লিখেছেন গজব-এ-এলাহী
আমাদের এখানে আজ বিশাল ওয়াজ মাহফিল। সারাদিন মাইক বাজিয়ে কী অবস্থা! রাত্রেও অত্যাচার কমছে না। আমি শুয়ে ছিলাম। এমন সময় হুজুর ইহুদিদের কথা বলতে শুরু করলেন। একটা বিষয় খেয়াল করলাম, ইহুদিদের কথা বলা শুরু করলে হুজুররা যেমন উত্তেজিত হয়, তেমন উত্তেজিত হুরদের নিয়ে বলার সময়ও হয় না। তো তিনি শুরু করলেন, ইহুদিরা কেন নাপাক, কেন তাদের উপর আল্লার অভিশাপ, তারা কীভাবে নবীকে কষ্ট দিয়েছে, তাদের কোনোদিনই মুক্তি ঘটবে না, ইহুদিরা ইঁদুর-শূকরে পরিণত হয়েছিল ইত্যাদি।
আমার মনে পড়ল, একবার এক ইহুদি মেয়ের সাথে আমার অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির নাম ছিল নুসি। মেয়েটি তার সব কিছু এমনকি একান্ত গোপন সুখ-দুঃখের কথাও আমার সাথে শেয়ার করত। আমি একবার বেশ কিছু পুরনো বন্ধুদের সাথে পিকনিকে গিয়েছিলাম। গল্পচ্ছলে সেখানে সকলকে আমি মেয়েটির কথা বললাম, দেখি, সবাই অবাক হয়ে আমার দিকে চেয়ে আছে। একজন বলেই বসল, ইহুদি মেয়ের সাথে তোর সম্পর্ক? আমি বললাম, হ্যাঁ, আর ইহুদিরা কিন্তু আমাদের মতই মানুষ। পরে শুনেছি, অনেকের ইমানুনুভূতিতে নাকি মারাত্মক আঘাত লেগেছিল।
কী যেন বলছিলাম, ওহ, ওয়াজ মাহফিলের কথা। এর জন্য আমার আজ কান তালা, ঘুম হারাম। হুজুর যখন ইহুদিদের নিয়ে ওয়াজ ফরমাচ্ছেন, তারা কত ভয়ংকর দোজখে যাবে, এক ইহুদি মারলে কত সওয়াব, কেন ইহুদিদের সাথে জিহাদ অব্যাহত রাখা আমাদের ইমানী দায়িত্ব, কেন তারা কোনোদিনই স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না, কোরানে কতবার তাদের উপর লানত দেয়া হয়েছে ইত্যাদি, তখন একটি ঘটনার কথা মনে পড়ল। শুনেছি বন্ধু লিটনের কাছ থেকে। এটি নিছক একটি অশ্লীল কৌতুক বলে মনে করতাম, কিন্তু এখন মনে করি এটা, বোধহয়, বাস্তবেই ঘটেছিল। যাই হোক, ঘটনাটি বলি:
- রসুলের সুন্নত অনুযায়ী বিবির সাথে সহবত করলে এক ইহুদি কতলের সমান সওয়াব পাওয়া যাবে।
ঐ ওয়াজ মাহফিলে ছিলেন বদমেজাজী-ঈমানদার-ধ্বজভঙ্গ সমস্যাত্রয়ের অধিকারী এক ব্যক্তি। তিনি ঐদিন এসে বিবিকে বিষয়টি বললেন। রাত্রে তারা যথারীতি ইছলামি শরিয়ত মোতাবেক সহবত শুরু করতেই যথারীতি লোকটার আশু বিশ্বাসপাত... না, মানে ইয়েপাত... বুঝতেই পারছেন।
স্বামীকে আবার ফিরিয়ে আনতে স্ত্রী বললেন:
- কী ব্যাপার, আর ইহুদি মারবেন না?
স্বামী আবার চেষ্টা করতে লাগলেন। স্বামী ব্যর্থ হলে স্ত্রী আবার বললেন:
- প্লিজ, আরেকটা ইহুদি মারেন।
এভাবে বার বার স্ত্রী বলেন আর স্বামী ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান। শেষে হলো কী, যাদের ঈমানুনুভূতি তীব্র, তাদের কিন্তু মেজাজ সাংঘাতিক হয়, নুনু থেকে শক্তি ঈমানে ট্রান্সফার হয়ে মাথা নষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সঙ্গত কারণে বার বার ব্যর্থ হয়ে লোকটার মাথা উত্তপ্ত হয়ে গেল, একটা মশালে আগুন ধরিয়ে নিয়ে এলো সে।
স্ত্রী ভয় পেয়ে জিজ্ঞেস করল:
- আরে এসব কী করছেন, আর ইহুদি মারবেন না?
লোকটি বললো:
- হ্যা, তাই তো করব, একদম ইহুদি ক্যাম্পে আগুন জ্বালিয়ে দেব!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন