মঙ্গলবার, ২৯ মে, ২০১২

ইসলামে কাম ও কামকেলি - ১২

মূল রচনা: আবুল কাশেম (সেক্স এন্ড সেক্সুয়ালিটি ইন ইসলাম)
অনুবাদ: খেলারাম পাঠক

(সতর্কতা: নরনারীর যৌনাচার নিয়ে এই প্রবন্ধ। স্বাভাবিকভাবেই কামসম্পর্কিত নানাবিধ টার্ম ব্যবহার করতে হয়েছে প্রবন্ধে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ভাষার মধ্যেও তাই অশালীনতার গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। কাম সম্পর্কে যাদের শুচিবাই আছে, এই প্রবন্ধ পাঠে আহত হতে পারেন তারা। এই শ্রেনীর পাঠকদের তাই প্রবন্ধটি পাঠ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। পূর্ব সতর্কতা সত্বেও যদি কেউ এটি পাঠ করে আহত বোধ করেন, সেজন্যে কোনভাবেই লেখককে দায়ী করা চলবে না।)


যদি কেউ দৈবক্রমে ঋতুমতী স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করেই ফেলে, সে ক্ষেত্রেও ঐশী সমাধান প্রস্তুত। 
সুনান আবু দাউদ, বুক নং-১১, হাদিস নং-২১৬৪:

আব্দুল্লহ ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত:

রক্ত যাওয়ার সময় যদি কেউ (ঋতুমতী স্ত্রীর সাথে) সঙ্গম করে ফেলে, তবে তাকে সদকা বাবদ এক দিনার দান করতে হবে। যদি রক্ত বন্ধ হওয়ার পর পরই সে এ কাজ করে, তবে তাকে দিতে হবে অর্ধেক দিনার।
সুনান আবু দাউদের ১নং ভলিউমের ০২৬৪নং হাদিসেও ঋতুকালীন সঙ্গমের কাফফারা হিসেবে এই একই বিধান দেয়া আছে।

যদি ঋতুস্রাব অত্যন্ত বেশি হয়, সেক্ষেত্রেও চমৎকার বিধান আছে ইসলামে। সাইয়েদেনা আলী এবং মহম্মদ (দঃ) উক্ত সমস্যার যে প্রতিবিধানের কথা বলেছেন, আবু দাউদ ও মুসলিম শরীফের হাদিসে তার তথ্যভিত্তিক বর্ণনা রয়েছে। অত্যন্ত সহজ এই ইসলামি বিধান অনুসরণ না করে আজকালকার মেয়েরা কেন যে গাইনকোলজিষ্টের চেম্বারে ছুটে মরে, ভেবে দেখা দরকার।
সুনান আবু দাউদ, বুক-১, হাদিস-০৩০২:
আলী ইবনে আবি তালেব হতে বর্ণিত:
যদি কোন স্ত্রীলোকের দীর্ঘ্য সময়ব্যাপী রক্ত যায়, তার উচিত প্রতিদিন নিজেকে পরিষ্কার করা এবং অতঃপর চর্বি অথবা তেল মিশ্রিত উলের কাপড়ের টুকরা ব্যবহার করা (অর্থাৎ উক্ত কাপড় দিয়ে যৌনাঙ্গটি বেঁধে রাখা)।
সহি মুসলিম, বুক-৩, হাদিস-০৬৪৭ এবং সহি মুসলিম, বুক-৩, হাদিস-০৬৫৮:
উম্মুল মোমেনিন আয়েশার বরাত দিয়ে এই হাদিসদ্বয়। ঋতুকালে কীভাবে নিজেকে পরিষ্কার রাখতে হয়, কীভাবে রক্তের দাগ মুছতে হয়, কীভাবে মোমের প্রলেপ দেয়া বস্ত্রখন্ড বাঁধতে হয়, কতদিন নামাজকালাম বন্ধ রাখতে হয় - এসবের বিস্তারিত বর্ণনা আছে এই হাদিস দু’টিতে।

সঙ্গমের পুর্বে যৌনসঙ্গীর সাথে কামকেলি করা বা শৃঙ্গারে রত হওয়া মানব প্রজাতির একটি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি (এমনকি চতুষ্পদ জন্তুরাও সঙ্গমের পুর্বে কিছুক্ষণ শৃঙ্গার করে); এটি খুবই আনন্দের বিষয় যে, মহম্মদও (দঃ) তার অনুসারীদের সঙ্গমের পুর্বে কিছুক্ষণ শৃঙ্গার করার জন্যে অনুপ্রাণিত করেছেন। কোনো প্রকার শৃঙ্গার ছাড়া পশুর মতো সরাসরি স্ত্রীলোকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্যে তিনি অনুসারীদের তিরস্কার করেছেন। মহম্মদ (দঃ) এ ব্যাপারে যে সব সুপারিশ করে গেছেন, তার কিছু নমুনা পাওয়া যায় ইমাম গাজ্জালির রচনায় (রেফ-৭, পৃ-২৩৩)।
‘পরস্পরের কাছে যাওয়ার আগে তাদের কিছুক্ষন শৃঙ্গার করে নেয়া উচিৎ; দু’চারটি প্রীতিপ্রদ বাক্য বিনিময়, একটু চুমো দেয়া। নবী বলেছেন- “পশুরা যেভাবে একে অন্যের উপরে লাফিয়ে পড়ে, স্ত্রীদের উপর তোমরা কেউ সেভাবে ঝাপিয়ে পড়ো না। বরং (তার আগে) তাদের মধ্যে একজন বার্তাবাহক আসতে দাও”; তারা জিজ্ঞেস করল- “হে আল্লাহর রাসুল, এই বার্তাবাহকটি কে”; তিনি বললেন- “চুম্বন এবং প্রীতিময় বাক্য বিনিময়।” অতঃপর যদি তার আগে শেষ হয়ে যায়, তার উচিৎ অপেক্ষা করা যে পর্যন্ত না তার স্ত্রীর শেষ হয়’।
এটি অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে, মহম্মদ (দঃ) সঙ্গমের পূর্বে শৃঙ্গারের বিধান দিয়েছেন এবং পরস্পরের তৃপ্তিদায়ক যৌনকর্মের পক্ষে সুপারিশ করেছেন।

উপবাসের (রোজা) সময় চুমো দেয়া এবং পরস্পরের জিহ্বা লেহন করা:

সুনান আবু দাউদ, বুক নং-১৩, হাদিস নং-২৩৮০:
বিবি আয়েশার নিকট হতে আমরা জানতে পারি যে উপবাসরত অবস্থায়ও নবী তাকে চুমো দিতেন এবং জিহ্বা লেহন করতেন।

(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন