লিখেছেন অশোভন
ধর্ম যে লাভজনক ব্যবসা তাতো জানাই আছে। কিন্তু সেই লাভের পরিমাণ সম্পর্কে আপনাদের ধারণা আছে কি? ভাবলাম, কার তবিলে কত জমলো একবার দেখাই যাক। এই লেখাটার যখন পরিকল্পনা করি, তখন ধারণাই ছিল না যে, এই “বাবা”-দের সম্মত্তির পরিমাণ কত হতে পারে। আবছা একটা ধারণা ছিল। কিন্তু একটু তথ্য যোগাড় করতেই মাথা ঘুরে যাওয়ার মতো অবস্থা। একটা কথা শুরুতেই বলে রাখা ভালো যে, এইসব তথ্যের অনেকটাই কিছুটা পুরনো এবং অনুমাননির্ভর। বাবারা তো আর যেচে এসে এসব বলে যান না। কাজেই কিছুটা অনুমান ছাড়া গত্যন্তর নেই। তবে এদের আসল সম্পত্তির পরিমাণ যে এর থেকে অনেক বেশি তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আজ দেখা যাক “বাবা” রামদেব এর তবিলে কত জমা আছে। অন্যদের খবরও ক্রমশ প্রকাশ্য।
স্কটল্যান্ডে নিজের দ্বীপে রামদেব |
সরকারিভাবে রামদেবের ঘোষিত সম্পত্তির পরিমাণ ১১৭৭ কোটি (ভারতীয়) টাকা। এটা শুধু সেই সম্পত্তির পরিমাণ, যেটা ভারতীয় আইনে আয়করমুক্ত। এছাড়াও বাবার আরও ৩০ টিরও বেশি কোম্পানি আছে, যেগুলোর কোনো হিসেব পাওয়া যায়না। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অমিতাভ বচ্চনের সম্পত্তির পরিমাণ ৪০০ কোটি টাকার মতো। অর্থাৎ রামদেবের ঘোষিত সম্পত্তির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মাত্র।
হরিদ্বারে ৬০০ একর জমির ওপর বাবার আশ্রম ও বিশ্ববিদ্যালয়। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য খরচ হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। এছাড়াও আছে ৫০০ একর জমির ওপর ৫০০ কোটি টাকার ফুড পার্ক। এছাড়াও আছে বিভিন্ন জায়গায় জমি ও আশ্রম।
এবার দেখা যাক, বাবার রোজগার কেমন হয়। বাবা যেসব যোগ শিবির করেন তাতে প্রতিবছর আনুমানিক ৫০০০০ লোক যোগ দেয়। এইসব শিবিরে যোগ দেওয়ার দক্ষিণা মোটামুটিভাবে ৫০০০ টাকা। এছাড়া স্পেশাল ক্যাম্পও আছে। যেমন ক্রুজশিপে ভাসমান যোগ শিবির, যার ফী লাখ টাকার ওপর। এইসব শিবির থেকে বাবার বছরে রোজগার ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা। বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ওষুধের বিক্রি থেকে বাবার বছরে রোজগার ৫০ কোটি টাকার ওপর। বাবা বই ও সিডি বিক্রি থেকে বার্ষিক ২ থেকে ৩ কোটি টাকা পান।
বাবার আশ্রমের সদস্যপদের জন্য ফী এর পরিমাণ এরকম: সাধারণ সদস্য ১১০০০ টাকা, সম্মানিত সদস্য ২১০০০ টাকা, বিশেষ সদস্য ৫১০০০ টাকা, আজীবন সদস্য ১ লাখ টাকা, সংরক্ষিত সদস্য ২.৫১ লাখ টাকা ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ৫ লাখ টাকা। বাবার আশ্রমের সদস্য সংখ্যা কত, তা সঠিক জানা না গেলেও সেখান থেকেও যে বিরাট অঙ্কের রোজগার আসে, তা সহজেই অনুমেয়। প্রণামী বা দান থেকে বাবার রোজগার কত, তা জানা যায়নি। কিন্তু সেটা নিশ্চিতভাবেই কোটির অংকে। “আস্থা” নামের টিভি চ্যানেলেও বাবার প্রচুর শেয়ার আছে এবং সে বাবদেও আয় কম হওয়ার কথা না।
ভারতের বাইরেও বাবার সম্পত্তির পরিমাণ কম না। আমেরিকার হিউস্টনের অদূরে ৯৫ একর জমির মালিক বাবা রামদেব। সম্প্রতি বাবার সংস্থা “হার্বোভেদ” নামে একটা আমেরিকান কোম্পানি কিনে নিয়েছে।
সাধারণত হলিউড তারকা বা রকস্টাররাই ব্যক্তিগত দ্বীপ-টিপের মালিক হন বলে শুনেছি। রামদেবও কম যান না। তিনি স্কটল্যান্ডের উপকূলে একটি দুই মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের দ্বীপের মালিক। সেখানে তার একটি আয়ুর্বেদিক রিসর্ট গড়ে তোলার পরিকল্পনা আছে।
বাবা আজকাল একটি চাটার্ড বিমানে যাতায়াত করেন। তবে তিনি সেটির মালিক কি না, তা জানা যায়নি। তবে যা জানা গেছে তাই আপাতত যথেষ্ট।
পাঠকদের ভালো লাগলে সিরিজ হতে পারে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন