লিখেছেন হৃদয়াকাশ।
১। অনেকদিন আগে থেকেই রেডিও-টিভিসহ বিভিন্ন জায়গায় আল-হাদিসের একটি বাণী লক্ষ্য করি; বাণীটি হলো - ‘পৃথিবীতে যার সম্পদ কম হবে, আখেরাতে তার হিসেব সহজ হবে।’ আমার প্রশ্ন হচ্ছে, পৃথিবীর কয়জন মুসলমান এ বাণীটিকে বিশ্বাস করে? মনে তো হয় না কেউ বিশ্বাস করে । কারণ এমন তো কাউকে দেখি না, যে পরকালের কঠিন হিসাবের কথা চিন্তা করে ইহকালে কম সম্পদ অর্জন ও ভোগ করতে চেষ্টা করে।
২। আবার কুরবানীর মাংস বন্টনের বিধানে দেখতে পাই, তিন ভাগের এক ভাগ মাংস ফকির-মিসকিন অর্থাৎ গরীবদের দিতে হবে। এমনও তো হতে পারে যে, পৃথিবী ও সভ্যতার উন্নতির ফলে একদিন পৃথিবীতে কোনো অভাবী, গরীব লোক থাকবে না। যেমন এখনই পৃথিবীর কোনো কোনো দেশে নেই। তখন ঐ একভাগ মাংসের কী হবে? গরীব বা অভাবী না হলে তো ঐ মাংস কেউ নিতে চাইবে না। আবার ইসলামের হুকুম মতে কুরবানীর তিন ভাগের এক ভাগ মাংস ফকির-মিসকিনদের দিতেই হবে। পৃথিবীতে কোনো গরীব না থাকলে মুসলমানরা কী করবে? এ ব্যাপারে ইসলাম কী বলে? সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ বিধানটি কি পরিবর্তন বা বাতিল ব‘লে গণ্য হবে? কিন্তু যতদূর জানি ইসলামের কোনো নিয়মই পরিবর্তনযোগ্য নয়। তাহলে এই সমস্যার সমাধান কী? সমাধান কি এটাই যে, এই ধরনের সমস্যার কখনও উদ্ভবই ঘটবে না। কারণ, মুসলমানদের মধ্যে এক-তৃতীয়ায়শ লোক সব সময় গরীবই থাকবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মুসলমানদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ লোক যদি সব সময় গরীব না থাকে, তাহলে ঐ এক-তৃতীয়াংশ মাংসের সমাধান কী? আর যদি গরীব থাকে, তাহলে কিন্তু স্বীকার করতেই হবে যে, ইসলামে দরিদ্রতাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। কারণ একদিকে তিন ভাগের এক ভাগ মাংসের সমস্যা; অন্যদিকে বলা হচ্ছে কম সম্পদে আখেরাতে সহজ হিসাবের কথা।
সুতরাং এই আলোচনার পর এই ধারণাটি কি খুবই অযৌক্তিক যে, আল্লাহ মুসলমানদের গরীব করে রাখতে চান?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন