রবিবার, ২০ মে, ২০১২

ইসলামে কাম ও কামকেলি - ১০

মূল রচনা: আবুল কাশেম (সেক্স এন্ড সেক্সুয়ালিটি ইন ইসলাম)
অনুবাদ: খেলারাম পাঠক

(সতর্কতা: নরনারীর যৌনাচার নিয়ে এই প্রবন্ধ। স্বাভাবিকভাবেই কামসম্পর্কিত নানাবিধ টার্ম ব্যবহার করতে হয়েছে প্রবন্ধে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ভাষার মধ্যেও তাই অশালীনতার গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। কাম সম্পর্কে যাদের শুচিবাই আছে, এই প্রবন্ধ পাঠে আহত হতে পারেন তারা। এই শ্রেনীর পাঠকদের তাই প্রবন্ধটি পাঠ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। পূর্ব সতর্কতা সত্বেও যদি কেউ এটি পাঠ করে আহত বোধ করেন, সেজন্যে কোনভাবেই লেখককে দায়ী করা চলবে না।)


গর্ভবতীর সাথে সেক্স

বিয়ের পর যদি দেখা যায় যে নববধূটি গর্ভবতী, তা’হলে উপায় কী? অতীব বিব্রতকর একটি অবস্থা। আধুনিক সমাজে এধরণের পরিস্থিতি প্রায় হয় না বললেই চলে। কারণ ছেলেমেয়েরা বহুদিন মেলামেশা, পরস্পর পরস্পরের সঙ্গ উপভোগ করার পরই কেবল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তবে ধারণা করা যায় যে নবীজির আমলে আনকালচার্ড বেদুঈনদের মধ্যে এ ধরণের পরিস্থিতির উদ্ভব হলে হতেও পারে। একজন পূর্ব-গর্ভিনী মেয়ের সাথে সেক্স করার কথা চিন্তাও করা যায় না, এরূপ অবস্থায় অধিকাংশ লোকই হয়তো বিয়েটি বাতিল করে পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌছতে চেষ্টা করবে। 

তবে ইসলামী দর্শন মোতাবেক এর সমাধান ভিন্নতর। যেহেতু লোকটি ইতোমধ্যে মোহরানার টাকা পরিশোধ করে ফেলেছে (কিংবা পরবর্তীতে করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে), সুতরাং মেয়েটির যৌনাঙ্গ তার জন্যে হালাল হয়ে গেছে, কিংবা বলা যায়, গর্ভবতীর দেহটি ভোগ করা তার উপর ফরজ হয়ে দাড়িয়েছে। ভোগপর্বের পর মেয়েটির কপালে কী ঘটবে? প্রাক-বৈবাহিক যৌনকর্মের শাস্তি বাবদ তার জন্যে জমা আছে একশটি ইসলামিক দোররা। 

ভাবুন তো একবার, একটু আগে যার সাথে আপনি জীবনের শ্রেষ্ঠতম সুখের মুহূর্তগুলি কাটালেন, তার কুসুম-কোমল পৃষ্ঠদেশ চাবুকের আঘাতে রক্তাক্ত হচ্ছে! নতুন আগন্তুকটির জন্যেই বা কোন ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে? নির্দোষ একটি শিশু, সে হয়ে যাবে আপনার ক্রীতদাস! 

হ্যাঁ, এই হচ্ছে ইসলামি বিচার। সহজ এবং সরল। এই প্রথার সমর্থনে দু’টি হাদিস 
সুনানে আবু দাউদ: বুক নং-১১, হাদিস নং-১২৬: 
বাসরা হতে বর্ণিত: বাসরা নামক জনৈক আনসার বলেন: আমি বোরখাধারী একজন কুমারিকে বিয়ে করি। তার সাথে মিলিত হওয়ার পর আমি দেখতে পাই যে মেয়েটি গর্ভবতী। (বিষয়টি নবীকে জানানোর পর) নবী (দঃ) বললেন- যেহেতু তুমি তার যোনিদেশ তোমার জন্যে হালাল করে নিয়েছ, সুতরাং সে (নির্ধারিত) মোহরানা পাওয়ার অধিকারী। শিশুটি হবে তোমার ক্রীতদাস। (বাচ্চা) প্রসব করার পর তাকে দোররা মার। (আল হাসানের ভার্সন)।
সুনানে আবু দাউদ: বুক নং-১১, হাদিস নং-২১৫৩: 
রুয়াইফি ইবনে তাবিত আল আনসারি হতে বর্ণিতঃ হুনায়েনের দিন আল্লাহর রাসুলের (দঃ) মুখ থেকে আমি কি শুনেছি তা তোমাদের বলব কি? (তিনি বলেছেন) যে আল্লাহ ও শেষ দিবসের উপর বিশ্বাস করে তার উপর বৈধ নয় জল সিঞ্চন করা সেখানে যেখানে অন্য লোক (পুর্বেই) জল সিঞ্চন করেছে (অর্থাৎ গর্ভিনির সাথে সঙ্গম); যে আল্লাহ ও শেষ দিবসের উপর বিশ্বাস রাখে তার উপর বৈধ নয় বন্টনের পুর্বেই যুদ্ধলব্ধ মাল বিক্রয় করা।
(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন