লিখেছেন ট্টারজান
চল্লিশোর্ধ হাম্মদ সাহেব বেশ প্রমাণ সাইজের কুক্ষিগত সম্পত্তি, আর দু চারজনের থুতু সহ সম্মানী সেলামী নিয়ে দিন ভালোই কাটাচ্ছিল। যে কালে ভেড়ার দড়ি ফালায়া বাজারে গিয়ে বস্তার দড়ি ধরে ধরে ব্যবসায়ী বয়সী মহিলাটির ঘরে ঢুকল, তখন লোকে তাকে সকাল বিকাল সালাম ঠুকছে।
সকাল বিকাল ধরে হুর পরীদের সাথে ডগী স্টাইলে ছহবত করতো তখন তার মস্তিষ্ক একটাই ছিলো, এখন এই অজড় বৃদ্ধাটি যখন গভীর রাত অবধি তার উরুসন্ধির সাথে লেগে থাকে, তখন তার পশ্চাদ্দেশের ভূ-ভারত পর্যবেক্ষন করতে করতে আবিষ্কার করে হাম্মদ, তার দ্বিতীয় মস্তিষ্ক তার উরুসন্ধির মধ্যপ্রদেশের ঢালে-ওটা হলো শিশ্নমস্তিষ্ক।
শিশ্নমস্তিষ্কটি ষোড়শী-কিশোরী-বন্দিনী-ছুড়ি চাইকি সাহাবীদের আহবানেও সাড়া দেয়, কিন্তু এই বুড়ির আমন্ত্রন মস্তিষ্কটির হাইপোথ্যালামাসে যখন সমকামীতার গুজব বাজারের রইসুদ্দিনের গমের বস্তার নিচ থেকে বাজারের শেষ মেয়েটার ঘর অবধি পৌঁছে গেল তখন ইমেজ পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় আর শিক্ষানবীস দলের চাপাচাপিতে খড়িমাটি ঠেস দেওয়া ভাঙ্গাছাতিম তলার পাঠশালা খুলে বসল। এইভাবেই আত্মপ্রচারে মতি হলো তার, শিক্ষাগুরুর মর্যাদা সমাজে সর্ববিদিত। হুজুর-মাওলানার কদর বাড়ে তার দাড়ির দৈর্ঘ্য-প্রস্থের সমানুপাতে। সেই হিসেবে নতুন পরিচয়ে জপিয়ে নিয়ে সময় বেশ খারাপ কাটছিলো না। মাদ্রাসার ছাত্ররাও উপরন্তু দিনে-রাতে ভালই সার্ভিস দিচ্ছে, ঘুম থেকে উঠে বদনা হাতে টাট্টি ঘরে দৌড়ানোর সময় থেকে শুরু করে ঘুমাতে যাওয়ার পরও! সমস্যা কেবল এই যা- মাদ্রাসার বুয়া দুদিন পর পর চেঞ্জ করতে হয়। এইতে মাদ্রাসার পোলাপান চোখ টিপে হাসাহাসি করে। তাদের বাপ-মা এসব দেখে বলে নাউজুবিল্লাহ, হাম্মদ সাহেব বিগলিত হাসি দিতে দিতে বলেন আলহামদুলিল্লাহ্।
ব্যাবসা-পাতি টিকিয়ে রাখতে বুয়া-বিড়ম্বনায় না গিয়ে এখন স্বহস্তে পঞ্চব্যঞ্জন হাঁড়িতে চাপান। হংসডিম্ব দিয়ে সাতসকালের নাস্তা সারেন। সুবিধাটা হলো পরমহংস আর এই হংসডিম্ব নিজ গুণেই স্বয়ংসিদ্ধ হতে থাকে, তাই সেক্ষেত্রে অতি পানি বিনিয়োগ কেবল বিলাসিতা বৈ কিছু না। পানিবিহীন সিদ্ধ ডিম সেবন করে মাদ্রাসা ছাত্ররা দিব্বি উতরে যাচ্ছিল বুয়ার ঘাটতি টা, হাম্মদ সাহেবও সহিসালামতে ছিলেন কেবল যতক্ষন না শিশ্নমস্তিষ্কটি বিপ্লবী হয়ে উঠে তার আগ পর্যন্ত। সেই বিপ্লবকেও কখনো শক্ত হস্তে কখনো বা উট-দুম্বার সাহায্যে দমন করে চলতেন।
এই করে দিনকাল কাটছিলো- ভালোই কিন্তু সমস্যা হলো হংসডিম্বতে গিয়ে। ব্যাঙাচি লেজ খসিয়ে ব্যাঙ হয়, আর হাম্মদ সাহেব তলদেশ দিয়ে স্বয়ংসিদ্ধ ডিম্ব খসিয়ে অশ্বডিম্বের ধারনা নিয়ে প্রতিদিন হাগনঘর ত্যাগ করছেন। মধ্য রাত্তিরে শিশ্নমস্তিষ্কের প্রদাহ, আর ভোরবেলায় অশ্বডিম্বের প্রেরণা দুটো তাকে তৎকালের জ্ঞানীগুণি-বিতশ্রদ্ধ জনে রূপান্তর ঘটিয়ে দিচ্ছিলো। এই দুইটার প্রবল চাপে দিশেহারা হয়ে যখন তিনি টাট্টিঘর অভিমুখে দৌড়ান- তখন হ্যালুসিনেশন হতে থাকে তার। উল্টাপাল্টা সব ভুতূড়ে দৃশ্য তার সামনে হাজির হয়ে যায় এই সময় নাগাদ। এই দুইটার সংকরায়নে অর্পিত জ্ঞানে দিনমান নির্যাতিত হতে লাগল মাদ্রাসার ছাত্রগণ। প্রত্যেহ হাম্মদ মাওলানা তার স্বপ্রস্তাবিত অশ্বডিম্ব ধারনা তাদের মাথায় ইনটেক করে দেন।
এই প্রলংয়করী শাস্ত্রের সুনামীতে দেশ-বিদেশ তখন ভেসে যাচ্ছে, হাম্মদ সাহেবের শিশ্নমস্তিষ্ক আর অশ্বডিম্ব তত্বের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা স্রোত ভেঙ্গে আসছে। হাম্মদ সাহেব স্মিত মুখে এসব শ্রদ্ধা-ভালোবাসা বরণ করেন, মাদ্রাসাতে সকাল-বিকাল ছাত্রদের প্রহার করেন, রাত্তিরে হুর-পরীদের কুমারীত্ব সংহার করেন, ঘরে বসে স্বয়ংসিদ্ধ হংসডিম্ব আহার করেন আর সকাল সকাল হাগনঘরে গিয়ে অশ্বডিম্ব গ্রহণ করেন।
সেদিনও সকালবেলা অশ্বডিম্বের প্রেরণায় আর অন্দরমহলের ঘন ঘন সাড়া প্রত্যাশার তীব্রতায় বদনাখানি পাকড়ে হান্ড্রেড মিটার স্প্রিন্ট দিয়ে হাগনঘরে এসে পৌছালেন। দরজার মুখের কাছাকাছি এসেই মুখ তার চুন হয়ে গেল- একি সর্বনাশ!! ভিতর থেকে কে এমন দুম-দাম-দুপুস-দাপুস বোম ফাটাচ্ছে!! চটজলদি আশাপাশ নিরিক্ষন করে বোঝার চেষ্টা করেন শত্রুশিবিরে এসেছেন না যুদ্ধময়দানে! বোমফাটাবে কে এখানে?
হাম্মদ সাহেব বদনাটা সম্মুখে বাগিয়ে আত্মরক্ষার মনোকামনায় তৈরী হয়ে যান। তদমুহূর্তে গোটা অ্যারাবিকোনিসিপ্যালিটির বিরাট আর্বজনার পাহাড়টার জ্বালামুখ ফেটে গিয়ে যেন এক ভয়ঙ্কর বদগন্ধের বিস্ফোরন তার নাসিকাকে প্যারালাইজড করিয়ে দিলো। তিনি এর তীব্রতা সইতে না পেরে মূর্ছা যান।
মিনিট দুয়েকের অবচেতন দশা থেকে ফিরে এসে তিনি দৃকপাত করলেন পরিবেশের দিকে, দুটো কাক মরে পরে রয়েছে পাশেই। এই বদগন্ধের অস্তিত্বের টের পেয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে দেরি করে ও দুটো । নেহায়তই মহাপুরুষ বলে আর গান্ধাইল (আঃ) তাবিজ ধারনের কারনে এ যাত্রায় বেঁচে গিয়েছেন তিনি। এই ব্রক্ষ্মায় এমন মানববিনাশী গন্ধের অস্তিত্ব থাকতে পারে তা তার জানা ছিলো না।
এই নতুন বিপদটার সম্বন্ধে চকিত সচেতন হয়ে আর্তনাদ করে উঠেন তিনি,
- ‘ওরে কোন হতচ্ছাড়া আছিস ভিতরে?’
জবাবে আরো গোটা কয়েক মাঝারি সাইজের ডিনামাইট ফাটলো দরজাটা কাঁপিয়ে। এই জায়গা ত্যাগ না করলে নতুন করে গন্ধস্রোতের কোপে পড়ে মূর্ছা যাবেন বুঝতে পেরে হাম্মদ সাহেব পুনরোক্তি-
- ‘থাক বাবা, এদিকটা বরং তুই-ই বরবাদ কর। আমি যাচ্ছি ওদিকখানার টাট্টিঘরটা বরবাদ করতে।’
বাঁশের মাচাখানা খুল্লামখুল্লা অবস্থায়- হাম্মদ সাহেব অব্যবহৃত এই টাট্টিঘরে এসে বুঝতে পারলেন নিকট ভবিষ্যতে ভয়ানক কিছু ঘটে যেতে পারে। এদিকে অন্দরমহল জানান দিচ্ছে বার বার তার পোষাকখানার অন্তিমকাল উপস্থিত- এখনই তলখানা ক্লিয়ার না হলে ও পোষাকের জানাজা দিতে হবে সন্ধ্যেবেলা। ঝুলন্ত টাট্টিখানা কোন রকমে চারটা পৃথক বাঁশের উপর নিজের অস্তিত্বের বাপ-মা বাঁচাচ্ছে। উপরে তাকালে আসমান দেখা যায়, নিচে ....... নাহ্ নিচে তাকানো যায় না।
তবু কোন রকমে চোখবুজে, ইষ্ট নাম জপে-কাপড় তুলে বসতেই........ বাজ পড়ার মতো গুড়ুম আওয়াজ করে এক প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প হয়ে যায় টাট্টিঘরের ভিতরে। হাম্মদ সাহেব মূর্ছা যান তৎক্ষনাত। কি থেকে কি হয়ে গেল বুঝে উঠার অবসরটুকু মেলে না। বহু সময় ক্ষেপনে তার চেতনা ফিরে আসলে বুঝতে পারেন কলসির পর কলসি পানি ঢালা হচ্ছে তার উপরে- সারা শরীরে মাখামাখি পাচকযন্ত্রের ফলাফল, আধাআধি হজম হওয়া হংসডিম্ব। ছাত্ররা এক হাতে নাকচাপা দিয়ে নিজেদের নাসিকাযন্ত্রকে সুরক্ষা প্রদান করছে, আরেক হাতে পানি ঢেলে হাম্মদ সাহেবকে রক্ষা করছে।
একটা বিরাট হাস্যকর পরিবেশ কিছুক্ষন বাদে উপস্থিত হবে, অনুমান করেই হ্রেষাধ্বণিতে চিৎকার ছেড়ে কাঁপতে কাঁপতে উঠে দাড়ান তিনি। সঙ্কটাপন্ন পরিস্থিতিতে নিজ সুবিধের পরিবেশ আদায় করে নিতে এবং স্বাভাবিকের ভিড়ে নিজেকে নতুন করে পরিচিত করিয়ে তোলার প্রেরণায় মানুষ ষড়যন্ত্রতত্বে সম্মত হয়ে অনেক ছোটখাট অন্যায়-বড়সর মিথ্যা-অস্বাভাবিক তত্ব জনসম্মখে দিতে উদগ্রীব হন। হাম্মদ সাহেব সেই লাইনেই এগোলেন। ছাত্রসকল স্তম্ভিত করে দিয়ে বলে উঠেন-
- ‘ওরে মূর্খের দল আয়াত খানা মিস করালি কেন?’
একে অপরের মুখের পানে চেয়ে বুঝে নিতে চেষ্টা করে অপোগন্ডবেরা, ওস্তাদের অভিযোগখানা কার দিকে উদ্দেশ্য করে। নির্দিষ্ট কাউকে না পেয়ে পূর্ণ-সংশয় নিয়ে মনোযোগ নিবিষ্ট করে হুজুরের দিকে।
কিছুক্ষন পিট পিট করে কুতুকুতু চোখে তাকিয়ে পরিস্থিতি বুঝতে চেষ্টা করেন হাম্মদ সাহেব। কাজ হয়েছে!!! কুটনীতিকের মতো আরেকটু সময় নেন সংশয় দানা বাঁধাবার জন্য।
- ‘ওরে কোন হতচ্ছাড়া আমার ধ্যান ভাঙ্গালি?’
ওপাশ থেকে গাবদুল ইতস্তত ভঙ্গিতে হাত তুলে জানান দেয় তার উপস্থিতি।
হতাশ মুখাবয়ব খানা ধরে রেখে প্রায় কাঁদো কাঁদো স্বরে বলেন হাম্মদ সাহেব-
- ‘তাও যা রক্ষে, পৃথিবী ধ্বংসের আগেই বাধা দিস নি! নইলে এখন আর হাত তুলে দেখানোর মতো অবস্থাতেও থাকতি নে। যা বুঝিস না, যা জানিস না, তা করতে যাস কেন রে হাবু?’
নাসিকা কুঞ্চন করে নিকটগামী হয় ছাত্র সকল-
- ‘কি হয়েছে ওস্তাদজি? হয়েচে কি?...
- ‘আহা!! জানতে যে একদম কোলে উঠে পড়তে ইচ্ছে করছে এখন। নাক চেপে ধরে আছিস কেন বদের দল। জানিস এই বিষ্ঠা দিয়ে পৃথিবী রক্ষা করলাম এই মাত্র! ওরে হতচ্ছাড়া, বলি- আমি আমার অন্দরমহল ব্লাংক করতে করতে সেই ঈশ্বরের বানীর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। ওদিককার ঘরটায় কে যেন সেই মাঝরাত্তির থেকে উট খেয়ে বরবাদ করেই যাচ্ছে- নাচার হয়ে যখন এইখানে কর্মসম্পাদনে এসে মাত্র শেষ করলাম, উঠব- এমন সময় এক সৌম্যদর্শন বুড়ো এসে হাজির।’
মৃদুগুঞ্জন! হাম্মদ সাহেব প্রায় গোপনে একটা নিঃশ্বাস ছাড়েন। হয়েছে!!
- ‘বলেন কি? সেই যেটা রোজ আপনাকে দর্শন দেয়? সেই অশ্বডিম্বতত্ববাহী বুড়ো?’
- ‘ওরে হ্যারে সেই। এসে আমাকে বলল, আর কয়েক সেকেন্ড বাদেই কিয়ামত হয়ে যাচ্ছে। তোমার তত্বখানাগুলো ভালো মতো বেঁধে নাও, আর হংসডিম্বগুলোকে খেয়ে নাও। জান্নাতে ফেরত যাচ্ছো তোমরা।’
- ‘স্যার স্যার, আমাদের কারো নাম বললো না? কে কে যাবো আপনার সাথে?’
- ‘হতভাগার আছে যে যার ধান্দায়!!! বলি পুরোটা শুনবি তো? কি জন্য কেয়ামতটা হলো না সেটা জানবি তো নাকি....’
প্রশ্নকর্তাকে বাদবাকী উৎসাহী-তৌহিদী ছাত্ররা পশ্চাদ্দেশে কিক-দান-পূর্বক তফাতে ঠেলে দেয়, ও হতচ্ছাড়া জাহান্নামী হবে নিশ্চিত।
- ‘সেই জ্ঞানী বুড়ো আমাকে বলল, এখনই ভূমিকম্প হবে। তোমার আমলনামার ফোল্ডার টা রেখে পাপের ফোল্ডারটা চটজলদি ডিলিট মারো। খোদা বাটখারায় সরিষা তেল মেরে বসে আছে- পাপ পূণ্যির হিসেব হবে।’
- ‘কি সব্বোনাশ!!!’ (সমস্বরে)
- ‘তা আর বলতে! বুড়ো কথা শোনা মাত্রই আমি প্রাণপণে জপে চললাম আমার সেই অশ্বডিম্ব প্রেরককে। মিনিটখানিক সময় শ্রাদ্ধের পর সেই অশ্বডিম্বমালিক আমাকে একখানা ডিম্ব জিমেইলে পাঠালো- হে হাম্মদ, তোমার পশ্চাদ্দতলে পৃথিবীর সেন্টার অবস্থিত। ব্রক্ষ্মরক্ষার দায় তুমি বুঝিয়া লও।’
- ‘স্যার স্যার, আপনি টাট্টিঘরে ল্যাপি নিয়ে ঢুকেছিলেন?’
কেঁচে গিয়েছে!!! গোঁজামিলগুলো হতচ্ছাড়ারা ঠিক ধরে ফেলে। একটা কথা মাটিতে পড়বার জো নেই হারামিগুলোর হারামিপনার হাত থেকে-
- ‘এই তোর নাম কি?.... প্রতিদিন অশ্বডিম্বটি আমার কাছে কি হাওয়ার মাধ্যমে আসবে? বলি মাথায় তো গোবরে ভরা, তুই বুঝবি কি? কেউ একটা কথা বলল না- তুই মাঝখান থেকে কি নিয়ে এসেছিস... দূর হ এখান থেকে’ (প্রচন্ড বিরক্তি ঝড়ে পরে হাম্মদ সাহেবের গলা থেকে)
বাদ বাকী ছাত্র সকল ততক্ষনে হাম্মদ সাহেবের শরীরে অবস্থানরত মানববিষ্ঠার অস্তিত্ব ভুলে গিয়েছে। আরো নিকটবর্তী হয়ে অতিউৎসাহী দুয়েকজন ভীড়ের মাঝ থেকে আগ বাড়িয়ে সামনে এসে চুমু খেয়ে নিলো হাম্মদ সাহেবের পায়ে।
- ‘তারপর স্যার?’
-‘তারপর আর কি? এক মিনিট নিরিক্ষন করে সেন্টার পয়েন্টটা বুঝে নিলাম। এই খানটা যদি একটু নাড়িয়ে চাড়িয়ে দিতে পারি তাহলে- এই কাঁপাকাঁপি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তারপর চটজলদি নাক মুখ বন্ধ করে- একখানা ভয়ঙ্কর বায়ুত্যাগ করে স্তম্ভিত করে দিলাম বসুন্ধরাকে। সাথে সাথে পেন্ডুলামের ঘড়ির মতো দুলতে লাগলো টাট্টিঘরটা প্রচন্ড হাওয়া আর চাপে। টাট্টিঘরটা- যেটার ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাচ্ছিস ঐ খানে- ওটা বামপাশ ডানপাশে নড়িয়ে চড়িয়ে পৃথিবীর কম্পনকে নিউট্রাল করে দিলাম। কাটিয়ে দিলাম ভয়ঙ্কর কিয়ামতের ফাড়া।'
ততক্ষনে উপস্থিত ছাত্রসকল মিছিল সাজিয়ে ফেলেছে, হাম্মদ সাহেব সবার মধ্যমণি- তিনি ভাসছেন মিছিলের উপরে। নিচ থেকে জোড়া জোড়া হাত তাকে ভাসিয়ে রেখেছে, এই মিছিল তাদের বোধীজয়ের মিছিল। পয়গম্বরের সাথে খোদার এক কানেকশন তৈরী হয়ে গিয়েছে... এখন দুনিয়ার সকল খারাপ মামলা ডিশমিশ এইবার থেকে।
লজ্জিত গলায় উপর থেকে হাম্মদ সাহেব ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বললেন- ‘ওরে, অত বাড়াবাড়ি করিস নে। বুড়ো শরীরের সইবে না। আর ঐ টাট্টিঘরটাকে তোরা ভুলিস নে। ওটা ছিলো বলেই পৃথিবী আছে। ওটা নিয়ে তোরা একটা মনুমেন্ট বানাস।’
এরপর বহুকাল গেল, বহু জল গড়ালো। বহু উজির মরলো, নাজির খাড়ালো। টাট্টিঘরটাও রয়েছে ঠিক সেরকমই-ভক্তকুলের সেবায়, ভালোবাসায়। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন পূণ্যি লাভের আশায় এক স্থাপত্য কে কেন্দ্র করে লেংটা হয়ে সাত পাক দিয়ে আসে।
ট্যাকা থাকলেই হাবায়
ছুটতে থাকে কাবায়!!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন