নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সচিত্র লেখাটি পাঠিয়েছেন অজাতশত্রু-এর মাধ্যমে।
২৭/২/২০১২ তারিখে জগন্নাথ হলে একটা উদ্ভট ধর্মীয় প্রসপেক্টাস দেখলাম। প্রসপেক্টাসটা ছিল তাঁতিবাজার ও শাঁখারী বাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ সেবাশ্রমের। কৌতূহল আর সামলাতে পারলাম না। গেলাম সেখানে। সেখানে যাবার পর তার সম্পর্কে যা ধারনা হল তা বর্ণনা করার সময় হাসব না কাঁদব বুঝতে পারছি না। “ধর্মই সকল কৌতুকের উৎস” কথাটা আরেকবার প্রমাণিত হল, আর আমিও বুঝলাম।
হিন্দুধর্মে তো আর গুরুজির অভাব নাই, এবার এক নতুন গুরুজির আবির্ভাব হল, যার নাম “শ্রীমৎ আচার্য বিবেকানন্দ গোস্বামী এম.এ ট্রিপল (সপ্ততীর্থ)” । পরনে তার শাড়ি, শাঁখা, সিঁদুর, ব্লাউজ। তাকে মেয়ে ভাব্লে ভুল করে বসবেন। তার দৃষ্টি দেখে, এসব বেশ পোশাকের কারণ কী, তা যে যার মতো অনুমান করে নিন। তবে আমার ধারণা, এর কারণ - আমাদের মা-বোনের উপর এসব গুরুজির লোলুপ যৌনদৃষ্টি ছিল। কত মা-বোন যে এদের শিকার হয়েছে, তার সংখ্যা হয়তো নির্ণয় করা কঠিন। মা-বোনেরা হয়ত লজ্জায় কিছু বলেন নি।
একটা কথা বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম। কেন সেই আশ্রমে গিয়েছিলাম। আসলে গিয়েছিলাম দুটো কারণে।
১. ঐ অনির্দিষ্ট লিঙ্গের গুরুজিকে দেখতে।
২. তার অনুষ্ঠানসূচী দেখে:
৩.০১ মিনিট:পরমাধ্য গুরুজির শ্রী বিগ্রহ স্থাপন। (ভগবানের বিগ্রহের দেখা নাই)
৩.১৫ মিনিট:গীতা পাঠ
৩.৩১ মিনিট:অতিথি বরণ
৩.৪৫ মিনিট: গুরুদেবের গুণকীর্তন (গুরুর কীর্তন!!!! আগে তো জানতাম রামের কীর্তন হত। আর কারো না।)
৫.০১ মিনিট: সঙ্গীতানুষ্ঠান (বেতার ও টিভি শিল্পীবৃন্দ) (সঙ্গীতানুষ্ঠান)
৬.০১ মিনিট: সন্ধ্যার আরতি
৬.১৫ মিনিট:গায়িত্রি জপ ও গুরুবন্দনা
৬.৪৫ মিনিট: শ্রীগুরু পূজা
৭.৩০ মিনিট: পরমারাধ্য গুরুদেবের জীবনী আলোচনা (গুরুদেবের জীবনী!!! ধর্ম কই?)
৮.০০ মিনিট: রাস আরতি কীর্তন
৯.০১ মিনিট: প্রসাদ বিতরণ
আচ্ছা উপরের আলোচনা থেকে বলুন তো, ভগবান কে? তিনি? আর কত তাঁর বন্দনা করা হবে? মানুষরূপী দেবতা।
এই সমস্ত অনুষ্ঠানের খরচ কত হবে বলতে পারবেন? আবার দেখলাম সঙ্গীতানুষ্ঠানের জন্য টিভি বেতারের শিল্পী নিয়ে আসা হয়েছিল। এ যেন কনসার্টধর্মী বিনোদন। সামান্য এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য এতো খরচ! টাকাগুলো আসে তো বলদ ভক্তদের পকেট থেকেই।
আবার তার স্লোগান:
সাধন ভজন করে অচল
বিগ্রহ সচল করা যায়,
ফটো দিয়ে কথা বলান যায়
তা না পারলে পূজার
সার্থকতা কোথায়?
মাঝে একটা লাইন দেখুন। ফটো দিয়ে নাকি কথা বলা যায়। আহা! কি হাস্যকর!
“ কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ম”।
এ কথা লেখার সার্থকতা বুঝতাম, যদি তার অনুষ্ঠানসূচীতে নিজের গুণকীর্তন না করে কৃষ্ণের গুণকীর্তন করতেন।
শুনেছি, জগন্নাথ হলে বাংলাদেশ সেবাশ্রমের কমিটি করার প্রয়াস চলছে। বোকা হিন্দু! ওদের বোঝালেই হয়, এ দেশ তোমার না, তোমার ধর্ম বাঁচাতে এগিয়ে এসো এই আশ্রমে ইত্যাদি ইত্যাদি। ধর্মরক্ষামূলক কথা আর এই কথা শুনে মুসলিম ছাগুদের মত হিন্দু পাঁঠারা এগিয়ে আসে আর ফাঁদে পা দেয় ঐ সব ভণ্ড ধর্মগুরুর। ফলে যা হওয়ার তা-ই হয়। লাভ হয় সব ধর্মগুরুর। ধর্মব্যবসা সেরা ব্যবসা প্রমাণিত হয়।
দেখুন কারো সম্বন্ধে না যেনে এই ধরনের খারাপ মন্তব্য করা ঠিক হয়নাই আপনার।
উত্তরমুছুন