রবিবার, ৫ জুন, ২০১১

কোরানের বাণী > কেন এতো ফানি – ১৭

লিখেছেন ব্লগার রাইয়ান 

সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ, আশা করি ভালই আছেন। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন আপনাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি। কারণ মহান আল্যাফাক আমার মডেমরূপী মোবাইলের উপর গজব নাজিল করেছিলেন। বেহেস্তের যত ফেরেস্তা আছে, তারা সবাই আমার মোবাইলের উপর বিরামহীন ভাবে লানত বর্ষণ করছিলো। যে কারণে আমি ইন্টারনেটের এই মায়াময় পৃথিবী থেকে বেশ কিছুদিনের জন্য নির্বাসিত ছিলাম। কিন্তু আল্যাফাকের গজব বেশি দিন টিকে নাই। যথারীতি প্রযুক্তির তাড়া খেয়ে আল্যাফাক আবার আরশের চিপায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন। কোরানের বাণীর পোষ্টমর্টেমে আপনাদের আবার স্বাগত জানাচ্ছি।

আজকের এই পর্বে অন্যান্য আয়াতের সাথে আমরা জানতে পারবো, চন্দ্র , সূর্য সৃষ্টির মূল কারণ কী, মুমিনেরা মুশরেক বা কাফেরদের রূহের মাগফেরাত কামনা করবেন কি না, এবং ধূর্ত মুহাম্মদ কীভাবে তার অনুসারীদের প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যেত। 


সূরা আত-তওবাহ, আয়াত ১১৩: এখানে আল্যাফাক বলেছেন, নবী ও মুমিনরা যেন মুশরেকদের আত্মার মাগফেরাত কামনা না করে, যদি মুশরেকরা মুমিনদের আত্মীয়ও হয়, তবুও। কারণ মুশরেকরা দোযখী। কিন্তু একটা জিনিস কিছুতেই বুঝলাম না। আল্যাফাক ও নবী বার বার বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসে শেষ বিচারের দিন বা হাশরের দিনের কথা বলেছেন। বলেছেন হাশরের ময়দানে সমস্ত সোয়াব-গুনাহর হিসাব হবে। সমস্ত কাজের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণ করা হবে। দুই কাঁধের দুই ফেরেস্তা সেই লক্ষ্যে অবিরাম ডাটা এন্ট্রি করে যাচ্ছে। সেই ডাটা দেখেই নির্ধারিত হবে - কে বেহেস্তী হবে আর কে দোযখী হবে। তাহলে মুমিনরা কীভাবে আগে থেকেই জানবে কে দোযখী। আর মাগফেরাত কামনা মানে হল, আত্মার শান্তি কামনা। একজন মানুষ ইসলাম কবুল করল না বলে একজন আস্তিক তার আত্মার শান্তিও কামনা করতে পারবে না? ইসলাম কি মানবতারও ঊর্দ্ধে? 

সূরা ইউনুস, আয়াত ৫: এখানে আল্যাফাকের ভূগোলজ্ঞানের সম্যক পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। চন্দ্র কি আলো বিতরণকারী? চন্দ্রের কি নিজস্ব আলো আছে, যা সে বিতরণ করবে? একজন অজ্ঞ মানুষ যদি এ কথা বলে, সেটা মানা যায়। কিন্তু আল্যআফাকের মত এত বড় সুবিজ্ঞ, মহাবিজ্ঞ সত্ত্বা যদি গণ্ডমূর্খের মত এসব কথা বলে, তাহলে কি তা মানা যায়? অনেক আস্তিক, মোল্লাকে বলতে শুনেছি, কোরান নাকি বিজ্ঞানের উৎসভূমি। আর সেই উৎসভূমিতেই আছে এত বড় গলদ। তারপর, আল্যাফাক আরও বলেছেন, সূর্য ও চন্দ্রকে তিনি সৃষ্টি করেছেন, যাতে মানুষ বছরের সংখ্যা ও হিসাব রাখতে পারে। পৃথিবীর মানুষের বছরের সংখ্যা ও হিসাব রাখার জন্য তিনি এমন একটি জিনিষ (সূর্য) বানালেন যা খোদ পৃথিবীর চেয়ে ১৩ লক্ষ গুণ বড়। তার চেয়ে বাজারে "১০০ বছরের আশ্চর্য ক্যালেন্ডার" টাইপের এক পাতার কিছু ক্যালেন্ডার পাওয়া যায়, সেগুলো মানুষের তৈরী। আল্যাফাক যদি সেরকম ১০ মিলিয়ন বছরের আশ্চর্য একটা ক্যালেন্ডার মুহাম্মদের ঘাড়ে নাজিল করতেন, তাইলে মানবসভ্যতার ইতিহাসে আর ক্যালেন্ডার তৈরীর দরকার হতো না, সূর্য তৈরীর কাঁচামালটাও বেঁচে যেত। আরেকটা জিনিস, আরও দুই একটা আয়াতে আল্যা তার ভূগোলজ্ঞান জাহির করেছিলেন (যেমন: সূরা আল-আরাফ, আয়াত ৫৪)।
কিন্ত কোথাও তিনি বলেন নি, কেন সৌরজগতের বাকি গ্রহ-উপগ্রহগুলো তৈরি করেছেন। 

সূরা ইউনুস, আয়াত ১৯: এই আয়াতে আল্যাফাক বিবর্তনবাদের প্রতি সূক্ষ্ম ইঙ্গিত দিয়েছেন। ডারউইন বেটা এত বছর ধরে দ্বীপে দ্বীপে ঘুরে জীব বৈচিত্রের নমুনা সংগ্রহ না করে যদি কোরানটা মনোযোগ দিয়ে পড়ত, তাইলে এই কথাটা আরও অনেক আগেই বুঝতে পারত। দ্বিতীয় লাইনে আল্যাফাক বলেছেন, এই বিভিন্ন উম্মতভুক্ত লোকজনের মধ্যেকার এই বিরোধ, মারামারি, হানাহানি এসবই আল্যাফাক আগেই ঠিক করে রেখেছিল। অসাধারণ! রিচার্ড ডকিন্স (অন্য এক প্রসঙ্গে) ঠিকই বলেছিলেন , "God must be a sadist bustard".

সূরা ইুউনুস, আয়াত ২০: এই আয়াতে চতুর মুহাম্মদ কিভাবে তার অনুসারীদের সন্দেহপূর্ণ জিজ্ঞাসাকে পাশ কাটিয়েছেন, তা নগ্নভাবে বের হয়ে এসেছে। তার অনুসারীদের কেউ কেউ তাকে যখন জিজ্ঞেস করল, আল্যাফাক শুধু মুহাম্মদের কাছেই আয়াত পাঠায় কেন, তাও আবার হেরার চিপায় নিয়ে, তখন ধূর্ত মুহাম্মদ তাৎক্ষণিক আয়াত নাজিল করাল যে, গায়েবের কথা আল্যাফাক জানেন। মুহাম্মদের ধূর্ত চেহারা এই আয়াতে মূর্ত হয়ে ফুটে উঠেছে। 

আজকের কোরান পাঠ আসর এখানেই শেষ করছি। আগামীতে আবার দেখা হবে। সবাই ভালো থাকবেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন