শুক্রবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১১

২০০৯ সালে নাস্তিকেরা যা যা করেনি – ০১


নাস্তিক মানেই তার চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র - এ কথা ভেবে নেয়ার কোনও ভিত্তি নেই। খুনি, অপরাধী, বদমাশ, লম্পট ধর্মবিশ্বাসীদের মধ্যে যেমন আছে, আছে নাস্তিকদের মধ্যেও। 

তবে এমন কিছু অপরাধ, কুকীর্তি আছে, যেগুলো নাস্তিকদের পক্ষে করা সম্ভব নয় বাই ডেফিনিশন। কারণ সেসব করতে গেলে অনিবার্যভাবে প্রয়োজন ধর্ম- ও ঈশ্বরবিশ্বাসের। 

এই জাতীয় কাজের ফিরিস্তিওয়ালা একটি নিবন্ধ বাংলায় ভাবানুবাদ করেছেন ধর্মকারীর স্বেচ্ছাঅনুবাদকগোষ্ঠীর একজন একলা চলো। খবরগুলো পুরনো হলেও বড়োই কৌতূহলোদ্দীপক। পড়েই দেখুন না!

প্রার্থনার ওপর নির্ভর করেনি

তিনটি খ্রিষ্টান পরিবার নিজেদের অসুস্থ সন্তানদের চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে প্রার্থনার ওপর নির্ভর করেছে, ফলাফল যা হবার তা-ই হয়েছে। এই শিশুদের বাবা-মা যদি নাস্তিক হতো, তাহলে কি এই শিশুরা বেঁচে থাকত না?

তিউনিসিয়ার এক পাইলট প্লেন ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করানোর সময় জরুরী ব্যবস্থা না নিয়ে প্রার্থনা করা শুরু করে দিয়েছিলেন। তিনি কল্পনা করেছিলেন, গায়েবি কেউ তাঁর হয়ে প্লেন চালিয়ে দেবে, এর ফলে ১৬ জন প্রাণ হারায়। অপর দিকে আরেক পাইলট ক্যাপ্টেন স্যুলেনবারগার তার প্লেন সফল ভাবে হাডসন নদীতে ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করে প্লেনের সবার জীবন বাঁচিয়েছেন, তিনি প্রার্থনা করেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমি কল্পনা করে নিয়েছিলাম গায়েবি কেউ আমার হয়ে প্রার্থনা করে নিচ্ছে, কারণ ওই সময় আমি প্লেন চালাতে ব্যস্ত ছিলাম।"

আমেরিকান এক মহিলা তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল, কারণ তার স্বামী ভুডু ব্যবহার করে তার ক্ষতি করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু এখন ওই মামলা তুলে নেয়া হয়েছে, কারণ ঈশ্বর স্বয়ং ওই মহিলাকে মামলা তুলে নিতে বলেছে।

নিজদের বিশ্বাস জোর করে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেনি

পৃথিবীর কিছু প্রান্তে মুসলমানদের ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত করা অপরাধ (কোন কোন প্রান্তে পাঠকদের নিশ্চয়ই আর বলে দিতে হবে না), কিন্তু তা শুধু কিছু প্রান্তে হবে কেন? কাজেই মুক্তবাক হত্যা করে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে ধর্মবাক (ধূম্রবাক), কারুর ইসলামী মূল্যবোধে আঘাত করলেই...

চরম স্বজনপ্রীতির কোনো নমুনা স্থাপন করেনি

জানুয়ারি মাসে পোপ উন্মোচন করেছেন গর্হিত পাপের এক তালিকা যার জুতসই বিশ্লেষণ ও কৈফিয়ত একমাত্র তিনিই দিতে পারবেন। তালিকায় আছে: যাজক হওয়ার আগে (পরে তো কথাই নেই) গর্ভপাতে কোনোরূপ সাহায্য করা , পোপকে হত্যার চেষ্টা ইত্যাদি। তালিকায় নেই: যাজকদের দ্বারা শিশুধর্ষণ (অবশ্যই, কারণ এটা তো স্যেকুলার সমাজের দোষ, যাজকদের না)।

কিপ্টেমির ধর্মীয় অজুহাত বের করেনি

সবাই জানেন, ওয়েটাররা বেতন এর চেয়ে বেশি নির্ভর করে থাকেন টিপস এর ওপর, কিন্তু একদল খ্রিষ্টান খাবারের পরে একজন ওয়েট্রেসকে টিপস দিতে অসম্মতি জানিয়েছে। তাঁর অপরাধ? দিনটি ছিল রবিবার, আর রবিবার কাজ করা পাপ। বাহ্! রবিবারে একজনের শ্রমের ফল ভোগ করা যায়, কিন্তু তাকে পুরস্কৃত করা যায় না।

নিজদের বদ কপালের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপায়নি

সৌদি আরবে দু'জন গৃহকর্মীকে জোর করে স্বীকার করানো হয়েছে যে, তারা লোকজনের ঘরের ওপর জাদু করেছে ফলে তাদের নানা ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে (যেমন পরিবারের বড় ছেলে অসুস্থ হয়ে যাওয়া)। জাদুর শিকার ওই লোকজন তো আর মিথ্যা বলতে পারে না!

নিজেদের সদস্য বৃদ্ধির জন্য ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয়নি

বোমা হামলার জন্য স্বেচ্ছাসেবিকা চাই? সহজ সমাধান আছে। উপযুক্ত মেয়ে খুঁজে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করলেই হল! নিশ্চয়ই সে বোমা হামলার মত পুণ্যকর্ম দ্বারা নিজের পাপের (?) প্রায়শ্চিত্ত করবে।

নিজদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ধর্মীয় অজুহাত বের করেনি

খোমেনির মিলিশিয়া বাহিনীর এক সদস্য বলেছে, সে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া কুমারী মেয়েদের ধর্ষণ করত মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করার আগের রাতে, কারণ মহান করুণাময় আল্ল্যা কুমারী মেয়েদের হত্যা করতে নিষেধ করেছেন।

অপরাধের শিকারকে সাজা দেয়নি

সৌদি আরবে ২৩ বছরের এক মেয়েকে ৫ জন পুরুষের কাছে ধর্ষিতা হওয়ার “অপরাধে” ১০০ দোররা মারার শাস্তি দেয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি ধর্ষণের ফলে গর্ভবতী হয়ে পড়েছেন, সুতরাং পরম করুণাময় মানবতাবাদী ইসলামী আদালত তাকে সন্তান জন্মদানের পরে দোররা মারার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এক ইমাম ৪০ জন পুরুষকে নিয়ে তাঁর মেয়েকে খুজে বেড়াচ্ছেন, খুঁজে পাওয়া মাত্র তাকে হত্যা করা হবে। মেয়েটির অপরাধ? তিনি পালিয়ে গেছেন, তিনি পালিয়ে গেছেন তাঁর ইমাম পিতার কাছ থেকে, যিনি তাঁকে নিয়মিত ধর্ষণ করতেন।

সৃষ্টিশীলতাকে অপরাধ ধরেনি

পাকিস্তানের গায়কেরা নিজদের পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন, কারণ ইসলামে গান গাওয়া হারাম, আর তালেবান হারাম কিছু পছন্দ করে না। 

বেহুদা বিষয় নিয়ে হাঙ্গামা করেনি

অ্যামেরিকার বেসবল দল ডেট্রয়েট টাইগার্সরা ক্যাথলিকদের অপমান করেছে, তাদের অপরাধ গুরুতর - তারা তাদের খেলা শুরু করেছে "পবিত্র ঘণ্টা"-র সময়। সবাই জানে, এই সময় সব কাজ ফেলে রেখে প্রার্থনা করতে হয়। কাজেই ডাক্তাররা কোনোদিন স্বর্গে যেতে পারবে না, ডেট্রয়েট টাইগার্সদের মত।

নিউ ইয়র্কের এক ফাস্ট ফুডের দোকান মালিককে বৈদ্যুতিক ছুরি দিয়ে একদল ইহুদির কাছ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হয়েছে। কারণ সেই ইহুদিদের মনে হয়েছিল যে, হট ডগ-এর মাংসটা ইহুদি-মতে "হালাল" নয়।

শিকাগোর এক মুসলিম মহিলা তার দুই বছরের ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। স্থানীয় মুসলিমরা প্রচণ্ড নাখোশ। না, ওই মহিলার ওপরে নয়, মিডিয়ার ওপরে। কারণ গণমাধ্যমে ওই মহিলার নেকাবহীন চেহারা দেখানো হয়েছিল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন