আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১১

নিরাকার ঈশ্বর তার স্থিতি আমার সামনে তুলে ধরলেও তাকে আমার ঘৃণা করার কারণ


লিখেছেন মিরাজ মুনাব্বির

ধর্ম নিয়ে আমার খুব বেশি মাথাব্যথা নেই। আবার এও বলবোনা ধর্ম নেই কিংবা সৃষ্টিকর্তা আছেন। ছোটবেলায় তুমুল জানার আগ্রহ থেকে এর-ওর সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়তাম। অর্থাৎ নাস্তিকতায় পা দিয়ে প্রায় সবাই নিজের ভেতর প্রচণ্ড মাত্রায় স্বাধীনতা অনুভব করে। যার প্রভাব সে ফেলে আশেপাশের মানুষগুলোর ওপর। নিজের অবস্থান তাদের কাছে তো খারাপ হয়ই, তার সাথে অন্যদের কিছু জানাতেও পারে না। এভাবে একে একে অসংখ্য লোকজনের সাথে তর্কের ফলে (বিতর্ক লজিক মেনে হয়, তর্ক হয় নির্বুদ্ধিতা থেকে) একটা সময় বিতার্কিক হয়ে ওঠে যে কেউ। এই সময়টা পার করতে গিয়ে তারা যে সমস্যাগুলোতে পড়ে, তার জন্য কোন ধার্মিক তো কাউন্সিলিং করেই না, কোনো সিনিয়র নাস্তিকও করে না। যার ফলে সত্য অনুধাবন করতে পেরেও তারা ব্যক্ত করতে পারে না নিজেকে। ধার্মিকদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ সস্তা কথা বলে দেই। একজন আস্তিক খুব সহজেই যে নাস্তিক হয়ে যায়, তা ভাববেন না। নিজেকে দিয়েই বিচার করুন। চাইলেই নাস্তিক হতে পারবেন কি না!! খেয়াল করুন:

ধর্মের কারণেই আপনি বর্তমানে আস্তিক। সেই ধর্মের কারণেই কোন নাস্তিক অতীতে আপনার মতোই আস্তিক ছিল এবং আস্তিক থেকেই নাস্তিক হয়েছে। ধর্ম ডিঙ্গিয়ে আপনি যেখানে আস্তিক সেখানে একই সাথে ধর্ম এবং আপনার সেই আস্তিকতা ডিঙ্গিয়ে কিছু লোক নাস্তিক।

*** ধরুন, আপনি একটি পুতুল বানালেন (সৃষ্টিকর্তা যেভাবে মানুষ বানালেন) । আপনি সেই পুতুলের সৃষ্টিকর্তা (নাকি বলবেন, এই পুতুলও আপনার সৃষ্টিকর্তার তৈরী? বললে গোঁয়ার্তুমীই করা হবে) । পুতুলটির ভেতর প্রোগ্রামিং করলেন এবং একটি নির্দিষ্ট পরিমানের চলন ক্ষমতা দিলেন (ঈশ্বর যেভাবে ভাগ্য লিখে রেখেছেন আপনার) । সুইচ অন (জীবন দান) করে ছেড়ে দিলেন পুতুলটি। আপনার করা প্রোগ্রাম অনুযায়ী পুতুলটি চার্জ শেষ হওয়া পর্যন্ত কাজ করে গেল (যেভাবে লিখিত ভাগ্যের ওপর বিশ্বাস রেখে আপনি করেন) এবং চার্জ শেষে পুতুলটি অকেজো (মৃত্যু) হয়ে গেল। এবার আপনি পুতুলের কার্যবিচার করতে বসলেন (মৃত্যুর পর যেভাবে আপনার করা হবে) । ভাল কাজের ফলস্বরূপ তাকে হয় শো-কেসে সাজিয়ে রাখলেন অথবা যথার্থ আশানরূপ কাজ না করতে পারায় ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেললেন (... ... ...বেহেশত/দোজখ) । একটু ভেবে দেখুন তো, পুতুলের দোষ কিংবা গুণটা কোথায়?!! সমস্ত প্রোগ্রামিং যেখানে আপনার (আপনার দোষ বা গুণ কোথায় যেখানে প্রোগ্রামিং অন্য কারো)!! পুতুলের ক্ষেত্রে সাজা বা বাহবা পাওয়া উচিত আপনার, আর আপনার ক্ষেত্রে আপনার সৃষ্টিকর্তার।

*** আসুন, একটা ম্যাজিক তৈরী করি। ভবিষ্যদ্বাণী করার ম্যাজিক। আপনি আপনার আশে পাশের পরিস্থিতির যেমন আবহাওয়া, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ইত্যাদি ইত্যাদি যে কোনো কিছুর দিকে একটু ভাল করে লক্ষ্য করুন। ধরলাম, আবহাওয়ার কথা। যখন আপনি একটু খেয়াল করে আবহাওয়া নিয়ে কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করেন কোনো দিনের, তখন হয়তো তা ঘটে কিংবা ঘটে না। ধরা যাক, বৃষ্টির কথা। আপনি বললেন, আজ বৃষ্টি হবে, আজ হতেও পারে, নাও হতে পারে। যদি বলেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি হবে, হওয়ার সম্ভাবনা বেশি কারণ আপনি আবহাওয়া বুঝেই বলেছেন। যদি বলেন আগামী ১ মাসের ভেতর বৃষ্টি হবে, হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। যদি বলেন, ১২ মাসের মধ্যে বৃষ্টি হবে, বলার অপেক্ষা রাখে না - হবেই। এভাবে যতদিন সময় বাড়াবেন সম্ভাবনা ততোই বাড়বে। আর যদি সময় উল্লেখ না করে কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করেন, তবে যত লোক এই ভবিষ্যদ্বাণী মনে রাখবে, মৃত্যু পর্যন্তই মনে রাখবে। এর ভেতর যদি সম্ভাবনাময় তেমন কিছু ঘটে যায়, তবে বাহবা পাবেন। না ঘটলেও ক্ষতি নেই, প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম এই বাণী টেনে নিয়ে যেতেই থাকবে। এবং যদি হাজার বছর পরেও তার সামান্য কাছাকাছি কোনো কিছু ঘটে, আপনার নাম স্মরণ করা হবে। কোরআনে যেমনটা করেছেন সেই মহানবী। বলা হয়, এই কোরআনে সকল আবিষ্কারের কথা লেখা আছে। কোথায় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে লেখা আছে জানতে চাইলে দেখানো হয় ভাব অর্থ। ভাবের ক্ষেত্রে কৌশলী হলেই যে কোনো শব্দের ইচ্ছেমতন অর্থ দাঁড় করানো সম্ভব। মহানবী এবং তার সকল বন্ধুগণ বেশ বড়মাপের কবি এবং যথেষ্ট ভাল জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। কোরআন যদি কোন সৃষ্টি কর্তার লেখা হোত তবে নিশ্চই তিনি জানতেন একটা সময় সার্বজনীন ভাষা হবে ইংরেজী। কোরআন সেই ভাষায় নাজিল করতেন। ভাব-ধরা শব্দ দিয়ে কোরআন লিখতেন না। ওটা কবির কাজ।

*** একটি ঘটনা প্রচলিত আছে হাদিস নামে। এক বেদুঈন মরুভূমি দিয়ে যাচ্ছিলেন। পথেই একটি কুকুর পানির অভাবে প্রায় মৃত্যুর কাছাকাছি চলে গিয়েছিল। বেদুঈনের খুব মায়া হল। সে নিজের জুতো দিয়ে কুয়ো থেকে পানি তুলে কুকুরটিকে খাওয়ালেন এবং কুকুরটি প্রাণে বাঁচলো। সাথে সাথে আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করে দিলেন পুরষ্কার রূপে। এই ঘটনার আমি বেশ কিছু মজার পয়েন্ট খুঁজে পাই। ধার্মিক সর্বদা সৎ, ভাল, মানবিক (যদিও তাদের যাবতীয় আরাধনা পরকালের নারী আর ভোগের আশায়) । আর ধর্মে বেদুঈন মানেই হল পিশাচ, এদের মানবিকতা বলে কিছু নেই, এরা কখনো ভালো কাজ করে না। কারণ এতো নিকৃষ্ট একজন মানুষ (জানি না, ধর্মে তাদের মানুষ বলা হয় কি না) জীবনে একটি নিঃস্বার্থ ভাল কাজ করে বেহেশত পেয়ে গেল। অথচ প্রতিটি ধার্মিক ধর্ম পালন করে যাচ্ছে জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি তাদের নিশ্চয়তা নেই বেহেশতের। বেদুঈন জীবনে একটি ভাল কাজ করেই বেহেশত পেল, অথচ ধার্মিক পুরো জীবন আনুগত্য করেও নিশ্চয়তা পেল না। ভক্তের চেয়ে বেদুঈনই শ্রেয় নয় কি? ভেবে দেখুন, কেমন সৃষ্টিকর্তার আরাধনা করছেন। যিনি পরিমাপ বোঝেন নিজের মর্জিতে অথচ দাবী করেন তিনি ন্যায় বিচারক (!!!)।

*** আকাশ কিংবা আসমান বলতে আমরা বুঝি ওজন স্তরে সূর্যের প্রতিফলনের কারণে তৈরী হওয়া নীলচে রং। মূলত আসমান বলে কিছুই নেই। কোরআনে সাত আসমানের কথা বলা হয়েছে যার ব্যাখ্যা মহানবী নিজেই দিয়ে গেছেন। অথচ পৃথিবীর বাইরে মহানবীর ব্যাখ্যা অনুযায়ী ওজনের আর কোনো স্তর নেই বা এমন কোনো নক্ষত্র নেই যা সূর্যের মত করে এই গ্যালাক্সীর বাইরের কোনো গ্যাসের স্তরকে নীলাভ করছে। ছোটবেলায় দাদা, নানা বা বৃদ্ধদের কাছে সাত আসমানের ব্যাখ্যা শুনে যা বুঝেছি, তা হল - পৃথিবীর বাইরেই এমন নীলাভ আসমানের সাতটি স্তর এবং সাত আসমানের বর্তমান ব্যাখ্যা সেই ২য় পয়েন্টের ভাবার্থের মতোই গজিয়েছে।

*** লৌকিক এবং অলৌকিক শব্দের অর্থ আমরা জানি। লৌকিক জগতে অলৌকিকতার স্থান নেই। কারণ জগতটা লৌকিক। পরাবাস্তবিকতা কল্পনাতেই সম্ভব, ত্রিমাত্রিক কোথাও না।

*** বেহেশতে সকল অনাচারেরই লোভ দেখানো হয়েছে। শরাব, নারী এবং গেলমান (বাচ্চা ছেলে) । কারন তৎকালীন সমাজে এসবের ছড়াছড়ির কারণে অরাজকতার সৃষ্টি হয়েছিলো।

*** গনিমতের মাল (ইসলামের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ কলঙ্ক) । যুদ্ধে বিজয়ী হলে বিপরীত পক্ষের সকল সম্পত্তি নিজের হয়ে যায়। নারীদের সম্পত্তি হিসেবেই বিবেচনা করা হতো। এদের দেহ ভোগ করা হালাল ছিল। প্রচণ্ড উৎসাহের সাথেই তা করা হতো। সৃষ্টিকর্তা কেন অন্য নারীর দেহ নিজের ভক্তদের বিলিয়ে দেবেন? নাকি এ ছিল মহানবীর চাল?

বিশেষ কথা: যদি কখনো কেউ আমাকে সৃষ্টিকর্তা আছেন প্রমাণ করে দেয় অর্থাৎ যদি আমি ধরে দেখতে পারি, তবেই তাকে বিশ্বাস করবো তিনি আছেন, তবুও ধর্ম মানবো না। বরং সৃষ্টিকর্তাকে ধরতে পারলে জুতোপেটা করবো তাকে তার এমন বিদঘুটে সামঞ্জস্যহীন ধর্ম প্রণয়ন করার জন্য। প্রতিটি ধর্ম স্থান-কাল-পাত্র ভেদে সৃষ্টিকর্তা তৈরী করে। এবং ধর্মগুলোয় সেইসব স্থানের ছোঁয়া পাওয়া যায় পরিপূর্ণরূপে।

অবশেষে সৃষ্টিকর্তা কিংবা ধর্ম বলে কোন উচ্ছিষ্ট থাকে না। মূলত সবই সংস্কৃতি। আমি অন্তত ওভাবেই মানি। ততোক্ষণ পর্যন্ত আমার কোন আপত্তি নেই যতক্ষণ আমার উপর আঘাত আসবে না। আমার জীবনযাপন নিয়ে নাক গলাবে না। আমি ঐতিহ্যকে গ্রহণ করি, ঐতিহ্যের গোঁড়ামীকে নয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন