লিখেছেন mohammadwasapig
সমগ্র পৃথিবীতে শুধুমাত্র হাতেগোণা মাত্র কয়েকজন ভাগ্যবান এবং ঈমান্দার মোচলমান আছে, শুধুই তারাই বিশ্বলম্পটকে স্বপ্নে দর্শন পেয়ে থাকেন। আমি সপ্তা খানিক গত হয়ে গেলো বিশ্বলম্পট মহাম্যাডকে স্বপ্নে দর্শন লাভ করেছি (অথবা উনিই আমাকে একজন প্রকৃত ঈমান্দার হিসাবে লাম্পট্য নোবেল পুরস্কার দান করার জন্য স্বপ্নে দর্শন দান করেছেন) ঊনাকে স্বপ্নে দর্শন লাভ করাতে আমি আহামরি কিছু দেখছি না। তবে গর্ববোধ করছি এই মনে করে যে, শেষ পর্যন্ত আমি কিনা পৃথিবীতে হাতেগোণা কয়েকজন ঈমান্দারদের মধ্যে একজন। কপালে নেই তাই লাদেনের সাথে দেখা করতে পারলাম না। আশা করছি জোকার নায়েকের সাথে এই সুবাদে মোলাকাত হয়ে যাওয়াটা অবান্তর কিছু হবে না।
যাই হোক এবার স্বপ্নের কথাই আসা যাক।
(ঈমান্দার মোচলমান্দের অবগত করার জন্য বলছি , এটা নিতান্তই একটা স্বপ্ন এবং বাস্তবের সঙ্গে এই ঘটনার কোনো সম্পর্ক নাই)
ঘুমের মধ্যে হঠাৎ করে আমি নিজেকে আবিষ্কার করলাম হাঁচোরের ময়দানে, অজস্র লোকে ময়দানটা পুরোপুরি ঠাসা, কেউ জোব্বা পরা, কেউ ধুতি পরা, কেউ শাড়ি, কেউ বিকিনি, কেউ বুরকা আবার কেউ কেউ সম্পূর্ণ উলঙ্গ। ময়দানের আরেক পাশেই আরেক প্রকাণ্ড এক বিমানবন্দর, যেখানে শুধু একটার পর একটা কার্গো বিমান উঠছে আর নামছে। জোব্বা পরা পাইলটরা সব একটা বিমান ল্যান্ড করার সঙ্গে সঙ্গে আরেকটা বিমানে গিয়ে উঠে বসছে উড়াল দেবার জন্য। এক বিমান থেকে নেমে আরেক বিমানে ওঠার আগে শুধু মাত্র টারমাকের ওপর পানের পিক ফেলবার যে সময়টুকু দরকার, শুধু সেই সময়টুকুই থামছে তারা।
একটি কার্গো বিমান টারমাকে এসে থামার সঙ্গে সঙ্গে দুইটি বিরাট আকারের উট এসে বিমান্টাকে মোটা একটা দড়ি জাতীয় কিছু দিয়ে বেঁধে তাঁবু টাঙ্গানো একটা গুদাম ঘরের কাছে নিয়ে যাচ্ছে মাল নামানোর জন্য। জোব্বা পরা এক লোক পানের পিক ফেলতে ফেলতে প্লেনের দরজা খুলে দিলো, সঙ্গে সঙ্গে কী জানি কোথা থেকে আরও কয়েক হাজার জোব্বা পরিহিত লোক এসে মুহূর্তের মধ্যেই প্লেনটা খালি করে ফেললো। মাল বলতে তারা যা খালাস করল, তার সমস্তই ছিল লম্বা লম্বা আঝাড়া বাঁশ। এইভাবে ২৪ ঘন্টা ধরেই চলতে থাকল প্লেন থেকে বাঁশ খালাস করার কাজ।
কিছু বুঝে না উঠতেই পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি, আমার এক পুরনো বন্ধু মহাম্মদ ধনকেশ আলী। আর ওর কাছ থেকেই জানলাম যে, আমরা এখন রোজ হাঁচোরের ময়দানে এবং আমি এখানে আসার অনেক আগেই সে এখানে পৌঁছিয়েছে। এবং সে আরও জানালো যে, আল্লাফাক অনেক আগেই বিচার শুরু করে দিয়েছেন এবং সবে মাত্র একটা বিচারের রায় হয়েছে। প্রথম যে লোকটিকে তিনি বিচারের জন্য বেছে নিলেন, তিনি হচ্ছেন তার সব চেয়ে পিয়ারা বান্দা, বিশ্ব লম্পট হজরত মহা ম্যাড (পিস বি আপন হিম - এইখানে 'পিস' বানানটি নিজ দায়িত্বে বেছে নিন: Piece, Peace এবং Piss)।
আমার বন্ধু ধনকেশ আলীর কাছ থাকে সংক্ষেপে যা জানলাম সেটা হলো: বিশ্বলম্পট পৃথিবীতে তার সমস্ত কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ আল্লা ফাক মহাম্যাডকে আছোলা বাঁশগুলো দেবার জন্য রায় প্রদান করেছেন। এবং তারই প্রস্তুতি স্বরূপ হাঁচোরের ময়দানের পাশে একটা এয়ারপোর্ট খুলে পৃথিবী থেকে সমস্ত বাঁশ এখানে এনে জড় করা হচ্ছে। বন্ধুর কথা শুনে হাঁচোরের ময়দানে দেরি করে আসার কারণে নিজের চুল নিজেই ছেঁড়ার জন্য মাথায় হাত দিতেই চমকে উঠলাম। এ কী! দেখচি মাথায় যে একটা চুলও নেই। সহাস্য বদনে আমার বন্ধুই আমাকে বুঝিয়ে দিলো যে, এখন আমরা প্রায় বেহেস্তের দোরগোড়ায়, তাই সেখানে ঢোকার আগেই আমাদের সর্বাঙ্গের লোম স্বয়ংক্রিয়ভাবে আমাদের অজান্তেই আল্লাফাক তার নিজ খরচেই খসিয়ে ফেলেছেন।
ইতিমধ্যে বিশ্বলম্পট মহাম্যাডকে বাঁশ দেওয়ার কাজ পুরো দমে শুরু হয়ে গিয়েছে। লক্ষ-কোটি লোক সবাই বাঁশ হাতে লাইন ধরে দাড়িয়ে অপেক্ষায় আছে, কখন তাদের সময় আসবে তার জন্য। অনেক দূর থেকে হলেও বিশ্ব লম্পটকে বাঁশ দেওয়ার দৃশ্য বেশ উপভোগ করার মতই মনে হচ্ছিলো, এমন সময় এক জোব্বা পরা এক লোককে আমাকে লক্ষ্য করে গলা খেঁকিয়ে বলতে শুনলাম, "হেই মিয়া, আন্নে বাঁশ ছাড়া ইয়ান্তুন কিতা করতাছেন? যান বাঁশ আইন্না তার পর লাইনে খারান। জানেন্না, আমাগো নবীরে বাঁশ দিবার রায় দিছেন আল্লায়? ভাব্লাম, বাঁশ আনার জন্য বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে যাই তাতে করে দুজন মিলে বেছে বেছে ভাল দু'টি বাঁশ নিতে পারবো। কিন্তু দুঃখের বিষয়, বন্ধুটাকে আর ধারে কাছে কোথাও খুজে পেলাম না।
অগত্যা একাই গেলাম বাঁশ সংগ্রহ করার জন্য। অবাক হলাম, কোটি কোটি লোক বাঁশ নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু কোনোরকমের হুড়াহুড়ি বা ধস্তাধস্তি নেই সেখানে, আশ্চর্য হলাম আমি বাঁশ বলে হাত উঠানোর সঙ্গে সঙ্গে আমার হাতে একটা ৫২ ফুট লম্বার আঝাড়া এক বাঁশ এশে পড়লো । চিন্তা মুক্ত হয়ে খুশি মনে বাঁশ হাতে নিয়ে আবার লাইনে খাড়াইলাম। মহাম্যাডকে পরাদমে বাঁশ দেওয়ার প্রক্রিয়া ছলছে। লাইনে খাড়াই থাকতে থাকতে একটু তন্দ্রা এসে গিয়েছিল। তন্দ্রা ভাংতেই দেখি, আমি একা লাইনে খাড়াইয়া আছি, আর আমার সামনে খেজুর পাতার বিশা-ল একটা পাটির উপর ঈমান্দারেরা বসে বসে এক সুরে কুরান তেলওয়াত করছে আর পাটির ৪ কোনে ৪ টি বৃহদাকারের কালো শুয়োর গভীরভাবে তাদের কুরান তেলওয়াত শুনছে। ইয়া বড় বড় ৪ টি দান্তাল কাল শুয়োর দেখে সঙ্গে সঙ্গে আমার ঘুমটা ভেঙে গেলো ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন