মূল রচনা: আবুল কাশেম (সেক্স এন্ড সেক্সুয়ালিটি ইন ইসলাম)
অনুবাদ: খেলারাম পাঠক
(সতর্কতা: নরনারীর যৌনাচার নিয়ে এই প্রবন্ধ। স্বাভাবিকভাবেই কামসম্পর্কিত নানাবিধ টার্ম ব্যবহার করতে হয়েছে প্রবন্ধে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ভাষার মধ্যেও তাই অশালীনতার গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। কাম সম্পর্কে যাদের শুচিবাই আছে, এই প্রবন্ধ পাঠে আহত হতে পারেন তারা। এই শ্রেনীর পাঠকদের তাই প্রবন্ধটি পাঠ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। পূর্ব সতর্কতা সত্বেও যদি কেউ এটি পাঠ করে আহত বোধ করেন, সেজন্যে কোনভাবেই লেখককে দায়ী করা চলবে না।)
অবিলম্বে আল্লাহর তরফ থেকে অহি নেমে আসল এবং পায়ুপথে সঙ্গম নিষিদ্ধ বলে ঘোষিত হলো। কুকুরের স্টাইলটি (পেছনের দিক হতে সঙ্গম) অবশ্য বহাল রইল, যদিও আনসারি মেয়েরা এই পদ্ধতিটির উপর খুব একটা সন্তুষ্ট ছিল না।
এ প্রসঙ্গে গোটাকয়েক হাদিস বর্ণনা করা হলো নিচে। নিশ্চয়তা দিচ্ছি, হাদিসগুলি আপনাদের বিস্তর মজার খোরাক জোগাবে।
সুনান আবু দাউদ, বুক নং-১১, হাদিস নং-২১৫৯:আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত:ইবনে উমর ভুল বুঝেছিল (“তোমাদের স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের শস্যক্ষেত্র, সুতরাং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তা চাষ কর”- কোরাণের এই আয়াতটির ভুল অর্থ বুঝেছিলেন ইবনে উমর), আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন। আসল ঘটনা এই যে আনসারদের এই গোত্রটি ছিল পৌত্তলিক। তারা ইহুদিদের পাশে বসবাস করত যারা ছিল কেতাবধারী সম্প্রদায়। জ্ঞানের ক্ষেত্রে তারা (আনসাররা) ইহুদিদেরকে শ্রেষ্ঠতর বলে গন্য করতো এবং তাদের রীতিনীতি অনুসরণ করত। কেতাবধারী সম্প্রদায়রা (অর্থাৎ ইহুদীরা) স্ত্রী-সঙ্গমকালে শুধুমাত্র একটি আসন ব্যবহার করত (চিৎ করে শায়িত অবস্থায়); এই আসনটিতে মেয়েরা (অর্থাৎ তাদের যোনি) সবচেয়ে লুক্কায়িত অবস্থায় থাকে। আনসারদের এই গোত্রটি ইহুদিদের কাছ থেকে এই আসন শিখে নেয়। কিন্তু কোরেশরা মেয়েদেরকে সম্পূর্ণভাবে উলঙ্গ করে নিত, এবং পেছন থেকে ও সামনে থেকে - উভয় দিক থেকেই আনন্দ পেতে চেষ্টা করত। মোহজেরগণ যখন মদীনায় এলো, তাদের মধ্যে জনৈক ব্যক্তি একজন আনসার রমণীকে বিয়ে করে। সে যখন তার সাথে এইভাবে সঙ্গম করতে শুরু করল (অর্থাৎ মক্কা ষ্টাইলে), মেয়েটি তা পছন্দ করল না এবং তাকে বলল, একটিমাত্র আসনেই আমরা অভ্যস্ত। সেইভাবে কর, নচেৎ আমার কাছ থেকে দূর হয়ে যাও। ঘটনাটি ব্যাপকভাবে প্রকাশ হয়ে পড়ল এবং রাসুলের (দঃ) কানে পৌঁছল। সুতরাং মহান আল্লাহ কোরানের আয়াতটি অবতীর্ণ করলেন, “তোমাদের স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের শস্যক্ষেত্র, সুতরাং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তা চাষ কর” অর্থাৎ- সামনের দিক হতে, পেছনের দিক হতে কিংবা চিৎ করে শায়িত অবস্থায়। তবে এই আয়াত (শুধুমাত্র) সন্তান প্রসবের ছিদ্রকে অর্থাৎ স্ত্রীযোনিকে নির্দিষ্ট করে দিয়েছে।
সহি মুসলিম, বুক নং-০০৮, হাদিস নং-৩৩৬৪:জাবির (বিন আব্দুল্লাহ) (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, ইহুদিরা বলত, যদি কেউ পেছনের দিক হতে স্ত্রীযোনিতে যায় এবং স্ত্রী গর্ভবতী হয়, তবে সন্তান হবে টেরা চোখবিশিষ্ট। সুতরাং এই আয়াত নাজেল হলো- “তোমাদের স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের শস্যক্ষেত্র, সুতরাং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তা চাষ কর”।
সহি বুখারি, ভলিউম-৬, বুক নং-৬০, হাদিস নং-৫১:জাবির হতে বর্ণিত:ইহুদিরা বলত: “যদি কেউ পেছনের দিক হতে স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করে, তবে সে টেরা চোখবিশিষ্ট সন্তানের জন্ম দেবে”।সুতরাং এই আয়াতটি নাজেল হলো- “তোমাদের স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের শস্যক্ষেত্র, সুতরাং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে তা চাষকর”।
সুনান আবু দাউদ: বুক নং-১২, হাদিস নং-২২১২:উরুয়া হতে বর্ণিত:খাওলা ছিল আউস ইবনে আস-সামিতের স্ত্রী; সে এমন একজন পুরুষ, যার যৌনক্ষমতা ছিল অসাধারণ। যখন তার সঙ্গমবাসনা খুব প্রবল হলো, সে স্ত্রীকে তার মায়ের নিতম্ব বলে কল্পনা করে নিলো। সুতরাং জিহারের প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ মহান আল্লাহ কোরানের আয়াত নাজেল করলেন (জিহার শব্দের অর্থ হচ্ছে স্ত্রীর কোন অঙ্গকে মা, খালা ইত্যাদি মাহরিম মেয়েলোকের অঙ্গের সাথে তুলনা করা বা কল্পনা করা)।
সুনান আবু দাউদ, বুক নং-১২, নাম্বার-২২১৪:ইকরিমা হতে বর্ণিত: জনৈক লোক তার স্ত্রীর নিতম্বকে তার মায়ের নিতম্ব হিসেবে তুলনা করেছিল। অতঃপর কোনোরূপ প্রায়শ্চিত্ত করার পুর্বেই সে তার সাথে সঙ্গম করল। সে রাসুলের (দঃ) নিকট গেল এবং তাকে বিষয়টি জানাল। তিনি (তাকে) জিজ্ঞেস করলেন, এ কাজ করতে তোমাকে প্রেরণা জোগাল কে? সে বলল, আমি চাঁদের আলোতে তার শুভ্র জঙ্ঘা দেখতে পাই। তিনি বললেন, যে পর্যন্ত তুমি তোমার কাজের প্রায়শ্চিত্ত না করেছ, সে পর্যন্ত তার (স্ত্রীর) কাছ থেকে দুরে থাক।
সুনান আবু দাউদ, বুক নং-১১, নাম্বার-২১৫৭:আবু হুরাইরা হতে বর্ণিত:রাসুলুল্লাহ (দঃ) বলেছেন, যে স্ত্রীর সাথে পায়ুপথে সঙ্গম করে, সে অভিশপ্ত।
সুনান আবু দাউদ, বুক নং-২৯, নাম্বার-৩৮৯৫:আবু হুরাইরা হতে বর্ণিত:যদি কেউ ঐশী কেতাবধারীকে অবলম্বন করে এবং সে যা বলে তা-ই বিশ্বাস করে (অর্থাৎ ইহুদি), অথবা ঋতুকালে স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করে, অথবা স্ত্রীর পায়ুপথে সঙ্গম করে, তবে মহম্মদের (দঃ) নিকট যা অবতীর্ণ হয়েছে, সেগুলির সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই।
(চলবে)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন