লিখেছেন হৃদয়াকাশ
অধিকাংশ মুসলমানই বলে থাকেন যে, কোরান গবেষণা করেই নাকি বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর যাবতীয় বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার করেছেন এবং এখনও করে চলেছেন, ভবিষ্যতেও নাকি করবেন। কারণ কোরানের মধ্যে নাকি সবই দেওয়া আছে, এখন শুধু গবেষণা করে বের করা! নিজেদের অজ্ঞতা ও মূর্খতাকে আড়াল করার কী হাস্যকর অপপ্রয়াস ? যেসব মুসলমান এসব কথা বলে, তারাও বড়দের কাছে শুনে শুনে এসব কথা মুখস্থ করে বলে, যুক্তি দিয়ে বিচার করে বলে না। যুক্তি দিয়ে বিচার করলে তারা প্রথমে যে জিনিসটি উপলব্ধি করতে পারতো, তা হলো কোরান রিসার্চ করেই যদি বিজ্ঞানীরা সব আবিষ্কার করতো, তাহলে পৃথিবীর সব না হলেও অধিকাংশ বিজ্ঞানীই জাতিতে বা ধর্মে মুসলমান হতো।
অধিকাংশ মুসলমানই বলে থাকেন যে, কোরান গবেষণা করেই নাকি বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর যাবতীয় বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার করেছেন এবং এখনও করে চলেছেন, ভবিষ্যতেও নাকি করবেন। কারণ কোরানের মধ্যে নাকি সবই দেওয়া আছে, এখন শুধু গবেষণা করে বের করা! নিজেদের অজ্ঞতা ও মূর্খতাকে আড়াল করার কী হাস্যকর অপপ্রয়াস ? যেসব মুসলমান এসব কথা বলে, তারাও বড়দের কাছে শুনে শুনে এসব কথা মুখস্থ করে বলে, যুক্তি দিয়ে বিচার করে বলে না। যুক্তি দিয়ে বিচার করলে তারা প্রথমে যে জিনিসটি উপলব্ধি করতে পারতো, তা হলো কোরান রিসার্চ করেই যদি বিজ্ঞানীরা সব আবিষ্কার করতো, তাহলে পৃথিবীর সব না হলেও অধিকাংশ বিজ্ঞানীই জাতিতে বা ধর্মে মুসলমান হতো।
কিন্তু বাস্তব অবস্থা কী? জ্ঞান-বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবস্থান কোথায়? মুসলমানরা উল্লেখযোগ্য কিছু করলে পত্রিকার পাতায় এরকম শিরোনাম হয়-‘পৃথিবীর প্রথম মুসলিম মহিলা’ বা ‘প্রথম মুসলমান’ ইত্যাদি ইত্যাদি। আর এটা নিয়ে মুসলমানদের গর্বেরও সীমা থাকে না; যেন মুসলমানরা বিশাল কিছু করে ফেলেছে! কিন্তু তারা এটা ভেবে দেখে না যে, যে ক্ষেত্রে তারা হয়তো প্রথম পদক্ষেপ ফেলছে, সেই একই সেক্টরে পৃথিবীর অন্যান্য জাতির লোকজন হয়তো পা ফেলেছে সেই দুই, তিনশ বা হাজার বছর আগেই। কিন্তু তাতে তাদের কোনো আত্মতৃপ্তি নেই। কারণ, তারা জানে তাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে আরো অনেক দূর। তাদেরকে উদ্ভাবন করতে হবে আরো বিস্ময়কর জিনিস; যেগুলো তৃতীয় বিশ্বের অজ্ঞ ধর্মান্ধ মানুষগুলো কিনবে, ব্যবহার করবে; আবার উল্টো তাদের গালিও দেবে নাসারা, ইহুদি, কাফের, বিধর্মী ব'লে ! এসব তারা জানে, শোনে, কিন্তু কিছু মনে করে না। কারণ, বৃহৎ যারা, তারা জানে যে ক্ষুদ্রদের আত্মতৃপ্তির ধরনটাই এরকম। ওরা যার পরিশ্রমের ফল ভোগ করে, উল্টো তাকেই গালি দেয়। নিজেরা যে কিছু করতে পারে না, তাতে ওদের আত্মগ্লানি নেই ! কী আজব ব্যাপার !
‘পৃথিবীর প্রথম মুসলিম মহিলা’র একটি ঘটনা এ প্রসঙ্গে ব'লে রাখি। কয়েক বছর আগে ইরানের ‘শিরিন এবাদি’ শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করে। এই বিষয়টি নিয়ে মুসলিম দেশগুলোর পত্র-পত্রিকা বাড়াবাড়ি দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। ঘটনা এমন যে, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার এর আগে আর কেউ পায় নি। নারী হিসেবে একমাত্র শিরিন এবাদিই পেয়েছে। তাই পুরস্কার পাওয়ার পর প্রথমে প্রায় প্রতিদিন এবং পরে মাঝে-মাঝেই পত্রিকার তার নামে নানা রকমের বাণী আসতে লাগলো, যার প্রায় অধিকাংশই অন্তঃসারশূন্য। খালি কলসি যেমন জোরে জোরে বেশি দিন বাজানো যায় না, তেমনি শিরিন এবাদিকেও বেশিদিন বাজানো গেলো না। তাই বছরখানেক পর থেকেই শিরিন এবাদির আর কোনো বাণী চোখেই পড়ছে না।
‘পৃথিবীর প্রথম মুসলিম মহিলা’র একটি ঘটনা এ প্রসঙ্গে ব'লে রাখি। কয়েক বছর আগে ইরানের ‘শিরিন এবাদি’ শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করে। এই বিষয়টি নিয়ে মুসলিম দেশগুলোর পত্র-পত্রিকা বাড়াবাড়ি দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। ঘটনা এমন যে, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার এর আগে আর কেউ পায় নি। নারী হিসেবে একমাত্র শিরিন এবাদিই পেয়েছে। তাই পুরস্কার পাওয়ার পর প্রথমে প্রায় প্রতিদিন এবং পরে মাঝে-মাঝেই পত্রিকার তার নামে নানা রকমের বাণী আসতে লাগলো, যার প্রায় অধিকাংশই অন্তঃসারশূন্য। খালি কলসি যেমন জোরে জোরে বেশি দিন বাজানো যায় না, তেমনি শিরিন এবাদিকেও বেশিদিন বাজানো গেলো না। তাই বছরখানেক পর থেকেই শিরিন এবাদির আর কোনো বাণী চোখেই পড়ছে না।
কী অবাক ব্যাপার, পৃথিবীর প্রথম মুসলিম মহিলা নোবেল পুরস্কার পেয়েছে, তাও আবার শান্তিতে (!), রসায়নে নয়, পদার্থবিজ্ঞানে নয়, চিকিৎসায় নয়, এমন কি অর্থনীতিতেও নয়, পেয়েছে শান্তিতে। আমার বিচারে এটা নোবেলের মধ্যে সবচেয়ে নিচুমানের পুরস্কার। কারণ এটা পাওয়ার জন্য দিনের পর দিন গবেষণাগারে পড়ে থাকতে হয় না। মাসের পর মাস গোসল না করায় গায়ে দুর্গন্ধ ও চুলে জট পাকিয়ে যায় না। রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটাতে হয় না। কাটাতে হয় না বছরের পর বছর ক্ষুধা-কামবিহীন জীবন। এই পুরস্কার পাওয়ার জন্য মানবাধিকার নিয়ে কিছু কথা বললেই হয়, অথবা দেশের স্বাধীনতার জন্য রক্তপাতহীন সংগ্রাম না করে পঁচিশ তিরিশ বছর জেলে থাকলেও হয়, বা গণতন্ত্রের জন্য দশ-পনেরো বছর জেলে কাটালেও হয় বা পরিবেশ রক্ষার জন্য দুই তিন লাখ গাছ লাগালেও হয়। সেই শান্তির নোবেল পাওয়া নিয়ে কী মাতামাতি ! অব্শ্য শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার জন্য যে কাজটি অবশ্যই করতে হয়, তা হলো দাতাগোষ্ঠির স্বার্থ রক্ষা। এই শর্ত পূরণ না হলে আপনি যা-ই করেন না কেন, শান্তিতে নোবেল আপনি কখনোই পাবেন না।
মুসলমানদের মধ্যে অধিকাংশ না হোক, অর্ধেকেরও কিছু কম লোক যদি যুক্তিবাদী থাকতো, তাহলে কোরানকে নিয়ে যে মিথ্যাচার তার অবসান হয়তো হতে পারতো। কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে যুক্তিবাদী লোকের সংখ্যা এতই কম যে, তাদের সন্ধান পেতে হলে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের দরকার। তাও সবখানে পাওয়া যাবে, এ কথা বলা মুশকিল। মুসলমানদের মধ্যে যে যুক্তিবাদী মানুষের অভাব, এর মুল কারণও কোরান। কারণ, ইসলামের মূল কথাই হচ্ছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পন; এখানে কোনো প্রশ্ন চলে না। তো যেখানে প্রশ্ন চলে না, সেখানে যুক্তিবাদীর জন্ম হবে কোত্থেকে ? আবার, মনে সংশয় দেখা দিলেই তবে প্রশ্নের জন্ম হয়। কিন্তু ইসলামের, বিশেষতঃ কোরানের কোনো বিষয় নিয়ে মনে সংশয় দেখা দেওয়াও ইসলামের দৃষ্টিতে ঘোরতর অন্যায় কাজ। এমন হলে সে নাকি কাফেরে পরিণত হবে। আর ইসলামে কাফের মানেই ভয়াবহ একটা ব্যাপার। যারা কোনো দিন বেহেশ্ত পাবে না, ভোগ করতে পারবে না বেহেশতের হুর, গেলমানদের। এই অমূলক ভয় এবং লোভই মুসলমানদের যুক্তিবাদী হয়ে ওঠার পথে প্রধান বাধা। এই গ্যাঁড়াকলে যেখানে যুক্তিবাদীর জন্মই হচ্ছে না, সেখানে বিজ্ঞানীর জন্ম হবে কীভাবে? কারণ মানুষ প্রথমে যুক্তিবাদী হয়, তারপর বিজ্ঞানী হয়ে ওঠে।
কোরান রিসার্চ করেই বিজ্ঞানীরা সব আবিষ্কার করেছেন- এমন দাবির জবাবে আমি একজনকে বলেছিলাম, তাহলে তো পৃথিবীর সব বিজ্ঞানীই মুসলমান হতো; কারণ, মুসলমানরাই তো কোরান পড়ে সবচেয়ে বেশি। তখন সে বলেছিলো, গবেষণার একটা ব্যাপার আছে না? আমি তখন বললাম, তাহলে তোরা গবেষণা করিস না, শুধু শুধু আরবি মুখস্থ করিস? আর ওরাই যদি গবেষণা করে তো ভালো কথা, গবেষণা করে যা বলে সেটাও তো বিশ্বাস করিস না। যেমন ওরা, মানে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বললো, পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে, তোরা অস্বীকার করলি, কারণ কোরানে লেখা আছে ‘সুর্যই পৃথিবীর চারেদিকে ঘোরে’। এর পক্ষে ‘পৃথিবী নয় সূর্য ঘোরে’ নামে অবৈজ্ঞানিক বই লিখে বিজ্ঞানের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করলি, তাতে কী হয়েছে? কোন মত প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে? পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে, না সুর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে? যদিও বর্তমানে কোনো কোনো মৌলবাদী কোরানের এই ভুলকে আড়াল করার জন্য বিজ্ঞানের আবিষ্কার থেকে ধার করে সূর্যও যে ঘোরে- এ কথা বলছে। সূর্যও ঘোরে, এটা সত্য। কিন্তু যারা কোরানের ভাষ্যমতে ‘ ‘পৃথিবী নয় সূর্য ঘোরে’ মতবাদে বিশ্বাসী, তাদের পক্ষে কোরানের জ্ঞানে জ্ঞানী হয়ে সূর্য কীভাবে ঘোরে, এটা ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। এটা বোঝার জন্য টলেমীর মতবাদে বিশ্বাসী মন নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞান পড়লে চলবে না। কোপার্নিকাসের মতবাদে বিশ্বাসীদের বইগুলো যুক্তি দিয়ে বিচার করার ক্ষমতা থাকতে হবে। এখানে বলে রাখি, যারা এখনও বিশ্বাস করে যে, ‘পৃথিবী নয় সূর্যই ঘোরে’, তাদের কাছে ধর্মীয় মতবাদের সাপোর্ট হিসেবে টলেমীর মতবাদ একটি বড় অস্ত্র। এরা এতটাই মূর্খ ও অজ্ঞ যে, টলেমী যা বলে গেছে সেটাকেই মনে করে ধ্রুব সত্য। টলেমীর পরে আরও কত বিজ্ঞানী যে এ ব্যাপারে কত কী বলে গেলো, সেদিকে কোনো নজর নেই; যেমন তাদের কাছে কোরানই সবকিছু, কোরানের বাইরে কোনো কথা নেই!
মুসলমানদের মধ্যে অধিকাংশ না হোক, অর্ধেকেরও কিছু কম লোক যদি যুক্তিবাদী থাকতো, তাহলে কোরানকে নিয়ে যে মিথ্যাচার তার অবসান হয়তো হতে পারতো। কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে যুক্তিবাদী লোকের সংখ্যা এতই কম যে, তাদের সন্ধান পেতে হলে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের দরকার। তাও সবখানে পাওয়া যাবে, এ কথা বলা মুশকিল। মুসলমানদের মধ্যে যে যুক্তিবাদী মানুষের অভাব, এর মুল কারণও কোরান। কারণ, ইসলামের মূল কথাই হচ্ছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পন; এখানে কোনো প্রশ্ন চলে না। তো যেখানে প্রশ্ন চলে না, সেখানে যুক্তিবাদীর জন্ম হবে কোত্থেকে ? আবার, মনে সংশয় দেখা দিলেই তবে প্রশ্নের জন্ম হয়। কিন্তু ইসলামের, বিশেষতঃ কোরানের কোনো বিষয় নিয়ে মনে সংশয় দেখা দেওয়াও ইসলামের দৃষ্টিতে ঘোরতর অন্যায় কাজ। এমন হলে সে নাকি কাফেরে পরিণত হবে। আর ইসলামে কাফের মানেই ভয়াবহ একটা ব্যাপার। যারা কোনো দিন বেহেশ্ত পাবে না, ভোগ করতে পারবে না বেহেশতের হুর, গেলমানদের। এই অমূলক ভয় এবং লোভই মুসলমানদের যুক্তিবাদী হয়ে ওঠার পথে প্রধান বাধা। এই গ্যাঁড়াকলে যেখানে যুক্তিবাদীর জন্মই হচ্ছে না, সেখানে বিজ্ঞানীর জন্ম হবে কীভাবে? কারণ মানুষ প্রথমে যুক্তিবাদী হয়, তারপর বিজ্ঞানী হয়ে ওঠে।
কোরান রিসার্চ করেই বিজ্ঞানীরা সব আবিষ্কার করেছেন- এমন দাবির জবাবে আমি একজনকে বলেছিলাম, তাহলে তো পৃথিবীর সব বিজ্ঞানীই মুসলমান হতো; কারণ, মুসলমানরাই তো কোরান পড়ে সবচেয়ে বেশি। তখন সে বলেছিলো, গবেষণার একটা ব্যাপার আছে না? আমি তখন বললাম, তাহলে তোরা গবেষণা করিস না, শুধু শুধু আরবি মুখস্থ করিস? আর ওরাই যদি গবেষণা করে তো ভালো কথা, গবেষণা করে যা বলে সেটাও তো বিশ্বাস করিস না। যেমন ওরা, মানে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বললো, পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে, তোরা অস্বীকার করলি, কারণ কোরানে লেখা আছে ‘সুর্যই পৃথিবীর চারেদিকে ঘোরে’। এর পক্ষে ‘পৃথিবী নয় সূর্য ঘোরে’ নামে অবৈজ্ঞানিক বই লিখে বিজ্ঞানের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করলি, তাতে কী হয়েছে? কোন মত প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে? পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে, না সুর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে? যদিও বর্তমানে কোনো কোনো মৌলবাদী কোরানের এই ভুলকে আড়াল করার জন্য বিজ্ঞানের আবিষ্কার থেকে ধার করে সূর্যও যে ঘোরে- এ কথা বলছে। সূর্যও ঘোরে, এটা সত্য। কিন্তু যারা কোরানের ভাষ্যমতে ‘ ‘পৃথিবী নয় সূর্য ঘোরে’ মতবাদে বিশ্বাসী, তাদের পক্ষে কোরানের জ্ঞানে জ্ঞানী হয়ে সূর্য কীভাবে ঘোরে, এটা ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। এটা বোঝার জন্য টলেমীর মতবাদে বিশ্বাসী মন নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞান পড়লে চলবে না। কোপার্নিকাসের মতবাদে বিশ্বাসীদের বইগুলো যুক্তি দিয়ে বিচার করার ক্ষমতা থাকতে হবে। এখানে বলে রাখি, যারা এখনও বিশ্বাস করে যে, ‘পৃথিবী নয় সূর্যই ঘোরে’, তাদের কাছে ধর্মীয় মতবাদের সাপোর্ট হিসেবে টলেমীর মতবাদ একটি বড় অস্ত্র। এরা এতটাই মূর্খ ও অজ্ঞ যে, টলেমী যা বলে গেছে সেটাকেই মনে করে ধ্রুব সত্য। টলেমীর পরে আরও কত বিজ্ঞানী যে এ ব্যাপারে কত কী বলে গেলো, সেদিকে কোনো নজর নেই; যেমন তাদের কাছে কোরানই সবকিছু, কোরানের বাইরে কোনো কথা নেই!
এখানে বলে রাখি, খ্রিষ্টজন্মের কয়েকশ বছর পূর্বে - পৃথিবীর প্রথম বিজ্ঞানী হিসেবে যাকে বলা হয় সেই - ‘থেলিস’ এর জন্ম। সঙ্গত কারণেই আমরা ধরে নিতে পারি, তারও অনেক আগে থেকেই পৃথিবীতে অগণিত বিজ্ঞানীর আবির্ভাব ঘটেছিলো। যাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অবদান গড়ে উঠতে সাহায্য করেছে আজকের এই সভ্যতাকে। যেমন- আগুন কে আবিষ্কার করেছে, তা আমরা জানি না। কত বছর আগে আগুন আবিষ্কার হয়েছে, তাও মানুষের জ্ঞানাতীত। কিন্তু সভ্যতা নির্মাণে ঐ নাম না জানা বিজ্ঞানীর আবিষ্কারকে কি খাটো করে দেখার অবকাশ আছে? আমরা সবাই জানি এবং মানি যে, তাকে খাটো করে দেখার কোনো অবকাশ নেই। তাহলে তিনি কি কোরান পড়ে আগুন আবিষ্কার করেছেন? পৃথিবীতে কোরানের বয়স কত আর আগুনের বয়স কত? কোরান নিয়ে বাড়াবাড়ি আর মিথ্যাচারের কারণেই বোধহয় হরহামেশাই আগুনে কোরান পুড়ছে।
তেমনি আদিম পৃথিবীর কোনো এক মহান বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার করেছিলো লোহা, এবং তাকে কাজে লাগিয়ে প্রভূত উন্নত করেছিলো তার সেই সময়কার সমাজের এবং উন্নতির পথ প্রশস্ত করে দিয়ে গিয়েছে আজকের সভ্যতার। কিন্তু কোরানের সুরা হাদীদে বলা হচ্ছে: ‘আমি অবতীর্ণ করেছি প্রচুর লৌহ যাতে রয়েছে প্রচুর শক্তি ও মানুষের কল্যান’। ( মুফতী মতিউর রহমান, অনলাইনে ইসলাম প্রচার, দৈনিক যুগান্তর, ২৫/৬/২০০৫।)। তাই যদি হয়, তাহলে সৃষ্টিকর্তার কাছে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, তুমি তো সর্বজ্ঞ, লৌহ যদি তুমি অবতীর্ণ করে থাকো, তাহলে তো অন্য শ'খানেক মৌলিক পদার্থও অবতীর্ণ করেছো। কোরানে তাদের কথা বললে না কেন? আর তাদের ব্যবহার ও ধর্ম যদি একটু বলে দিতে, তাহলে তো বিজ্ঞানীদের এত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে সেসব বিষয়ে জানতে হতো না। নাকি হযরত মুহম্মদের সময় লৌহ সম্বন্ধেই লোকজন বেশি জানতো এবং অন্যান্য মৌলিক পদার্থ সম্বন্ধে জানতো না? তাই বোধহয় হযরত মুহম্মদ এই সূরার মাধ্যমে লৌহের কথাই বলেছেন, অন্য মৌলিক পদার্থের কথা বলতে পারেন নি।
এটাই সত্য ও স্বাভাবিক যে, মানুষ যা জানে তার পক্ষে তা-ই বলা সম্ভব। যা জানে না, তা সে বলবে কীভাবে ? অন্য মৌলিক পদার্থগুলোর কথা সেই সময়ের আরবের লোকজন যেমন জানতো না, তেমনি জানতো না হযরত মুহম্মদও, সেই সাথে আল্লাহও! আবার আল্লাহ নাকি সর্বজ্ঞ!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন