শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

আরব্য ধর্মগুলোর চৌর্যবৃত্তিনির্ভরতা


লেখাটি একটু দীর্ঘ তবে অসংখ্য কৌতূহলোদ্দীপক তথ্যসমৃদ্ধ এবং অবশ্যপাঠ্য। চমৎকার এই রচনা পাঠিয়েছেন লাইট ম্যান

জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎকর্ষের ফসল আর প্রযুক্তিগত আবিষ্কারের মিষ্টিফলের বুভুক্ষ ভিক্ষুক হয়েও এর বিরুদ্ধে হরহামেশা হট্টগোল, বিরুদ্ধাচারণ এবং শেষে উপায় না দেখে কুযুক্তি দেখিয়ে বলে, ও এতো আমাদের ঐশী গ্রন্থে লেখা আছে - এটাই এখন নিত্যদিনের সংলাপ ও অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে আরবে উৎপাদিত ধর্মগুলোর অনুসারীদের। নিজেদের প্রচারিত মতবাদকে একমাত্র শ্রেষ্ঠ, সত্য, অভ্রান্ত, অ-দ্বিতীয় ও বিশ্বাসযোগ্য হিসাবে প্রমাণ করতে গিয়ে বারবার ভেজে খেয়েছে মরু অঞ্চলে শত-শত বছর পূর্ব হতে লোকমুখে প্রচলিত পৌরাণিক কাহিনীর প্রাথমিক মালমসলা দিয়ে। সেগুলোকে ঐশী চরিত্র বলে দাবি করে মূল চরিত্রটি ঠিক রেখে ধুরন্ধর শঠ ধর্মপ্রচারকরা তাতে নিজেদের তৈরী গরম মসলা ঢেলে কিছুটা স্বাদের পরিবর্তন আনতে চেষ্টা করে গেছেন শুধু চরিত্রগুলোর বর্ণনায়। যাতে নকলের দায়ে বহিষ্কৃত হতে না হয়। ধর্মপ্রবর্তনকারীরা সাময়িক সময়ের জন্য এই মিথ্যা প্রচেষ্টায় অসহায় বিশ্বাসীদের চোখে ধুলো দিতে পারলেও বর্তমানে অবাধ তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে একে একে বেরিয়ে পড়ছে সব থলের বিড়াল।

বিশ্বাসের সমুদ্রে পাল তুলেছে আজ অবিশ্বাসী হাওয়া। এখন আমরা জানতে পারছি ধর্ম উৎপত্তির প্রকৃত ইতিহাস, উৎপত্তির স্থান ও কাল এবং ধর্মগুলোর বিকাশের ঐতিহাসিক প্রারম্ভিক অবস্থা সম্পর্কে। পাশাপাশি একই সাথে আমরা দেখতে পাচ্ছি এক ধর্ম অন্য ধর্মকে কীভাবে হত্যা, অপহরণ, আত্মসাৎ, চুরি, অনুকরণ, অনুসরণ করেছে, তার ইতিহাসনির্ভর প্রামাণ্য তথ্যচিত্র।

মরুর ধর্মগুলো সব একই স্থানে উৎপত্তি হওয়ায় ধর্মপ্রচারকরা যতই তাদের প্রচারিত নতুন ধর্মকে একটি স্বতন্ত্র ও বিজ্ঞানসম্মত ধর্ম হিসাবে প্রচারণা চালানোর চেষ্টা করুন না কেন, তারা কখনোই তৎকালীন লোকসমাজে প্রচলিত পৌরাণিক কাহিনীগুলোর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস থেকে সম্পূর্ণ সরে আসতে পারেননি বা সরে আসার কোনো চেষ্টাও চালাননি। বরং বিশ্বাসগুলোকে অটুট রেখেই জনসাধারণের আস্থা অর্জনে প্রচলিত কাহিনীগুলোতে সামান্য ইট-সুড়কি ঢেলে ধর্মের ভিত মজবুত করার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন এবং একই সাথে পূর্ব হতে তৎকালীন সমাজে প্রচলিত ধর্মগুলোর কাছ থেকে সহায়ক ধর্মীয় নিয়ম-কানুন, রীতি-নীতিসহ অনেক কিছুই হাতিয়ে নিয়েছেন।

তার সামান্য কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হল:

১) সৃষ্টিতত্ত্বের সম্পূর্ণ গল্প।

২) আদম ও ঈভকে মানব জাতির আদি পিতা-মাতা বলে মেনে নেওয়া।

৩) ইহুদিদের দাবী, আব্রাহামই ইহুদি জাতির আদি পুরুষ। খ্রীষ্টানরাও আব্রাহামকে তাদের নবী বলে চিৎকার করে যাচ্ছে। তাই এত বড় একজন মরুভূমির জন গুরুত্বপূর্ণ কথিত নবীকে ইসলামের পক্ষেও অবহেলা করা মোটেই সম্ভব হয় নি। মুসলমানেরাও আরো একধাপ এগিয়ে গিয়ে জোর দাবী জানিয়ে ঘোষণা করে বলেছে, আব্রাহামই ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা নবী! 
আব্রাহাম যদি ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা নবী হয় প্রশ্ন দাঁড়ায় মুহাম্মদের স্থান কোথায়?

৪) তৎকালীন সমাজে প্রচলিত লোক কাহিনী নোয়ার আজগুবি উদ্ভট রূপকথার গল্পটা নিয়েও তৌরিত, বাইবেল ও কোরানে প্রবল উৎসাহ নিয়ে মাতামাতি করতে দেখা যায়।

৫) কুমারী মায়ের গর্ভে যীশুর জন্মরহস্যের পেছনে কাজ করেছে ইহুদিদের ওল্ড টেষ্ট্যামেন্টের ওপর অগাধ বিশ্বাস, আর কিছুটা মদদ জুগিয়েছে প্যাগান ধর্মীয় বিশ্বাস।

ইসলামও যিশুকে ঈসা নবী বানিয়ে কোরানে আয়াতের পর আয়াত নাজিল করিয়েছে। যীশুর জন্ম, মৃত্যু ও ক্রশবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাও যে প্রাচীন পৌরাণিক কাহিনীর কাল্পনিক বিশ্বাসের ভিত্তিতে সৃষ্ট, তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে নিম্নে উল্লেখিত প্রাচীন প্যাগান পৌরাণিক কাহিনীগুলো জানা থাকলেই।

Roman Pagan Religion: Attis was a son of the virgin Nana. His birth was celebrated on DEC-25. He was sacrificed as an adult in order to bring salvation to mankind. He died about MAR-25, after being crucified on a tree, and descended for three days into the underworld. On Sunday, he arose, as the solar deity for the new season. His followers tied an image of Attis to a tree on "Black Friday," and carried him in a procession to the temple. His body was symbolically eaten by his followers in the form of bread. Worship of Attis began in Rome circa 200 BCE.

Greek Pagan Religion: Dionysus is another savior-god whose birth was observed on DEC-25. He was worshipped throughout much of the Middle East as well. He had a center of worship in Jerusalem in the 1st century BCE. Some ancient coins have been found in Gaza with Dionysus on one side and JHWH (Jehovah) on the other. In later years, his flesh and blood were symbolically eaten in the form of bread and wine. He was viewed as the son of Zeus, the Father God.

Egyptian Pagan Religion: Osiris is a savior-god who had been worshipped as far back as Neolithic times. "He was called Lord of Lords, King of Kings, God of Gods...the Resurrection and the Life, the Good shepherd...the god who 'made men and women be born again'" 5Three wise men announced his birth. His followers ate cakes of wheat which symbolized his body. Many sayings associated with Osiris were taken over into the Bible. This included: 

23rd Psalm: an appeal to Osiris as the good Shepherd to lead believers through the valley of the shadow of death and to green pastures and still waters

Lord's Prayer: "O amen, who art in heaven..."

Many parables attributed to Jesus.

Worship of Osiris, and celebration of his DEC-25 birth, were established throughout the Roman Empire by the end of the 1st century BCE.

Persian Pagan Religion: Mithra was a Persian savior. Worship of Mithra became common throughout the Roman Empire, particularly among the Roman civil service and military. Mithraism was a competitor of Christianity until the 4th century. Their god was believed to have been born on DEC-25, circa 500 BCE. His birth was witnessed by shepherds and by gift-carrying Magi. This was celebrated as the "Dies Natalis Solic Invite," The "Birthday of the Unconquered Sun." Some followers believed that he was born of a virgin. During his life, he performed many miracles, cured many illnesses, and cast out devils. He celebrated a Last Supper with his 12 disciples. He ascended to heaven at the time of the spring equinox, about March 21.

The Babylonians celebrated their "Victory of the Sun-God" Festival on DEC-25. Saturnalia (the Festival of Saturn) was celebrated from DEC-17 to 23 in the Roman Empire. The Roman Emperor Aurelian blended Saturnalia with a number of birth celebrations of savior Gods from other religions, into a single holy day: DEC-25. After much argument, the developing Christian church adopted this date as the birthday of their savior, Jesus. The people of the Roman Empire were accustomed to celebrating the birth of a God on that day. So, it was easy for the church to divert people's attention to Jesus' birth.

(অনুবাদের কাজটি আমার জন্য খুবই কষ্টের তাই বাংলা করতে না পেরে সরাসরি ইংরেজিতেই কপি পেষ্ট মেরে দিলাম। আশাকরি পাঠকরা আমার আলসেমী ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে আমাকে ক্ষমা করবেন)

৬) একই বলয়ে উৎপত্তি বলে ইসলামের প্রচার ও প্রসার নিষ্কন্টক রাখতে তৌরিত ও বাইবেলকে ঈশ্বরপ্রেরিত গ্রন্থ বলে স্বীকৃতি এবং গলধঃকরণ দুটোই করেছে ইসলাম।

যদিও ইসলামীরা তৌরিত ও বাইবেলে প্রচুর পরিমাণে ভুল-ভ্রান্তি আছে বলে ইসলামী মিডিয়াতে হামেশাই প্রচারণা চালায়। ঈশ্বরপ্রেরিত এইসব গ্রন্থে ঈশ্বর কীভাবে এত ভুল করলেন বা ভুল প্রচার হচ্ছে দেখেও এতকাল টুঁ শব্দটিও করলেন না তিনি, তা খুবই আশ্চর্য ও হতাশাজনক!

৭) খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিধি-বিধান আরোপ করা হয়েছে ইহুদি জাতির জন্য। তাতে যা কিছু খাওয়ার অনুমোদন দেওয়া আছে তাকে বলে কৌশার (Kosher)। ইসলামে শব্দটি বদলিয়ে বলে হালাল।

৮) ইহুদিদের শুকরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়ছে। ইসলামে করা হয়েছে হারাম। তবে ঈশ্বরপ্রেরিত এবং কোরানস্বীকৃত অপর গ্রন্থ বাইবেলে শুকরের মাংস খাওয়ার অনুমতি আছে।

৯) ইহুদিদের কোন প্রাণী জবাই করার সময় ইহুদি ধর্মীয় রীতি মেনে চলতে হয়, তা না হলে তার মাংস খাওয়া নিষেধ। ইসলামেও অনুরূপ বিধান করা হয়েছে। খাওয়া-দাওয়ার বিষয়ে খ্রীষ্টানরা বেশ উন্মুক্ত।

১০) প্রার্থনা করার সময় ইহুদিদের মাথায় এক প্রকার টুপি (ইহুদি ভাষায় kippah) পরতে হয়। মুসলমানেরাও তা-ই করে।

১১) প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার ইহুদিদের বিশেষ ধর্মীয় দিন। এই দিনে সূ্র্যাস্তের পর তারা মাথায় টুপি দিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করে। ইসলামেও প্রতি শুক্রবারে জুমার নামায পড়ার বিধান আমরা দেখি। খ্রীষ্টানরা প্রার্থনা করে প্রতি রবিবারে।

১২) রৌস হাশানাহ (Rosh Hashanah) ইহুদিদের নববর্ষ। এই দিনের বেশীর ভাগ সময় তারা সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করে কাটায়। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস ঈশ্বর তাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করবেন এই দিনে। পাপ ক্ষমার সুযোগ ইসলামেও আমরা দেখি শবে কদরের দিনে।

১৩) ইহুদিদের দিনে তিন বার প্রার্থনা করার নিয়ম আছে। ইসলামে আরো দু'ধাপ বাড়িয়ে করেছে পাঁচ বার।

১৪) ইহুদি মেয়েদের উপাসনালয় (Synagogue)এ যাওয়ার অনুমতি নাই। মুসলিম মেয়েদেরও মসজিদে যাওয়ার নিয়ম নাই। নারীর মর্যাদা তাতে কী পরিমাণ বেড়েছে, তা কেবল ঈশ্বরই ভালো জানেন!

১৫) ইহুদিদের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে বসার আগে দেহের পবিত্রতা রক্ষায় বিশেষ নিয়মে হাত, পা ধৌত করার বিধান করা আছে। ইসলামেও তা-ই করা হয়। দেহের ময়লা না হয় ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা গেল, কিন্তু তাতে মনের অভ্যন্তরে জমে থাকা ময়লা স্তরের কোন সাফ-সোফাই হয় কি না, তা জানতে খুব বেশী বিদ্যাবুদ্ধি থাকা প্রয়োজন বলে মনে হয় না।

১৬) ধর্ম ভঙ্গকারী ইহুদিদের কঠোর ধর্মীয় আইনে বিচার করার জন্য তৈরী হয়েছে হালাখা (Halakha)) আইন। ইসলামে করা হয়েছে শরিয়া আইন।

১৭) ঐতিহাসিকদের মতে, প্রথম দিকে পুরুষদের লিঙ্গত্বক ছেদের চর্চা হত প্রাচীন মিশরে ও কিছু কিছু আফ্রিকান দেশে। মিশরীয়দের কাছ থেকে এই চর্চা ইহুদিরা গ্রহণ করে। আর ইসলাম তো লিঙ্গ ত্বক ছেদ প্রথাটিকে সরাসরি সম্পর্কিত করেছে ধর্মের সাথে। দেহের এত অঙ্গ থাকতে ধর্মটাকে কেন লিঙ্গের মাথার সাথে সুগভীর সম্পর্ক যুক্ত করা হল, তা বোধগম্য নয়। ঈশ্বর কি তবে ভুল করেই পুং লিঙ্গের মাথায় হিজাবটা পরিয়েছিলেন?

১৮) কাবা মুসলমানদের কাছে খুবই পবিত্র স্থান যা মক্কায় অবস্থিত। কিন্তু ইসলাম প্রচারের বহু আগে থেকেই প্যাগানরা পূণ্যলাভের আসায় দল বেধে মক্কার এই কাবায় হজ করতে আসত। সেখানে ৩৬০টা প্যাগান মূর্তি ছিল। হজ-এর সাথে অর্থনৈতিক লাভের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক থাকায় ইসলাম মক্কা দখলের পরেও শুধুমাত্র মূর্তিগুলো সরিয়ে হজ প্রথাটা চালু রাখে। পরিবর্তন করেছে মাত্র ধর্মীয় লেবেলটা, প্যাগানের স্থানে ইসলাম। মক্কার অভ্যন্তরের কালো পাথরটা এখনো প্যাগান ধর্মীয় বিশ্বাসের সাক্ষী হিসাবে সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে চলেছে।
এছাড়াও মুসুল্লিদের বিশেষ নিয়মে সাদা কাপড় পরে মুন্ডিত মস্তকে কাবা প্রদক্ষিণ করাটাও প্যাগান সংষ্কৃতির অংশ।
মুসলমানদের অন্য কোথাও ধর্মীয় এই রীতির অনুসরণ করতে আমরা আর দেখতে পাই না।

১৯) যে “আল্লাহ‌্” নামকে ভিত্তি করে যে ইসলামের সৃষ্টি, সে নামটাও প্যাগান ধর্ম থেকে ধার করা। প্যাগানরা তাদের খোদাকে প্রথম দিকে ভক্তিসহকারে ডাকত “আল-ইলাহ্”(AL-ILAH) বলে। এই “আল-ইলাহ্” থেকেই ভাষার ক্রমবিবর্তনের ফলে শব্দটি সংক্ষিপ্ত হয়ে “ই” উঠে গিয়ে হয়েছে “আল্লাহ‌্” (আল+ইলাহ্=আল্লাহ‌্)।

বিষয়টি পরিষ্কার বোঝার জন্য আমরা নবীর পিতার নামের পিছনে একটু সময় দেই। তাঁর নাম ছিল - আব্দুল্লাহ (আব্দুল+আল্লাহ‌্)। “আব্দুল” শব্দের অর্থ “দাস” আর “আল্লাহ‌্” শব্দের মানে তো বলতে হবে না নিশ্চয়ই। নামটি বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায় “আল্লার দাস”। এতে কি প্রমাণিত হয় “আল্লাহ‌্” নামটি ইসলাম প্রতিষ্ঠার পরে এসেছে? 

২০) পৃথিবীতে ধর্ম উৎপত্তির পর থেকেই নরবলি, পশুবলির মত নিষ্ঠুর প্রথাগুলি চালু ছিল বছরের পর বছর। মানুষের বিবেক-বুদ্ধি প্রসারের মানবিক কারণে নরবলি প্রথাটির বিলুপ্তি ঘটলেও রসনাভোজের সাথে পশুবলির প্রত্যক্ষ সম্পর্ক থাকায় তা টিকে থাকে।

মরুর ধর্ম না হলেও প্রাচীন ধর্মীয় সংস্কৃতির অংশ হিসাবে হিন্দুদের মধ্যেও পশুবলি প্রথাটি এখনো আমরা দেখি। প্রাচীন মিশরীয়দের কাছ থেকে প্রথমে ইহুদিরা পশুবলি প্রথাটি গ্রহণ করে পরে তারা ধর্মীয় আচার থেকে তা ছেটে ফেলে কিন্তু ইসলামে নিরীহ পশুবলি প্রথা মহা উৎসাহ সহকারে এখনো পালন করা হয়।

২১) ইহুদিদের কাছে জেরুজালেম অতি পবিত্র স্থান। খ্রীষ্টানদের কাছেও তাই। তাতে কি? মুসলমানেরাও তাদের এ দাবি ছাড়বে কেন? তাই জেরুজালেম মুসলমানদেরও পবিত্র স্থান হতে বাধ্য।

২২) উপবাস, রোজা বা ফাস্টিং - যে নামেই ডাকা হোক না কেন,  এই প্রথার মধ্যেও নতুনত্ব বলতে কিছু নেই। লাগামহীন ভোগবিলাসী অসংযমী মানুষদের কিছু দিনের জন্য নিয়ন্ত্রণ রাখতে বহু প্রাচীন সংযমী জীবণাচরনের প্রথা এটি। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈণ, ইহুদি, ইসলামসহ ছোট বড় অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের কাছে এখনো এই প্রথা বিদ্যমান।

পরিবর্তন বলতে শুধু উপবাসের ধরন, সময় ও কিছু নিয়ম নীতির সামান্য হের ফের। একান্ত পরিবর্তন না আনলে ধর্মগুলো যে স্বকীয় বৈশিষ্ট্য হারাবে!

Moses fasted for forty days and forty nights while he was on the mountain with God. (Exodus 34:28)

Jesus fasted for forty days and forty nights while in the desert, prior to the three temptations (Matthew 4:2, Luke 4:2)

উপরোক্ত লাইন দু'টির মূল সুর এক নয় কি?

২৩) তৌরিত ও বাইবেল দুটোতেই স্বর্গের লোভ ও নরকের শাস্তির কথা উল্লেখ আছে, যা তৌরিত, বাইবেল সৃষ্টির বহু পূর্ব থেকেই মানুষ বিশ্বাস করত । ইসলামেও তা-ই করা হয়েছে। তবে বৈচিত্র্য আনতে ইসলামে শুধু স্বর্গ-নরক গঠনের বিভিন্ন শ্রেণীবিভাগ করা হয়েছে।

২৪) তৌরিত ও বাইবেলে মানুষ ও ঈশ্বরের মিলনের মাঝখানে দেয়াল হিসাবে কাজ করে কথিত শয়তান। ইসলাম আদর করে শয়তানের একটি সুন্দর নাম রেখেছে “ইবলিশ”। শুধু নাম দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, কোরানে “ইবলিশ”কে দেয়া হয়েছে আরো অধিক শক্তিশালী ভূমিকা।

২৫) “হাঁচি” দেওয়া যে কোন সুস্থ-সবল মানুষের জন্য স্বাভাবিক বিষয়। প্রাণীজগতে অনেক পশুও “হাঁচি” দেয়, রক্ষা -  তাদের কোন ঐশী কিতাব নাই। তবে আরব জগতের বিশ্বাসীদের কাছে “হাঁচি” দেওয়াটাই যেন ভীতিকর কোন কাজ। নতুবা “হাঁচি”র পর গোঁড়া খ্রীষ্টানদের কেন বলতে শোনা যায় – God bless you. সাচ্চা ইসলামীরা সাথে সাথে কেন বলে “আল‌্হামদুলিল্লাহ্”?

ধর্মের অবকাঠামোগত বৈশিষ্ট্য, নিয়ম-কানুন, রীতি-নীতি, চাতুর্যতার সাথে চুরিসহ এত মিল থাকা সত্ত্বেও কেউ যদি দাবী করে আমার ধর্ম সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এবং অন্য কোনো ধর্মের সাথে এর কোনো মিল নেই, তাহলে তাকে পাগলের প্রলাপ, নকলের সহযোগী, চোখ থাকতে অন্ধ, ছাড়া আর কী-বা বলার আছে।

বিঃদ্রঃ আরবে উৎপাদিত শ্রেষ্ঠত্বের ধ্বজাধারী ধর্মগুলোর যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে বাকি নিকৃষ্ট (আমার মতে নয়, আরব ধর্মবিশ্বাসীদের মতে) ধর্মের কী হালচাল হবে?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন