লিখেছেন অজাতশত্রু
স্বর্গের উদ্যানে কৃষ্ণ বিমর্ষ হয়ে বাঁশি বাজাচ্ছে যাতে ইন্দ্রের অপ্সরীরা আর মহা উন্মাদের কুমারী হুরেরা তার কাছেই ঘুর ঘুর করে। এমন সময় এক (ভদ্র না অভদ্র কিছু একটা হবে) তার পাশে এসে বসে। তখন কৃষ্ণ বলে ওঠে, “আমি কৃষ্ণ, আপনি?” মহা উন্মাদ বলে, “আমি মোহাম্মদ।”
কৃষ্ণ বলে ওঠে, "পৃথিবীতে কী করতেন?"
মহা উন্মাদ বলে, "আমি শেষ নবী।"
কৃষ্ণ: মানে?
মহা উন্মাদ নতুন ধর্ম তৈরি করে তার শেষ নবী হিসেবে ঘোষণা করে গেছি নিজেকে। আর আপনি কী করতেন?
কৃষ্ণ: আমি তো অবতার। মানে আমি সৃষ্টিকর্তার মানুষরূপ হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করেছিলাম।
মহা উন্মাদ: খাইছে!!! আমার মতোই।
কৃষ্ণ: হুঁ। একই রকম মানুষ আমরা মনে হচ্ছে, জমবে ভালো।
মহা উন্মাদ: চলেন, সামনের দিকে হাঁটি আর কথা বলি। কোরান নামের একটা ধর্ম বই লেখে ফেলেছিলাম আমি। সবাইকে বলেছিলাম এটা ঐশ্বরিক কিতাব। জিব্রাইল নামক আল্লাহর দূত আমাকে এই বইয়ের কথাগুলো বলে যেত। ব্যস, বিশ্বাস করে নিল সবাই।
কৃষ্ণ: আমারও ছিল একটা। গীতা নামের। আপনার সঙ্গী কে ছিল? আমার কাছে আসতো নারদ নামের একজন। তবে সে বইয়ের সাথে যুক্ত না।
মহা উন্মাদ: আবু বক্কর। বক্কর না তো, একটা বকরি। ক্ষমতার লোভ দেখিয়েছিলাম। এরপর যা বোঝাতাম, তাই বুঝতো। ওর ছয় বছরের মেয়েকেও বিয়ে করেছিলাম। একেবারে অনুগত থাকত। সে আমার চাঁদ দুই টুকরা করার কাহিনীকে অনেক এগিয়ে দিয়েছিলো।
কৃষ্ণ: আমার ছিল পাণ্ডবেরা। মূলত অর্জুন নামের পাঁঠা। যার মাথায় কিচ্ছু ছিল। আমার কথা ছাড়া এক চুলও নড়ত না। আমার বোনের সাথে বিয়ে দিয়ে হাত করে ফেলেছিলাম। সে-ই সবাইকে বলল যে, সে কুরুক্ষেত্রে আমার বিশ্বরূপ দেখেছে। মানে ঈশ্বরের রূপ দেখেছে।
মহা উন্মাদ: হুম। আপনার বইয়ে কী লেখা ছিল?
কৃষ্ণ: সব আমার মানে ঈশ্বরের বাণী। যারা আমার ধর্মের পথে চলবে না, সবাই অধার্মিক। হত্যা কর সবাইকে। আপনার?
মহা উন্মাদ: সব সৃষ্টিকর্তার বানী। কেউ আমার ধর্ম না মানলে মেরে ফেলো।
কৃষ্ণ: আরে, একই তো!!!
মহা উন্মাদ: হুম। আপনার সবচেয়ে ভালো লাগতো কী?
কৃষ্ণ: যুদ্ধ আর নারী। কত যুদ্ধ করাইলাম!!! আপনার?
মহা উন্মাদ: একই অবস্থা!!! কত মানুষ মারলাম আর নারীদের সাথে মজা করলাম। সব নবী হবার লাভ।
কৃষ্ণ: প্রেম-টেম করতেন নাকি?
মহা উন্মাদ: ওইরকম চেহারা ছিল না। তাই আমার ছবি আঁকা হারাম করে গিয়েছিলাম। আপনি?
কৃষ্ণ: অভাব ছিল নাকি!
মহা উন্মাদ: কী বলেন? আপনার নাম জানতে পারলে আমি আপনার রেকর্ড ভেঙে ফেলতাম। বিয়ে কয়টা করেছিলেন?
কৃষ্ণ: ওইটা একটাই থাক।
মহা উন্মাদ: আমি এগারোটা। দাসী, যুদ্ধবন্দিনীর অভাব ছিল না। আমার উম্মতের মানে অনুসারীদের চারটা পর্যন্ত বিয়ে অনুমোদিত। এরা আমার উপর খুশি।
কৃষ্ণ: আপনার সম্পর্কে জানলে আমি আপনার রেকর্ড ভেঙে দিতাম।
এবার ঈশ্বর নিজেই ক্ষেপে গিয়ে বললেন, "চুপ!!! যা করে এসেছিস, এবার পৃথিবীতে গিয়ে দেখ, মাইর মাটিতে পড়বে না। এখানে থাকতে দিলাম এটাই অনেক। এখানে বেশি ঝামেলা করলে সোজা পৃথিবীতে পাঠাবো। আমার নাম ভেঙে অনেক মজা করেছিস। মানুষ আমারে প্যাঁদানোর জন্য খুঁজে যাচ্ছে। আর সবচেয়ে বড় কথা কৃষ্ণ মহা উন্মাদ ভুলে দুইজন সৃষ্টি করে ফেলেছিলাম। এটা একই মানুষের রূপ। একদম চুপ!!!"
অপমানিত হয়ে কৃষ্ণ আর মহা উন্মাদ যে যার দিকে চলে গেলো।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন