আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০১১

আমি কি সত্যিই মুসলিম?


লিখেছেন মহসিনা খাতুন

ছোটবেলা থেকে বাড়ীতে আম্মি, আব্বুকে মাঝে মাঝেই বলতে শুনেছি— ইসলামে ৭৩ ফেরকা…৭২ ফেরকা দোযখ, ১ ফেরকা জান্নাত। মাঝে মাঝে প্রশ্ন করতে ইচ্ছা করতো আব্বুকে…আচ্ছা আব্বু! আমার ফেরকা কোথায় যাবে? জান্নাত না জাহান্নাম? আব্বুকে ভয়ে শুধাতে পারিনি। আম্মিকে একদিন শুধালাম, “আম্মি আমরা কোথায় যাবো? জান্নাত?” আম্মি বললো, “ভালো কাজ করলে জান্নাত আর খারাপ কাজ করলে দোজখ”! আম্মিকে আবার বললাম, আম্মি, “তুমি যে বল, ৭৩ ফেরকা, এক ফেরকা জান্নাত। আমরা কি জান্নাত-এর ফেরকা?” আম্মি বলল, “কে জানে, মা! আল্লাই জানে।” আমি সেদিন বুঝেছিলাম, এর উত্তর আম্মির জানা নেই।

নবি হজরত মহম্মদ (সাঃ) বলেছেন, ইহুদিদের ৭১ টি ও খ্রিষ্টানদের ৭২ টি সম্প্রদায় বর্তমান, কিন্তু ইসলামের ৭৩ টি ভাগ হবে (অর্থাৎ ইসলামে ৭৩ টি সম্প্রদায় হবে) যাদের মধ্যে ৭২ টির পরিণাম হবে জাহান্নাম…ও ১ টি সম্প্রদায়ের জান্নাত নসিব হবে। অনেক ইসলাম প্রচারক থেকে শুরু করে অনেকেই বলেন, যে বা যারা ইমান এর পথে চলবে তারাই জান্নাত পাবে। কিন্তু নবি তো তা বলেন নি। নবি কি বলতেন তা আমরা সব মুসলিমরাই খুব পরিষ্কার ভাবে জানি।

এই ৭২ টি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত তারা ইমানের পথে চলে কি না, জানি না…তবে আমি নিশ্চিত যে, এদের মধ্যে অনেক ভাল ব্যক্তি আছেন, যাঁরা মানুষের উপকার করেন। মানুষের দুঃখে কষ্ট পান। কিন্তু তবুও হাদিস অনুযায়ী তারা জাহান্নাম পাবেন। এটা কেমন বিচার?

আমরা যারা মুসলিম হয়ে জন্মেছি, তারা কেউই নিশ্চিত নই যে, কোন কোন সম্প্রদায় জাহান্নাম এর আগুনে পুড়ব, আর কোন একটি আল্লাহর পেয়ারে সম্প্রদায়ের জান্নাতের সুখ নাসিব হবে। তবু আমরা নিজেদের মুমিন বলে বড়াই করতে ছাড়ি না, আর অন্যধর্মীদেরও কাফের বলতে পিছুপা হই না। বস্তুতপক্ষে, আমাদের ইসলামের অধিকাংশ সম্প্রদায়ও আসলে কাফেরদের পরিণতি প্রাপ্ত হবে… একথা নবি (সাঃ) বললেও এখন আমাদের স্মরণ করানোর কেউ নেই। যাঁরা দিন-রাত আমাদের ইসলামের শিক্ষা দেন, তাঁরা কেন বলতে ভুলে যান এই কথাগুলো? কিংবা হয়ত জেনেশুনেই এড়িয়ে যান। কিন্তু যাঁরা প্রবাবিলিটির গণিত এতোটুকুও জানেন, তাঁরা জানবেন, আমাদের প্রত্যেকের সত্যিকারের মুসলিম হওয়ার চান্স ১/৭৩। (অর্থাৎ আপনার চোখ বেঁধে দেওয়া হল। একটি পাত্রে ৭৩ টি সমান মাপের বল রেখে দেওয়া হল এবং একটি বলের গায়ে দাগ দিয়ে সেটিকে সেই পাত্রে রেখে মিশিয়ে দেওয়া হল। আপনাকে বলা হল যে, চোখ বাঁধা অবস্থায় ওই দাগ দেওয়া বলটি একবার পাত্রে হাত দিয়ে তুলতে হবে। প্রথ বার পাত্রে হাত দিয়ে আপনার ঐ দাগ দেওয়া বলটি ওঠাতে পারার সম্ভবনা যতটা, আপনার তথা আপনার সম্প্রদায়ের সত্যিকার মুসলিম হওয়ার সম্ভবনাও ততটা।)

কোনো একটি সম্প্রদায় যদি জান্নাতে যাওয়া নিশ্চিত করে ফেলে, তাহলে বাকি সম্প্রদায়গুলোর জাহান্নামে যাওয়া নিশ্চিত। আর জাহান্নামে গেলে তো মেনে নিতেই হয় যে, ওই ৭২ টি সম্প্রদায়ের লোকদের আর কাফেরদের মধ্যে কোনো পার্থক্যই নেই। তাহলে আমাদের নিজেদেরকে কী করে আমরা মুসলিম বলে মনে করতে পারি, যেখানে আমাদের কাফের হওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশি?

আবার যে সৌদিদের পারলে আমরা মাথায় তুলে নাচি, সেই সৌদিরা তো এই বলে দীর্ঘদিন প্রচার চালাচ্ছে যে, একটি মাত্র মাজহাব-এর জন্মস্থান আরব। বাকি সব অ-আরবীয়। সেগুলির জাহান্নাম নাসিব হবে। আর নবির জন্মস্থান পবিত্র আরবে যে সম্প্রদায়ের উৎপত্তি, তারাই একমাত্র জান্নাতের অধিকারী হবে। অর্থাৎ যদি আমরা ইসলামকে সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম বলে মেনেও নিই, তাহলেও আমার ধর্মই প্রকৃত ইসলাম কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। সুতরাং আমি মুসলিম… আমার ধর্ম সবচেয়ে পবিত্র… এই ধরনের কথা আমার কাছে খুব জল-মেশান মনে হয়। মন প্রশ্ন করে… আমি কি সত্যিই মুসলিম?

কে জানে, হয়ত অবচেতন মনে লুকিয়ে থাকা জান্নাতের লোভের পরিণতি এই ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা ও গবেষণা। তবে সে যা-ই হোক না কেন, আজ জান্নাতের ওপর আমার বিন্দুমাত্র লোভ নেই। ইসলামেও আমার কোনো আকর্ষণ নেই। আমি সত্যিকারের মুসলিম কি না, সেটা আমার কাছে আজ গুরুত্ব হারিয়েছে। মুসলিম হওয়ার চাইতে সত্যিকারের মানুষ হওয়া সহজ এবং অধিক কাজের কাজ বলে মনে করি। আজ আমি মানুষের কথা বলি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন