পরে আবার মেয়ে হয়ে যেতে দেখেছে। 

এক পাদ্রী ও তার ১৪ অনুসারির বিশাল দল কিছু বই পোড়ানোর পাঁয়তারা করছিল, তারা যে শুধু নাস্তিক লেখকদের বই পোড়াচ্ছিল তাই নয়, তারা পোড়াচ্ছিল খ্রিষ্টান লেখকদের বইও, যাদের মতবাদের সঙ্গে তাদেরটা মেলে না, এমনকি কিং জেমস অনুমোদিত বাইবেল ছাড়া বাকি সব বাইবেল পোড়ানোরও পরিকল্পনা ছিলো তাদের।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন