আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

সোমবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১২

সক্রিয় মসজিদ-মাদ্রাসাগুলো যখন নীরব, নিশ্চুপ


চিন্তাজাগানিয়া অসাধারণ এই নোটটি লিখেছেন ফেসবুক মুমিন।   

মসজিদ-মাদ্রাসা ইসলাম ধর্মচর্চার প্রধান কেন্দ্র। এখানেই তো মুমিন ভাইয়েরা শান্তির ধর্ম ইসলাম নিয়ে আলোচনা করে আর নৈতিক জ্ঞান লাভ করে।

মসজিদ-মাদ্রাসাগুলি আমাদের সমাজকে ইসলামময় রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। যেমন: 

# এয়ারপোর্টের সামনে বাউল ভাস্কর্য > ইসলাম নষ্ট করার ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র! > মিছিল, আন্দোলন, ভাংচুর।

# মুহম্মদের চিত্র অঙ্কন > ইসলামকে অপমান > মিছিল, আন্দোলন, হাইকমিশন ঘেরাও।

# নারীদের সমান সম্পত্তি দান আইনের প্রস্তাব > ইসলামী আইনের পরিপন্থী > মিছিল, আন্দোলন, ভাংচুর।

# আমেরিকার ইরাক-আফগানিস্তান আক্রমন > ইসলামের উপর আঘাত > ওয়াজ মাহফিলে উঠতে-বসতে আমেরিকাকে অভিশাপ।

# ফিলিস্তিনিদের উপর ইহুদীদের নির্যাতন > ইসলামের উপর আঘাত > ওয়াজ মাহফিলে উঠতে বসতে ইহুদীদের অভিশাপ।

# সাদ্দাম-লাদেন-গাদ্দাফীর মৃত্যু > মুসলিম ভাইদের হত্যা > মসজিদ মাদ্রাসায় তীব্র ক্ষোভ, খ্রিস্টান-ইহুদীদের উপর লা'নত বর্ষিত হোক।

................................................

# একাত্তরে বাংলাদেশের ৩০ লাখ শহিদ, লক্ষ লক্ষ মা বোনের উপর নির্যাতনের জন্য দায়ী মুসলিম দেশ পাকিস্তান ও এদেশীয় রাজাকার-আলবদর > মসজিদ-মাদ্রাসাগুলির আশ্চর্যজনক নীরবতা। কখনো কোনো মসজিদ-মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিলে একাত্তর নিয়ে কোনোরকম আলোচনা শোনা যায় না।

# যুদ্ধাপরাধীদের বিচার > নিশ্চুপ।

এর পরবর্তী অংশ যোগ করা হয়েছে আমরা সত্য কথা বলি তাই আমরা "বেয়াদপ" পেইজে।

কেন তারা নিশ্চুপ ? তাদের কী সেভাবেই গর্জে ওঠার কথা ছিল না যেভাবে তারা ইসলামের উপর আসা সকল “বিরোধীতার” বৈপ্লবিক সাড়া দিয়েছিলেন ? তাদের মৌনতা কি সেদিকেই ইঙ্গিত করে না যে তারা এই ব্যাপারটাকে সম্মতি দিয়ে যাচ্ছেন বা প্রয়োজন অনুভব করছেন না সেভাবে প্রতিবাদ করার ? 

১৯৭১ সালের প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও এখন মানুষের মধ্যে দেশের জন্যে সেই আবেগটা নেই । এতোটা সূক্ষ্মভাবে বিচার না করলেও বোঝা যায়, নিজের দেশের পরিচয় বাদে আমরা নিজ নিজ ধর্মীয় পরিচয়বোধেই বেশি আস্থা অনুভব করি । সে-জন্যেই হয়তো সৌদি আরবের প্রতি কিংবা পাকিস্তানের প্রতি আমাদের এত দরদ । জামাতের সবচেয়ে বড় কথাটা হচ্ছে, তারা ইসলামি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করে করে এবং সেই জাতীয়তাবাদের দোহাই দিয়েই কিন্তু তারা পাকিস্তানকে টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিল এবং করেছিল অজস্র হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ ।

আবার তারা আমাদের দেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে । তাদের হাতিয়ার আবার সেই ধর্ম । ধর্মের রাজনীতি করে তারা মানুষকে অন্ধ করে দিচ্ছে । যে একাত্তর আমাদের জাতি-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে পাশাপাশি দাঁড়ানোর শিক্ষা দিয়েছিলও, সেই চেতনা থেকে আমরা ক্রমাগত দূরে সরে যাচ্ছি এবং লক্ষ্য করলে দেখবো তার পেছনে সেই পাকিস্তানপন্থীদের মতো ইসলামি জাতীয়তাবাদই কাজ করছে । কেউ যদি এটা বলে পার পেয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, ৭১ এর রাজাকাররা খাঁটি মুসলিম না, কারণ মুসলমানরা এরকম নৃশংস কাজ করতে পারে না, তাহলে আমি বলব কিন্তু মুসলিমদের ইসলামি শাসনব্যবস্থা কায়েম করার জন্যে প্রয়োজন জিহাদের । সেই দোহাই দিয়ে ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে সিদ্ধ করা যায়, যা আমাদের মধ্যে অদৃশ্য কিন্তু প্রকট একটা বিভাজনরেখা সৃষ্টি করে দেয় । 

সেই বিভাজনরেখার সাথে কিন্তু মুসলিমদের এই মৌনতার একটা সূক্ষ্ম সংযোগ আছেই এবং জামাত-শিবিরেরা সেটাকেই ঢাল হিশেবে ব্যবহার করছে । ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সেটা বৈধতা পেলেও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সেটা কখনোই গ্রহণযোগ্য না । সবক্ষেত্রে সরাসরি হয়তো কোন সম্পর্ক নেই মোল্লাদের ধর্মীয় উন্মাদনা আর এই নিশ্চুপ থাকার, কিন্তু একটা সামগ্রিক সম্পর্ক যে আছে এই ব্যাপারগুলোতে এবং তারা যে একে অপরের পরিপূরক- সে কথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই । 

শেষ করছি রুদ্র’র একটা কবিতা দিয়েঃ

ইহকাল ভুলে যারা পরকালে মত্ত হয়ে আছে
চলে যাক সব পরপারে বেহেস্তে তাদের
আমরা থাকবো এই পৃথিবীর মাটি জলে নীলে,
দ্বন্দ্বময় সভ্যতার গতিশীল স্রোতের ধারায়
আগামীর স্বপ্নে মুগ্ধ বুনে যাবো সমতার বীজ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন