শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১১

নির্ধার্মিক মনীষীরা – ৪১


লক্ষ-কোটি কুশিক্ষিত ও জ্ঞানপাপী আমাদের ঘিরে রেখেছে। যুক্তি প্রয়োগে তারা ভীত, সত্যের মুখোমুখি হতে কুণ্ঠিত, পাছে বিশ্বাস হারিয়ে যায় বিধায় তথ্য এড়িয়ে চলতে তৎপর। কিছু অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত ও স্বশিক্ষিত ব্যক্তির স্বচ্ছ, যুক্তিনিষ্ঠ ও মানবতাবাদী চিন্তাধারাও তাদেরকে লজ্জিত করে না।  

শাহ আবদুল করিম - বাংলা বাউল গানের জীবন্ত কিংবদন্তী। ধর্ম ও ঈশ্বর সম্পর্কে তাঁর ধারণা:

আমি কখনোই আসমানী খোদাকে মান্য করিনা। মানুষের মধ্যে যে খোদা ব ইরাজ করে আমি তার চরণেই পুজো দেই। মন্ত্রপড়া ধর্ম নয়,কর্মকেই ধর্ম মনে করি। লাখ লাখ টাকা খরচ করে হজ্জ্বপাওলনের চেয়ে এই টাকাগুলো দিয়ে দেশের দুঃখী দরিদ্র মানুষের সেবা করাটাকে অনেক বড় কাজ মনে করি। প্রচলিত ধর্ম-ববস্থা আমাদের মধ্যে সম্প্রদায়গত বিদ্বেষ তৈরী করে দিয়েছে। কতিপয় হীন মোল্লা-পুরুত আমাদের ভাইয়ে ভাইয়ে বিভাজন নিয়ে এসেছে। এই বিভাজনই যদি ধর্ম হয় সেই ধর্মের কপালে আমি লাত্থি মারি।

‘সবার উপরে মানুষ সত্য’ এই হলো আমার ধর্ম। নামাজ রোজার মতো লোক দেখানো ধর্মে আমার আস্থা নাই।কতিপয় কাঠমোল্লা ধর্মকে তাদের নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে। আমার এলাকায় প্রতিবছর শীতের সময় সারারাত ওয়াজমাহফিল হয়। দূর-দূরান্ত থেকে বিশিষ্ট ওয়াজীরা আসেন ওয়াজ করতে। তারা সারারাত ধরে আল্লা-রসুলের কথা তো নয় বরং আমার নাম ধরেই অকথ্য-কুকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। কি আমার অপরাধ? গান গাইলে কি কেউ নর্দমার কীট হয়ে যায়? (তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাস পড়ছে দ্রুত, উত্তেজনায় কন্ঠস্বর চাগান দিয়ে উঠছে ক্রমে) এই মোল্লারা ইংরেজ আমলে ইংরেজী পড়তে বারণ করেছিলো, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের পক্ষে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিলো। আজো তারা তাদের দাপট সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছে।
...
ঈশ্বরকে আমি মনে করি একটা পেঁয়াজ, খোসা ছিলতে গেলে নিরন্তর তা ছিলা যায় এবং হঠাৎ একসময় দেখি তা শূন্য হয়ে গেছে। আমি ঈশ্বরকে এক বিশাল শক্তি হিসেবে গন্য করি, ব্যক্তি হিসেবে নয়। ব্যক্তি কখনো একই সময়ে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নরূপে অবস্থান করতে পারেনা, শক্তি তা পারে। বৈদ্যুতিক শক্তির কথা ধরুন, একই সাথে কোথাওবা ফ্যান ঘুরাচ্ছে, কোথাও বাতি জ্বলাচ্ছে, কোথাও কারখানা চালাচ্ছে…

তথ্যসূত্র। সন্ধান দিয়েছেন: একুশ তাপাদার।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন