সোমবার, ৬ জুন, ২০১১

বাধ্য বধূ সংঘ


চিরআশাবাদী আমি হতাশ সচরাচর হই না। তবে মাঝেমধ্যে হতাশা এড়ানো দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে আমার পক্ষেও।

ধর্মগুলোর কারণে সমগ্র মানবসভ্যতা সামগ্রিকভাবে ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে নারীজাতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি নিপীড়ন, শোষণ ও অধিকার-বঞ্চনার শিকার। আর তাই বিস্ময়ের সীমা থাকে না, যখন দেখি নারীদের ভেতরে ধর্মভক্তের সংখ্যা পুরুষদের চাইতে ঢের বেশি (আমি বলছি শিক্ষিত-শিক্ষিতাদের কথা)। এর অনেক "যুক্তিযুক্ত" কারণ হয়তো অনেকেই খুঁজে পাবে। তবে একটি বাস্তব কারণ কিছু মেয়ের জন্য প্রযোজ্য হতে পারে। কারণটির নাম: "স্টকহোম সিনড্রোম"। 

উইকিতে লিখছে: স্টকহোম সিনড্রোম হল জিম্মিদের মধ্যে দেখা যায় এমন একটি মানসিক অবস্থা, যার দরুন জিম্মিরা তাঁদের অপহরণকারীদের প্রতি আনুগত্য ও আবেগপ্রবণ টান অনুভব করে। ১৯৭৩ সালে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে সংঘটিত এক ব্যাংক ডাকাতির ঘটনার সময় ৬ দিন ধরে জিম্মি হয়ে থাকা ব্যক্তিরা তাঁদের আটককারী ডাকাতদের প্রতি দূর্বলতা প্রকাশ করেছিল - এই ঘটনার পর থেকেই এধরনের আচরণকে স্টকহোম সিনড্রোম বলা হয়ে থাকে।

কথাগুলো বলতে হলো Suirauqa-র পাঠানো লিংক ধরে একটি সংবাদ পড়ে। 


বিবাহবিচ্ছেদ, গৃহস্থ সহিংসতা ও অন্যান্য সমস্যার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছেন মালয়েশিয়ার কিছু মুসলিম রমণী। উদ্যোগটি অতিশয় মহৎ, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র সংশয় নেই। কিন্তু প্রশ্ন জাগে উদ্যোগ বাস্তবায়নের পন্থা নিয়ে।

"বাধ্য বধূ সংঘ" নামের এই সংগঠনের এই মহিলারা স্থির করেছেন, তাঁরা স্ত্রীদের কাছে গিয়ে গিয়ে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করবেন তাদের স্বামীদের প্রতি আরও বাধ্য ও অনুগত হতে! স্বামীদেরকে পরিবারভ্রষ্ট হওয়া থেকে ও সহিংসতা থেকে বিরত রাখতে হলে তাদেরকে সর্বোত উপায়ে তৃপ্ত রাখতে হবে - এ কথাই শেখানো হবে তাদের! 

সংগঠনের একজন মহিলা বলছেন, "অনেক মেয়ে বিয়ে করে স্রেফ আনন্দের জন্য। দায়িত্ববোধের ব্যাপারটি সম্পর্কে তারা অবগত নয়।... স্বামীর মনোরঞ্জন করা স্ত্রীর জন্য বাধ্যতামূলক। সে তা করতে ব্যর্থ হলে স্বামী অন্য মেয়ে খুঁজবে...।"

* কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক হলেও ধর্মকারীতে আগে প্রকাশিত স্টকহোম সিনড্রোম নামে একটি র‍্যাপ শুনে দেখা যেতে পারে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন