লিখেছেন ধর্মপ্রাণ প্লেবয়
নাস্তিকরা বিবর্তন তত্ত্ব নিয়ে লাফালাফি করে আর মনে করে, এটা প্রমাণ করতে পারলেই কোরান মিথ্যা প্রমাণ করা যাবে। কিন্তু এই বিবর্তনতত্ত্বের ব্যাপারে কোরান বহু আগেই ইঙ্গিত দিয়ে গেছে। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ কোরানে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শন রেখেছেন।
বিবর্তনবাদ বলে, জীবন্ত সবকিছুই পানি থেকে সৃষ্টি হয়েছে। অথচ আল্লাহ সূরা আম্বিয়ার ৩০ নং ও সূরা নূরের ৪৫ নং আয়াতে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, তিনি জীবন্ত সবকিছুকেই পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন। বিজ্ঞান মতে সকল জীবন্ত সৃষ্টির দেহের বেশিরভাগ অংশই পানি। বিবর্তনবাদ মতে, পানিতে বসবাসকারী জীব থেকে প্রথমে সরীসৃপ ও এরপর ক্রমান্বয়ে চার পায়ে হাঁটা প্রাণী ও দুই পায়ে হাটা প্রাণীর সৃষ্টি হয়। অথচ আল্লাহ সূরা নূরের ৪৫ নং আয়াতে তা বলে রেখেছেন। আল্লাহ সূরা আল-হিজরের ২৮ নং আয়াতে বলেছেন, তিনি মানুষকে মাটি থেকে তৈরী করেছেন। তিনি আরও সাতটি সূরায় মাটি থেকে সৃষ্টি করার কথা বলেছেন। আসলেও মানুষের শরীরে যত রাসায়নিক উপাদান আছে, সবই মাটিতে পাওয়া যায়।
আল্লাহ সূরা আরাফে বলেছেন, "আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, এরপর আকার-অবয়ব, তৈরী করেছি।...."'We initiated your creation (khalaqa), and then we shaped you...' (7:11) (খালাকা মানে সৃষ্টি করা যেমন হয় , তেমনি বিকশিত হওয়া অর্থাৎ evolve-ও হয়।) দেখুন, এই আয়াতে একটি time gap আছে। সৃষ্টি শুরুর পরে ধাপে ধাপে আকার-অবয়ব দেয়া হয়েছে। এমন না যে রেডিমেড মানুষ তৈরী হলো। এই আয়াত নিয়ে যদি একটু গভীরভাবে চিন্তা করি, তাহলে দেখি, মানুষের যখন আকার-অবয়ব দেয়া হচ্ছিল, তখন তারা জীবিত ছিল। এটা এই ইঙ্গিত করে যে, প্রথম জীবন (first life) কাদামাটি (খনিজ পদার্থ) থেকে শুরু হওয়ার পরে এই যে আকার-অবয়ব দেয়া, এটাই বিবর্তন।
মানুষকে যে একেবারে রেডিমেড তৈরি করা হয়নি, একটা time gap যে ছিল, তা কোরানের নিম্নের আয়াতে আরো পরিষ্কার। ১৫:২৮,২৯ "আর আপনার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদেরকে বললেন: আমি পচা কর্দম থেকে তৈরী বিশুষ্ক ঠনঠনে মাটি দ্বারা সৃষ্ট একটি মানব জাতির পত্তন করব। অতঃপর যখন তাকে ঠিকঠাক করে নেব এবং তাতে আমার রূহ থেকে ফুঁক দেব, তখন তোমরা তার সামনে সেজদায় পড়ে যেয়ো।"
মানুষের সৃষ্টি ও সময় নিয়ে আরো একটি আয়াত: ৭৬:১-২"মানুষের উপর এমন কিছু সময় অতিবাহিত হয়েছে যখন সে উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না। আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, এভাবে যে, তাকে পরীক্ষা করব অতঃপর তাকে করে দিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন।" উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না" দিয়ে সেই সময়টাকেই বোঝানো হয়েছে , যখন মানুষ অন্য রূপে ছিল।
(পাঠিয়েছেন: টোস্টার)
মানুষ সৃষ্টি যে ধাপে ধাপে করা হয়েছে তার বর্ণনা:
৭১:১৪ অথচ তিনি তোমাদেরকে বিভিন্ন রকমে সৃষ্টি করেছেন।
৭১:১৭ আল্লাহ তা’আলা তোমাদেরকে মৃত্তিকা থেকে উদগত করেছেন।
১৮:৩৭ তার সঙ্গী তাকে কথা প্রসঙ্গে বলল: তুমি তাঁকে অস্বীকার করছ, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে, অতঃপর বীর্য থেকে, অতঃপর পূর্ণাঙ্গ করেছেন তোমাকে মানবাকৃতিতে?
৭৬:২৮ আমি তাদেরকে সৃষ্টি করেছি এবং মজবুত করেছি তাদের গঠন।
৬৪:৩ তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর সুন্দর করেছেন তোমাদের আকৃতি।
এছাড়াও আরো স্পষ্ট প্রমাণ আছে। আল্লাহ সুরা আদ-দাহর এর ২৮ নং আয়াতে বলেছেন, “যখন আমরা চাইব তখন তাদের অনুরূপদের আমরা বদলে দেব আমূল পরিবর্তনে।" আল্লাহ সূরা আল-আনামে বলেছেন, "তিনি যদি ইচ্ছা করেন তবে তিনি তোমাদের সরিয়ে দিতে পারেন এবং তোমাদের পরে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করতে পারেন যাদের তিনি চান, যেমন তিনি তোমাদের উত্থিত করেছিলেন অন্য এক গোষ্ঠীর বংশ থেকে।”
বিবর্তনবাদ কি আলাদা কিছু বলে? বিবর্তনবাদ মতে, প্রথমে অস্ট্রালোপিথেকাস ও তারপর পর্যায়ক্রমে আরো কয়েকটি গোষ্ঠী হয়ে নিয়ান্ডারথাল ও সবশেষে হোমোস্যাপিয়েন্স এর উদ্ভব হয়েছে। আদম আর হাওয়া যে হুবহু বর্তমান মানুষের মত ছিল তা কি কোরানে কোথাও বলা আছে?
আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে আরবের ন্যায় একটা মরুপ্রধান দেশে একজন মানুষের পক্ষে এই তত্ত্ব দেয়াটা ছিল সম্পূর্ণভাবে অসম্ভব। শুধুমাত্র কোরান ঐশ্বরিক বাণী বলেই তখনকার সময়েই এই তত্ত্ব দেয়া সম্ভব হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন