লিখেছেন হৃদয়াকাশ
ছোটবেলা থেকেই মহানবী সম্পর্কে একটি গল্প শুনতাম। মহানবীকে এক বৃদ্ধা মহিলা পছন্দ করতেন না। তিনি মহানবীর চলার পথে প্রত্যেকদিনই কাঁটা দিয়ে রাখতেন। একদিন মহানবী দেখলেন পথে কাঁটা নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে জানলেন বৃদ্ধা অসুস্থ। মহানবী তার বাড়ি গিয়ে পথে কাঁটা দেওয়ার জন্য কোনোরকম অভিযোগ না করে উল্টো বৃদ্ধার শরীরের খোঁজ খবর নিলেন। মহানবীর এই উদারতায় বৃদ্ধা তার সব অভিযোগ ভুলে গিয়ে মুহম্মদের কাছে ইসলাম গ্রহন করে মুসলমান হলেন।
এই কাহিনি শুনে মনে হবে, আহা মহানবী কী উদার ও মহৎ মনের মানুষ। তারপর আরও মনে হবে, এভাবেই বুঝি মহানবীর উদারতায় মুগ্ধ হয়ে আরবের সব লোকজন ইসলাম গ্রহন করেছে। কিন্তু ইতিহাস বলে অন্য কথা। আরবের ৯৯% লোক সে সময় ইসলাম গ্রহন করেছে মুহম্মদের তরবারির ভয়ে। আজকের আলোচ্য বিষয় এটা নয়। এ বিষয়ে পরে কোনো পোস্টে লিখবো।
উপর্যুক্ত বৃদ্ধার কাহিনির সত্য-মিথ্যা সম্পর্কে সঠিক কিছু জানি না। আগে তো সত্য বলেই মনে করতাম। কিন্তু ইসলামের ইতিহাস ঘাঁটতে গিয়ে যে কাহিনিটা পেলাম তাতে শিউরে উঠলাম এবং বৃদ্ধার ঐ কাহিনি সম্পর্কে মনে সন্দেহ দানা বাঁধলো। এই দানা বাঁধার আর একটা কারণ, মুসলমানরা তাদের ধর্মকে ওপরে ওঠাতে গিয়ে যেসব কাহিনি ছড়ায়, তার সবই মিথ্যা। এই কাহিনিগুলো তারা এমনভাবে ছড়ায়, যাতে সরল বিশ্বাসে প্রথমে মনে হবে একদম সত্য। কিন্তু ঐটা নিয়ে একটু ঘাঁটাঘাঁটি করলেই বেরিয়ে আসে আসল সত্য। যেমন, নভোচারী নীল আর্মস্ট্রং এর ইসলাম গ্রহন, কোরানকে অবমাননা করায় এক শ্রীলঙ্কান নারীর বানর হয়ে যাওয়া ইত্যাদি, ইত্যাদি। এই ঘটনাগুলো তারা এমনভাবে ছড়ায় যাতে সাধারণ বিদ্যাবুদ্ধির লোকজনের পক্ষে সেগুলো প্রমাণ করা দুঃসাধ্য, তাই তারা সরল বিশ্বাসে সেগুলোকে গ্রহণ করে। এই জন্যই্ বৃদ্ধা ও মহানবীর ঐ কাহিনির সত্যতা সম্পর্কে আমার সন্দেহ। এই সন্দেটি আরও গাঢ় হলো হযরত আলীর বর্ণনায় নিচের এই ঘটনাটি পেয়ে;
একজন ইহুদি রমণী প্রায়ই আল্লাহর রসুল মুহাম্মদকে (দঃ) ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করতো। একজন লোক ঐ মহিলার গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে টানতে থাকেন যতক্ষণ না তার মৃত্যু হয়। নবীজি ঘোষণা দিলেন, “ঐ মহিলার জীবনের কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়া যাবে না।” (দ্রষ্টব্য : আবু দাউদ শরিফ, বুক ৩৮, নম্বর ৪৩৪৯)।
একজন ইহুদি রমণী প্রায়ই আল্লাহর রসুল মুহাম্মদকে (দঃ) ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করতো। একজন লোক ঐ মহিলার গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে টানতে থাকেন যতক্ষণ না তার মৃত্যু হয়। নবীজি ঘোষণা দিলেন, “ঐ মহিলার জীবনের কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়া যাবে না।” (দ্রষ্টব্য : আবু দাউদ শরিফ, বুক ৩৮, নম্বর ৪৩৪৯)।
এটা নিশ্চিত যে নবীর আদেশ ছাড়া তো ঐ লোক আর ঐ ইহুদী মহিলার গলায় দড়ি লাগিয়ে টানতে যান নি। নবী যেভাবে বলেছে, ঐ সাহাবী সেভাবেই তা বাস্তবায়ন করেছে। এই যদি হয় নবীর মানসিকতা, তাহলে উপরোক্ত ঐ বৃদ্ধা মহিলার ব্যাপারে নবীর যে উদারতা, তা কীভাবে সম্ভব ? বিষয়টা একবার চিন্তা করুন ঘটনাটা কত নির্মম ও নৃশংস! গলায় ফাঁস লাগিয়ে তাকে মাটিতে ফেলে টানতে থাকে ততক্ষণ, যতক্ষণ না তার মৃত্যু হয়!
মহানবীর শ্বেতশুভ্র ভাবমূর্তির বিপরীতে প্রথম যারা এই ঘটনা জানলেন, তাঁরা একটু অবাকই হতে পারেন। কিন্তু আমি অতটা অবাক হই নি। কারণ, ইসলামের ইতিহাস ঘাঁটতে গিয়ে যে সব লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা পেয়েছি, তাতে নবীর পক্ষে এরকম ঘটনা খুবই সামান্য ব্যাপার। পরবর্তীতে আস্তে আস্তে এই ব্যাপারগুলো আলোচনা করা হবে। ইসলামের ইতিহাস ঘাঁটতে গিয়ে আমার আর একটা কথা মনে হয়েছে, এদেশের মুসলমানরা ইসলামের কিছুই জানে না। কারণ, তাদেরকে জানানো হয় না। কেউ যদি ইসলামের সম্পূর্ণ ইতিহাস জানে, তার পক্ষে কোরান ও নবীর ওপর শ্রদ্ধা রাখা সম্ভব নয় কোনোভাবেই। যাদের এ বিষয়ে আগ্রহ তারা আমার পরবর্তী পোস্টগুলো পড়তে থাকুন, আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আমার কথার সত্যতা সেখানে প্রমাণিত হবে।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ : আকাশ মালিক (মুক্তমনা ব্লগার)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন