লিখেছেন রাহনুমা রাখী
ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয় মহানুভবতার, উদারতার। ইসলাম ধর্মগ্রন্থ কোরানে কিছুক্ষন পর পরই ছাগলের বড়ি আকৃতির বিষ্ঠার মত একটি কথা খুঁজে পাবেন- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল’। পরম ক্ষমাশীল আল্লাহ শুধু নিজেই নন আমাদেরও ক্ষমাশীল হওয়ার আদেশ দিয়েছেন। কিন্তু আমরা অক্ষম পাপীরা প্রায়ই তাকে অনুসরণ করতে ভুলে যাই। কিন্তু পৃথিবীতে এমনও কিছু মোমেন মুসলমান আছেন, যারা অক্ষরে অক্ষরে ক্ষমাশীল হওয়ার নিদর্শন দিয়ে যাচ্ছেন নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েও। সেইরকমই একজন আমেনেহ বাহরামি।
ইরানী শিক্ষার্থী আমেনেহ বাহরামি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। সহপাঠী মাজিদের বিয়ের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় মাজিদ তাকে এসিড ছুড়ে মারেন। এতে তার দু চোখ অন্ধ হয়ে যায় ও মুখমণ্ডলে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এসিড ছোঁড়ার অভিযোগ রেখে করা মামলায় আদালত মাজিদকে দোষী সাব্যস্ত করে ও তাকে অন্ধ করে দেয়ার দণ্ডাদেশ দেয়। রায় কার্যকর নেয়ার সব ধরনের প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ সময়ে এসে আমেনেহর ‘মহানুভবতা’ জেগে উঠে এবং তিনি মাজিদকে ক্ষমা করে দেন।
গত রোববার ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের ওয়েবসাইটে এ খবর প্রচারিত হয়।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইসনাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ‘মানবতাবাদী’ আমেনেহ বলেন- ‘আল্লাহ পবিত্র কোরানে শাস্তির কথা উল্লেখ করেছেন। একই সঙ্গে ক্ষমা করে দেয়ার কথাও বলেছেন। শাস্তি দেওয়ার চেয়ে ক্ষমা করা মহৎ কাজ।’
বাহরামির মা, আরেক ‘মহানুভব’ মহিলা বলেন- ‘মেয়েকে নিয়ে আমি গর্বিত।’
আহ! মহানুভবতার কী নিদর্শন! একটি প্রবাদ আছে- ‘চোখ থাকিতে অন্ধ’। চোখ হারিয়ে আমেনেহ অন্ধ হন নি। তিনি আগাগোড়াই ছিলেন অন্ধ! আর তার গর্দভ মাও অন্ধ গর্ব করতে ভোলেন নি।
রমজানের মাস চলে এসেছে। ইসলাম তার সংযম ও মহানুভবতার বার্তা নিয়ে ঘরে ঘরে দৌড়াচ্ছে।
তাই আসুন পবিত্র মাহে রমজানের এই মাসে আমরা ক্ষমা নামক মহৎ কাজে নিজেদের উৎসর্গ করি। পৃথিবীর তাবৎ ধর্ষক, যৌন নির্যাতক, এসিড ছুড়ে দেয়া সন্ত্রাসীদের ক্ষমা করে দেই। আমেনেহর পথ অনুসরণ করে আরও মেয়েদের অন্ধ করে দেয়ার পথ সুগম করে তুলি। আমিন!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন