আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১১

আসুন, আমরা সব ধর্মকে সমানভাবে সম্মান করি


লিখেছেন জুপিটার জয়প্রকাশ 

এখনও পর্যন্ত মানুষের জীবনে যে বস্তুটি সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করে রেখেছে, সেটি হল ধর্ম। ধর্মের আবার উৎস হিসাবে একেবারে ঈশ্বরকে টানা হয়। আজকাল বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ভূত-প্রেত-রাক্ষস ইত্যাদিদের রমরমা প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে। একটা সময় ছিল, যখন অতি বড় ধার্মিক থেকে মহাপাপী সকলেই ভূত, রাক্ষস ইত্যাদিতে বিশ্বাস করত। এখন আর সে দিন নেই কিন্তু ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস সেভাবে কমে যায়নি বরং ঈশ্বরের ধারণা যে বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে যায় না, সেটাই প্রমাণের জন্য অনেকে চেষ্টা করছেন। সেই সঙ্গে ধর্মীয় কাহিনীর মধ্য থেকে বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা বের করারও চেষ্টা চলছে। সেই সঙ্গে নিয়মিত প্রচার করা হচ্ছে সব ধর্মের প্রতি সম্মান দেখানোর আবেদন। যা থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় যে ধর্মের প্রভাব মানুষের জীবন থেকে খুব একটা কমে যায়নি। অন্তত ভুত-প্রেত ইত্যাদিতে বিশ্বাস যে হারে কমেছে, সেই হারে ঈশ্বর এবং তাঁর আদেশের উপর বিশ্বাস কমেনি।

কিন্তু সব ধর্মের প্রতি সম্মান দেখানো সম্ভব কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। কোনো মানুষ যদি ঈশ্বর এবং ধর্মকে জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ বলে বিশ্বাস করে, তাহলে সে নেহাত চিন্তাশক্তিহীন না হলে কোনোদিনই তা পারবে না। ধর্মগুলোর মূল ভিত্তিই যেহেতু পরলোকে গিয়ে বিচারের সম্মুখীন হওয়া, তাই সেই বিচারের নিয়মকানুন বিভিন্ন দলের জন্য আলাদা হলে কোনো জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের পক্ষে সবগুলিকে ঠিক বলে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। আর প্রত্যেক ধর্মেই অসত্যকে সম্মান দেখানোর মানা আছে। উদাহরণ হিসাবে হিন্দুদের ঈশ্বর বিচার করেন মানুষের মারা যাওয়ার পরেই। খ্রিষ্টান ও মুসলমানদের ঈশ্বর বিচার করবেন সমস্ত মানুষ মারা যাবার পর। বৌদ্ধধর্মে মানুষের কর্মের বিচারে ঈশ্বরের ভূমিকাই নেই। এমন অবস্থায় সবগুলি তত্বকে একসাথে সত্য বলে মেনে নেওয়া নেহাত অসম্ভব। আবার যা সত্য নয়, তাকে সম্মান দেখানোও ধর্মীয় তত্ত্বমতে অসম্ভব। এই অবস্থায় সব ধর্মের প্রতি সমান সম্মান দেখাতে গেলে সবকটিই মিথ্যা বলে সমান অসম্মান দেখাতে হয়। তাই সব ধর্মের প্রতি সম্মান দেখানোর কথা বলা একই সাথে ধর্মবিরোধী এবং বাস্তবতাবিরোধী। একমাত্র রাজনীতির খেলায় সকলের ভোট আদায় করার কাজে এই আজব কথা কাজে লাগে। এবং বাস্তব সত্য হল যে, এই সবার বিশ্বাসকে সম্মান করার আবেদন করা মানুষগুলোকে দেখলেই বুঝতে পারা যায় যে, সত্যিটা কি সেটা আবিষ্কার না হলেও তারা সুখেই থাকবে। বর্তমান অবস্থায় সুখে আছে বলেই তারা চায় না যে সত্যটা বের হয়ে আসুক। তারা কেবল সেই অবস্থাটাকে বজায় রাখতে চায়, যে অবস্থায় তারা আরামে থাকতে পারবে। কিন্তু যেখানে অবস্থা বদলালেই তাদের সুবিধা, সেখানে তারা লাফাতে ওস্তাদ।

এ তো গেল ধর্মের তাত্ত্বিক দিক। এবারে দেখা যাক ধর্ম মানুষের বাস্তব জীবনে শৃঙ্খলা রাখতে প্রয়োগ করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে কি না। যে আমলে ধর্মগুলি জন্মায়, সেই সময়ে মানুষের সামাজিক প্রভু ছিলেন রাজা। যিনি প্রধানতঃ অস্ত্রের জোরে শাসন করতেন এবং তিনি আইন-কানুন বানানোর সময় সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রজাদের মতামত নেবার প্রয়োজন মনে করতেন না। তিনি আইন করতেন, প্রজারা তা মানতে বাধ্য থাকত। নেহাত মেনে নেওয়া সম্ভব না হলে বিদ্রোহ করত। এখনকার আধুনিক দুনিয়ায় বেশির ভাগ দেশেই প্রজাদের মতামত অনুসারে শাসক নির্বাচন হয়। প্রজাদের মঙ্গলের জন্য আইন তৈরী এবং দরকার হলে বাতিল করার অধিকার পরোক্ষভাবে প্রজারাই ভোগ করে। এবং সামাজিক উন্নতির সাথে এই অধিকার যে আরো বাড়া উচিত এতে কারোই অন্যমত নেই। অথচ ধর্মীয় নিয়ম, যা কিনা মানুষের মঙ্গলের জন্য, তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করার অধিকার মানুষের আজও নেই। ধর্মের নিয়ম দেখে মনে হয়, মানুষের যে নিজের সমাজের ভালমন্দ বোঝার ক্ষমতা আছে, এটা ঈশ্বর জানতেনই না। জগতের সেরা জীবকে পোল্ট্রি মুরগির মত চিরকাল আগলে রাখাই বোধহয় ঈশ্বরের কাজ। ঠিক যেভাবে হিটলার জগতের কারোকে কিছু না জানিয়েই জগতের ত্রাণ করার দায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। ‘মানুষের মঙ্গলের জন্য নিয়ম বানানো হবে, আর তাতে মানুষের বিন্দুমাত্র ভূমিকা থাকবে না’, নিজের সেরা সৃষ্টির প্রতি এতটা ভক্তি কেবল ঈশ্বরের পক্ষেই করা সম্ভব। বর্তমানে এই ব্যবস্থা সারা পৃথিবীতে লোপ পেতে বসেছে।

এবারে দেখা যাক মানুষের চরিত্রের ওপর ধর্মের প্রভাব কেমন। প্রত্যেক ধর্মেই দাবী করা হয় যে, সেটি পরম সত্য। এবং একই সাথে বলা হয় যে, এর পিছনে কোনো যুক্তিসঙ্গত প্রমাণ নেই, বিনা প্রমানেই বিশ্বাস না করলে সে নিকৃষ্ট মানুষ। বর্তমান জগতে শিক্ষার পদ্ধতি হিসাবে সর্বত্রই বিজ্ঞানের প্রয়োগ করা হয়। ধর্ম নিজেকে বিজ্ঞানের চাইতেও উন্নত কিছু বলে দাবী করে। এখন বিজ্ঞান আর ধর্মের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হল যে, বিজ্ঞান কোনো সময়েই যাচাই করায় বাধা দেয় না। যেসব তথ্য হাজার বার পরিক্ষা করে দেখা হয়ে গেছে, সেগুলিও যদি কেউ আবার পরীক্ষা করে দেখতে চায়, তাতে বিজ্ঞান চিরকাল উৎসাহই দেয়। যে কোনো স্কুল স্তরের ল্যাবেই ছাত্রেরা এসব পরিক্ষা করে দেখে থাকে। এবং এই শিক্ষা পদ্ধতি সারা পৃথিবীতেই ব্যবহার হয়। 

অন্যদিকে যে তত্ব কোনোকালে প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত নয়, ধর্ম তাকে চরম সত্য বলে প্রচার করে। যাচাই করে দেখার দাবী করলে ধর্ম একেবারে যায়-যায় হয়। যদিও বাস্তব জগতে প্রমাণহীন কোনো বিষয়কে চরম সত্য বলে দাবী করা এবং তাতে সন্দেহ প্রকাশ করলে মারতে যাওয়াকে চরম অসভ্যতা (বা পাগলামি) বলা হয়, তবুও সেই পথেই নাকি মানুষের চরিত্র উন্নত হবে বলে ধর্মের বইয়ে লেখা আছে। যদিও বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক তফাত আছে, তবুও প্রতিটি ধর্মই বিনা প্রমাণেই নিজেরটি ঠিক বলে দাবী করে অথচ কোনটি ঠিক তা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে চটে লাল হয়। সত্যকে সম্মান করার এই নমুনা দেখানোর পরেও কীভাবে যে তারা চরিত্রবান মানুষ তৈরীর দাবী করে, তা বোঝার বুদ্ধি একমাত্র ঈশ্বরেরই আছে বলে মেনে নিতে হবে। মেনে না নিলে মানুষ হবার পরিক্ষায় মার্কস কম দেবেন তিনি। কাজেই ইয়েস স্যার না বলে উপায় কী? আসুন, সব স্যারেদের সালাম দিয়ে সমান ভাবে সম্মান দিন। কারোকেই চটাবেন না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন