রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০১১
রামকথার বালজনোচিত সংস্করণ (উত্তম পুরুষে বিবৃত)
সন্ধান দিয়েছেন অরুন্ধতী ঝিলি
বাপের হোটেল, ছিলাম সুখেই, মণ্ডমিঠাই সাঁটিয়ে,
পাশা খেলে, তীর চালিয়ে, তবলা বাঁয়া চাঁটিয়ে,
নতুন বিয়ে, নিশিযাপন নীল মশারি খাটিয়ে,
হঠাৎ করে ড্যাডি দিলো দণ্ডকবন পাঠিয়ে।
ব্যাগ গুছিয়ে রওনা দিলাম, চলল সাথে সীতা,
মনের মধ্যে ক্ষোভের বাতাস, "ঠিক হল কি পিতা"?
সঙ্গে এল লক্ষণভাই, ধরতে আমার ম্যাও'টা,
ছোটোর থেকেই উটি আবার আমার বিশেষ ন্যাওটা।
সে জঙ্গলে ব্যাপক ছিলাম গুহকদাদার গেস্ট,
অঢেল তিতির, দিশি মোরগ, তুখড় তাদের টেস্ট!
গাছে চড়ে পঁচিশটা আম ছাড়িয়ে মুখে ফেলতে,
এফেক্ট হল দেখার মত, তিনিজনেরই হেলথে!
বোতল টোতল চাইলে পরে জুটেও যেত ঠিক,
জঙ্গুলে ব্র্যাণ্ড কিন্ত ভায়া ফ্যাণ্টাস্টিক কিক!
কাটছিল দিন বেড়ে মজায় গীষ্ম, বর্ষা, শরৎ,
হঠাৎ সেথায় গাড়ি নি্যে হাজির হল ভরত!
পানসে মুখে বলল, 'দাদা, শিগ্রি চল ঘরে,
ড্যাডি হঠাৎ অক্কা গেছেন দু'চারদিনের জ্বরে'।
আমার জিভে তখন জমাট জংলি মজার স্বাদ,
ভরতকে জানিয়ে দিলাম চোদ্দ বছর বাদ
ফিরবো, তো তুই সে ক'টা দিন সীটকে রাখিস গরম,
ঘেমে নেয়ে বলল ভরত, 'বাড়িও না আর শরম'।
নাছোড় দেখে পায়ের থেকে ছেঁড়া হাওয়াই চটি,
সাড়ম্বরে খুলে ভায়ার হাতেই দিলাম ওটি।
চটিজোড়াই প্রক্সি দিল সিংহাসনে বসে,
জড়ভরত মোড়ায় বসে বুড়ো আঙ্গুল চোষে।
সুখে দুখে কাটছিল বেশ, সামওয়ে অর আদার,
হঠাৎ করে গোল বাঁধালেন বনবাসী ব্রাদার!
শূর্পনখা এক নজরে লক্ষণকে মেপে
করবে শাদি, বলতে তাতেই ভাইটা গ্যালো ক্ষেপে।
মূর্খ গোঁয়ার, বিন্দুমাত্র মগজটি না ঘামিয়ে,
ঘ্যাঁচাৎ করে ক্ষুরের পোঁচে নাক দিল তার কামিয়ে।
দাদা রাবণ খচে আগুন, আমিও অসন্তুষ্ট,
কোথাত্থেকে শুকনো আপদ, সে ব্যাটা খুব দুষ্ট!
বুদ্ধি করে বাঁদরগুলোর সঙ্গে করি দোস্তি,
এই বাজারর স্থানীয়রাই ভরসা, বাড়ায় স্বস্তি।
রাবণ আমায় শিক্ষা দেবে এমনি আছে মুখিয়ে,
টেনশনে তাই খুঁজছি ডেরা, থাকবো যেথা লুকিয়ে।
এইদিকে এই বিহারী বৌ, তাকে নিয়েও চিন্তা,
ডাগরডোগর এমনি খাসা, কোথায় প্রীতি জিন্তা?
এই ব্যাপারটা সেই শালারও হয়েছে কর্ণগোচর,
জানিয়ে গেছে চুপিচুপি বন্ধু বাঁদর খোচর।
শুকিয়ে মরু জিভের তালু, রাবণ রেগে চণ্ডী,
সীতার ঘরের বাইরে দিলাম ম্যাজিক করা গণ্ডী।
সে'খান থেকেই কেমন করে গিন্নী বাজেয়াপ্ত,
ঐ রাগেতে উড়িয়ে দিলাম লঙ্কাসিটি'র হাফ তো!
রাবণ তখন অনেক দূরে, এই পৃথিবীর সিন থেকে,
জাগল করে খেলছি ব্যাটার দশটা মাথার তিনটেকে।
ভোগায় নি কম ব্যাটাচ্ছেলে! দেখতে বুড়ো হাবড়া,
বাচ্চা পেয়ে লক্ষণকে কষিয়েছিল থাবড়া!
রদ্দা খেয়ে লক্ষণ ফ্ল্যাট, শিওর যেত মরে,
রক্ষা পেল এ যাত্রা স্রেফ জংলি বুটির জোরে।
ভয়ে আমার হাত পা গ্যাছে পেটের মধ্যে ঢুকে,
জাম্বুবানটা বলল, 'কাকু, সাহস আনুন বুকে,
কান্নাটান্না সাইডে রেখে এবার ঝেড়ে কাশুন,
নইলে এ'বার বলব কিন্তু আস্তে করে আসুন'।
বার খেয়ে সেই খাড়া হলাম আমি শ্রীরামচন্দ্র,
একাই মেরে সাবড়ে দিলাম, হাজার দশ না পন্দ্রহ্!
সে টেম্পোতেই রাবণ ফিনিশ, পড়ল ধপাস করে,
বিভীষণের হৃষ্ট মুখে হাস্য নাহি ধরে।
আমায় দেখে মন্দোদরীর চন্দ্রবদন ফ্যাকাশে,
সবাই নিকেশ আশেপাশে রয়েছে পড়ে একা সে!
সুপুত্র তার ঝাণ্ডু প্লেয়ার, খেলতো ক্যামোফ্ল্যাজে,
মাচিসখানা জ্বালিয়েছিল ঐ হনু'দার ল্যাজে।
কেউ না বলুক, আমি শিওর যেমন তিলে খচ্চর,
গভীর ঘোড়েল বাপের ব্যাটা, রাস্কেল আর জোচ্চর!
ধনুক মেরে মেঘের পিছে সেঁধিয়ে যেত খালি,
মারতে তাকে করতে হল দু-চার ছটাক জালি।
কুম্ভকর্ণ নমুনা এক, বলতে গেলে যন্তর-ই
বিরাট গোদা ঘুমিয়ে কাদা, কয়েকটা দিন অন্তরই।
বাল্মিকী আর স্বর্গবাসী দেবদেবীদের সাপোর্টে,
কেল্লাফতে কলম্বোতে, দৃশ্যতঃ বেশ দাপটে।
অশোকবনের ছায়ায় সীতা রাখলো হাতে হাত,
ক্ল্যাপের চোটে ফেটেই গ্যালো প্রেক্ষাগৃহের ছাত!
আমার জয়ে শান্তি এল, যুদ্ধ হল ফয়সালা,
এখন সবাই পঞ্চমুখে আমার কথাই কয় শালা!
আমি নাকি মডেল পুরুষ, রুস্তমিতে শ্রেষ্ঠ,
বক্ষে দয়া, বাহুতে বল, স্বভাবখানায় বেস্ট-ও!
ঈষৎ হাসি ও'সব শুনে পারবানা না কেউ zআনতি,
অটুট রাখি পালিশ করা সোনামুখের শান্তি।
রাত্তিরে শুই গদির খাটে, নিদ্রা তবু নষ্ট,
গলায় বেঁধা কাঁটার মত খোঁচায় মনে কষ্ট।
নখের আঁচড় নাই বা থাকুক সীতার সোনার অঙ্গে,
রাবণ ব্যাটা এই ক'টা দিন শোয়নি কি ওর সঙ্গে?
ক'দিন ধরেই অযোধ্যাতে বৃদ্ধ, জোয়ান, পুঁচকি!
আমায় দেখে কেমন যেন হাসছে সবাই মুচকি!
সীতা, গীতা বা ললিতা আদতে সব নারী,
পলক চোখের আড়াল হলেই রিস্কি এরা ভারি!
মন খারাপের এই ব্যামোটার একটা দাওয়াই আছে,
যাচিয়ে নেব বৌটা কেমন কয়লাকাঠের আঁচে।
সীতার কাছে হ্যাটা? তা হোক, বলবে প্রজা ধন্য,
পুড়েই মরুক না হয় আমার টি আর পি'টার জন্য।
মরলে কিন্তু মেডেল পাবে, তকমা পাবে সতী,
সেটার পাশে পোড়ার জ্বালা নস্যিপ্রমাণ ক্ষতি।
* পাওয়া গেছে এখানে।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন