লিখেছেন জুপিটার জয়প্রকাশ
২০১৪ সালের অপেক্ষায় মিনিট সেকেন্ড গুণে চলেছে দেশের প্রতিটি ছাগু। তারা জেগে থাকলে ক্যালেন্ডার কিম্বা ঘড়ি দেখে, আর ঘুমের মধ্যে দেখে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন। ছাগস্তান নামক এক শান্তিময় দেশ, যেখানে চারিদিকে যতদুর চোখ যায় কেবল কাঁঠালগাছ আর কাঁঠালগাছ। ভোরের শিশিরে ভেজা কচি কচি কাঁঠালপাতা পশ্চিমা পবিত্র বাতাস লেগে দুলে দুলে উঠছে। সেই পাতায় কোনো পোকামাকড় নেই। নেই কোনো বিদেশী সারের দুর্গন্ধ। ছাগুদের লাদি থেকে প্রস্তুত সার দিয়ে বড় করে তোলা ১০০% বিশুদ্ধ ও সতেজ কাঁঠালগাছের কচি পাতা থেকে বানানো পুষ্টিকর সুগন্ধ বাতাসে ছড়ানো।
ভোরের বাতাসে শুনতে পাওয়া যায় ছাগস্তানের জাতীয় সঙ্গীত। Pak… so mean… sad… bad… কিছু শোনা যায়, কিছু হাওয়ায় যায় হারিয়ে। সে সঙ্গীতের কিছুটা মাথায় ঢোকে, কিছুটা হাঁটুতে থাকা মগজের মধ্যে জমা হয়। ভাবতে গিয়ে খিদে পেয়ে যায়। কাঁঠালপাতার জুস আসতে দেরি হলে শিং সুরসুর করে। মাথা নাড়া দিতে গিয়ে স্বপন ভেঙে যায়। মনে পড়ে সেই অনাগত উজ্জ্বল দিনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া এখনো বাকি। সবচেয়ে বড় কথা সেই পরম সুন্দর দেশের জন্য বিধান রচনা করাই এখনো শুরু হয় নি।
আসলে ছাগুদের দ্বারা গুতাগুতি আর ইয়ে করা ছাড়া কিছুই হয় না। তাই তাদের স্বপ্নের দেশ ‘ছাগস্থান’ এর জন্য বিধান বানানোর কাজটাও আমাকেই করতে হচ্ছে। খুব ভাল করেই জানি যে, এই লেখা তাদের পছন্দ হলেও তারা গুঁতা দেবে, কারণ তাদের পছন্দ করাতে গেলে ‘গুঁতা দেওয়া ছাগুদের জন্মগত অধিকার’ এই কথাটা লিখতে হবে। আবার এটা না লিখলেও তারা রাগ করে গুঁতা দেবে। তবুও না লিখে পারছি না। কোনো নিয়মকানুন না থাকার চেয়ে যা হোক একটা থাকা ভালো। আসুন, তবে একটা খসড়া প্রস্তাব করি।
ছাগস্তানের পরপূর্ণ বিধান
শব্দের অর্থসমূহ
১) পরপূর্ণ – অর্থাৎ এর সবটাই পরের কাছে ধার করা। নিজের বলতে কিছুই নাই।
২) পর – পর মানে পর নয়। একান্ত আপন। ছাগুদের যারা জাতীয় পশুর সম্মান দেয়, তারা কি আর পর হতে পারে? শুধুমাত্র ছাগুদের থেকে আলাদা করে বোঝানোর জন্য তাদের পর ডাকা হবে। কিন্তু সেজন্য তাদের সাথে পরের মতন ব্যবহার করা চলবে না।
সূচনা-
দেশের সকল ছাগুই জন্মগতভাবে সমান ও অন্য সকল জীবের প্রভু।
নোট: তবে পরের সুবিধার্থে ছাগুদের বিভিন্ন ভাগ করা যেতে পারে।
ছাগ সরকার প্রতিটি ছাগুর গুঁতা দিবার, কাঁঠালপাতা পাইবার, ম্যাৎকার করার ও লাদি ছাড়িবার মৌলিক অধিকার রক্ষায় বাধ্য। কখনো কোন অবস্থাতেই কোনো আইনের দ্বারা এইসব অধিকারে খুরক্ষেপ করা যাইবে না।
কোনো ছাগুকে ছাগভাষা ছাড়া অন্য ভাষায় কথা বলিতে বাধ্য করা যাইবে না। তবে অন্য প্রাণীদের ছাগভাষা শিক্ষা অতি প্রয়োজন কারণ ছাগভাষা ছাগস্থানের জাতীয় ভাষা। এটি না শিখিলে সরকারী চাকরি পাওয়া বা সরকারি ঘোষণা বুঝিতে অসুবিধা হইবে।
দেশে কাঁঠালপাতার পরিমাণে ঘাটতি দেখা দিলে সরকার যেকোনো জমিতে কাঁঠালপাতা চাষ করার নির্দেশ দিতে পারে। জমির মালিক সেই নির্দেশ না মানিলে সরকার সেই জমি দখল করিয়া কাঁঠালপাতা চাষ করার অধিকার রাখে।
দেশে বাকস্বাধীনতা থাকিলেও ছাগানুভূতি আহত হয় এমন কিছু বলা যাইবে না। ছাগানুভূতি আহত হইয়াছে কি না, সে বিষয়ে ছাগুর সাক্ষ্যই চুড়ান্ত।
ছাগুর গুঁতা খাইয়া কেহ আহত হইলে আদালতে বিচার দাবী করিতে পারে। তবে মিথ্যা অভিযোগ প্রমাণিত হইলে ১০০ গুঁতা দেওয়া হইবে। আহত হওয়ার গুতাটি কত জোরে মারা হইয়াছিল সে ব্যাপারে গুঁতা দেওয়া ছাগুর সাক্ষ্যই চুড়ান্ত।
-------------
ধুররররর, আর তো পারি না। একা একা আর কত হয়? বাকিটা আপনারা সামলান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন