আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

সোমবার, ৬ আগস্ট, ২০১২

হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যু-পরবর্তী প্রথম সাক্ষাৎকার

লিখেছেন হিমালয় গাঙ্গুলী

ভূমিকা: 
ভূমিকা না দিলেই নয় । মৃত্যু-পরবর্তী জগতে নাস্তিকদের অবিশ্বাসকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ইছলামের সেবক দৈনিক আল-ইহসান এবং সাপ্তাহিক আল-বাইয়ানিয়াত-এর পক্ষ থেকে নুহাশপল্লীতে অবস্থিত হুমায়ূন আহমেদের কবরে অভিযান চালানো হয়। এক পর্যায়ে হুমায়ূন আহমেদ পরকাল সম্পর্কে এক বিশেষ সাক্ষাৎকার দেন। সেই সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে পারলৌকিক জীবন সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। সেই সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ প্রকাশ করা হলো। 

আল ইহসান: স্যার, কেমন আছেন?
হুমায়ূন আহমেদ: ভাল না। আমি জীবদ্দশায় বহুবার বলেছি, এই অনিত্য জগতে একমাত্র প্রতীক্ষাই সত্য। মরার পর বিরক্ত হয়ে লক্ষ্য করছি, এই জগতেও প্রতীক্ষা ব্যাপারটা আছে। রমজান মাস বলে মনকির-নকির সওয়াল করতে আসছে না। আমি তাদের প্রতীক্ষায় বসে আছি। এক সময় এসে তারা সওয়াল-টওয়াল করে ত্যক্ত করবে। বিরক্তিকর ব্যাপার। (স্যার ফোঁস করে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন)

আ ই: মানে আপনি মনকির এবং নকিরের ব্যাপারটা মানছেন?
হু আ: (আবার দীর্ঘশ্বাস) না মেনে উপায় আছে? সমস্যা হচ্ছে, কোনো কাজ পাচ্ছি না। কবরে মাছির ব্যবস্থা থাকলে ভালো হত। কোনো কাজ-টাজ নেই, বসে বসে মাছি মারতাম। 

আ ই: কবরের নিঃসঙ্গ জীবনে পৃথিবীর কোন জিনিসটা সবচেয়ে মিস করছেন?
হু আ: সিগারেট। (হতাশ ভঙ্গিতে) কবর অতি জঘন্য জায়গা। ভালো কোনো জিনিসই এখানে পাওয়া যায় না। তোমাদের মুহাম্মদ একবার সৌজন্য-সাক্ষাৎ করতে এসেছিল। সারাক্ষণ ভোঁস-ভোঁস করে সিগারেট টেনেছে। একটা চেয়ে রেখে দিলে ভালো হত। বেঁচে থাকলে বিড়ির পিপাসায় এতক্ষণ পটল তুলে ফেলতাম। মরে গিয়ে বেঁচে গেছি। 

আ ই: বলেন কী! মহানবী আপনার সাথে দেখা করতে এসেছিলেন? সুবহানাল্লাহ! 
হু আ: (বিরক্ত হয়ে) ওই ছাগলাটাকে যে কে মহানবী বানিয়েছিল, কে জানে! ফাজিলটা এসেই ইন্টার পড়া ছেলেপেলের মত মেয়ে মানুষের গল্প শুরু করল। আয়েশার বুক নরম, সাফিয়ার পাছা সুন্দর এইসব। ইচ্ছে করছিল লাথি মেরে হারামজাদার বিচি কাঁধে উঠিয়ে দিই। শালা মহানবী হয়েছে! বদের হাড্ডি হয়েছে!

আ ই: আপনি কিন্তু সীমা অতিক্রম করছেন। মহানবীর বিরুদ্ধে কথা বলে আপনি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এটা কি ঠিক হচ্ছে?
হু আ: পৃথিবীতে থাকতে এই ব্যাপারগুলো পুছতাম। এখন ...... দিয়েও পুছি না। বইয়ের ব্যবসা করতে গিয়ে আস্তিক-নাস্তিক দু'পক্ষেই বাতাস দিয়েছি। এখন আমার বই আর কে খাবে! কারো মন রক্ষার প্রয়োজন দেখছি না। আমি যথেষ্টই ভণ্ড। তাতে সমস্যা নেই। তোমাদের নবীও ভণ্ড। তিনি হাঁটুর বয়সী মেয়ে বিয়ে করেছেন, আমিও করেছি। তাঁকে তোমরা নবী বল, আর আমাকে গালি দাও। তোমরাও তৃতীয় শ্রেণীর ভণ্ড। ভণ্ডে ভণ্ডে ধুল পরিমাণ। 

আ ই: ধর্মীয় ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিক্ততা বাড়তে থাকবে, আমরা প্রসঙ্গ পরিবর্তন করি। 
হু আ: (বিদ্রূপের স্বরে) তোমরা আবার ধর্ম ছাড়া আর কোনো বিষয় জান নাকি! 

আ ই: মনে করুন, আপনাকে শেষ বিচারের পর জান্নাতবাসী করা হল। সেখানে আপনার চাওয়াটা কী হবে?
হু আ: শেষ বিচার পর্যন্ত আমার এই দেহ আস্ত থাকবে ভেবেছ? মাইক্রো অরগানিজমগুলো কি তোমার নবী আর আল্লাহর মত ভোদাই? আর যদি সিস্টেম একটা হয়েই যায়, তাহলে চাওয়া একটাই, তোমাদের বেহেশতি চিজ, বাহাত্তর মাতারিকে যেন আমার আশেপাশে না দেখি। ইহকালে কিঞ্চিৎ লুচ্চা ছিলাম, মরার পর এই ব্যাপারে আমি হাত ধুয়ে ফেলেছি। এদের দেখলেই আমার মাথা অতিরিক্ত গরম হয়ে ধুম করে অ্যাটাক-ফ্যাটাক হয়ে যেতে পারে। বেহেস্তে বসে অ্যাটাক হওয়া কোনো কাজের কথা না।

আ ই: ইহকালে আপনি কী কী অপরাধ করেছেন, যার জন্য আপনাকে দোজখবাসী করা যায়? 
হু আ: তেমন কিছুই করিনি। বানিয়ে বানিয়ে গল্প লিখেছি। সেটা তোমাদের নবীও করেছেন। উনি বই লিখেছেন দুইটা, আমি শ চারেক। বাচ্চা একটা মেয়েকে ফুসলিয়ে বিয়ে করেছি। এ জাতীয় কর্মকাণ্ড নবীজিও করেছেন। মদ খেয়ে কোলন ক্যান্সার বাধিয়ে ফেলেছি, এটা অবশ্য নবীজি করেননি। আচ্ছা, বেহেস্তের শরাবুন তহুরার তেজ কেমন? আমার লিমিট হচ্ছে সাত। তেজ কম হলে ডোজ বাড়াতে হবে। জস্মিন দেশে যদাচার। আরেকটা কথা, বেহেস্তের শরাব নাকি নেশামুক্ত। তাহলে এই জিনিস আর কোকাকোলার মধ্যে পার্থক্য থাকল কই? 

আ ই: আপনি বেহেস্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন?
হু আ: (হাই তুলতে তুলতে) কিছুই তুলছি না। তুলতে পারলে তোমাদের নবীর পাছার ছাল তুলে নিতাম। ব্যাটা ফাজিল! কুরআন লিখেছে! সুরা বনি ইসরাইল! হে মানব সন্তান তোমাদের বড়ই তাড়াহুড়া! তাড়াহুড়া তোর গুহ্যদ্বার দিয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া দরকার। 

আ ই: আপনি বারবার নবীজির সমালোচনা করছেন। নিজের সমালোচনা করুন। যে নিজের সমালোচনা করতে পারে, সে-ই সর্বাপেক্ষা বুদ্ধিমান।
হু আ: (আবার হাই, এবারেরটা নকল) নিজের সমালোচনা তো করলামই। আমি ভণ্ড। যেমন ধর, সাহিত্যপত্রিকার কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করত, আমি পৃথিবীর কোন জিনিসটা মিস করছি, আমি গম্ভীর মুখে জোছনা বা বৃষ্টি কিছু একটা বলে দিতাম। সাথে থাকত ইয়েটস কিংবা রবার্ট ফ্রস্টের লাইন। তোমরা ধর্মীয় লাইনের লোক, গাঁজাখোরের মত কথা বল, তাই তোমাদের বলেছি সিগারেট। তবে ভণ্ডামির ক্ষেত্রে মুহাম্মদের তুলনায় আমি চুনোপুঁটি শ্রেণীর। 

আ ই: জ্বীন সম্প্রদায় সম্পর্কে আপনার ধারনা কী?
হু আ: (গম্ভীর মুখে) এইসব গাঁজাখুরি গল্পও হারামজাদা মুহাম্মদের কাজ। ভূতের গল্প লিখতে গেলে প্রচুর পড়াশুনা দরকার। ছাগলাটা কিছু না পড়েই গল্প লিখে ফেলেছে। যা হবার তা-ই হয়েছে। লেখা পড়ে মনে হয়েছে ঠাকুরমার ঝুলি থেকে টুকলিফাই করেছে। আমার ধারণা, মুহাম্মদ যদি চটি লিখত, সেটা বেস্টসেলার হত। নিজের জীবন থেকে নেওয়া সাহিত্য। নোবেল-টোবেল পেয়ে যাওয়া বিচিত্র কিছু ছিল না। শ্লীল-অশ্লীল সব সাহিত্য চলে গেছে মালাউনদের দখলে। শ্লীল সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ, অশ্লীল সাহিত্যে রসময় গুপ্ত। বড়ই পরিতাপের বিষয়। (দীর্ঘশ্বাস)

আ ই: আপনি আস্তিক না নাস্তিক?
হু আ: (বিরক্ত হয়ে) তোমরা তো, দেখছি, নবীর একেবারে খাসা উম্মত। তোমাদের নবী ছিল ছাগল, তোমরা উম্মতরা হলে রামছাগল। এতক্ষণ প্রশ্ন করে এখন সীতা কার পিতা! দেশটা ছাগলে ভরে যাচ্ছে। কিছুদিন পর বাংলাদেশের ম্যাপ থেকে পাঁঠার গন্ধ পাওয়া যাবে। আফসোস।

আ ই: নুহাশ পল্লী সম্পর্কে আপনার ভাবনা কী? 
হু আ: এইটা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। (চিন্তিত মুখে) কিছুদিনের মধ্যে এখানে আমার মাজার গজিয়ে যাবে। রাতদিন জিকির চলবে, ফাঁকে-ফাঁকে গাঁজায় লম্বা লম্বা টান দেওয়া হবে। তোমরা গাধা নবীর গাধা উম্মত। সিম্পল এন্ড সলিড গিদ্ধর কা আওলাদ। সবকিছু নবীর আলোকে ব্যাখ্যা করার একটা সচেতন ইচ্ছা তোমাদের মধ্যে সব সময় কাজ করে। লালন সাই তোমাদের হাতে পড়ে হয়ে গেছেন হজরত লালন শাহ। কিছুদিনের মধ্যে দেখা যাবে আমার নাম হয়েছে হযরত আহম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়ালাইয়াহু আসাল্লাম।

আ ই: আপনার ইহলোকগত সন্তানদের সম্পর্কে কিছু বলুন।
হু আ: (অশ্রুময় চোখে) দিলে তো মনটা খারাপ করে। আমি যত খারাপই হই, খারাপ বাবা নই। দুনিয়াতে বহু খারাপ মানুষ আছে, একটাও খারাপ বাবা নেই, এই কথা আমি আমার লেখায় বলেছি। কথাটা খুবই সত্যি। অন্য ভুবনের বাসিন্দা পুত্র-কন্যা সম্পর্কে কিছু বলার ক্ষমতা কোন অভাজন পিতাকে দেওয়া হয় নি। 

... এই পর্যায়ে হুমায়ূন আহমেদ শিশুর মত কাঁদতে থাকেন। বিব্রত বোধ করে আল ইহসানের সাংবাদিকগণ উঠে চলে আসেন।

পরিশিষ্ট:
সাংবাদিকরা যে-পথে ফিরে গেলেন, সেই পথে হঠাৎ করে চাঁদের আলো ঢুকে পড়ল। চন্দ্রালোক সর্বগামী। ভাঙ্গা ঘরের ভাঙ্গা চালা দিয়ে প্রবেশের অধিকার অবাক জ্যোৎস্নাকে দেওয়া হয়েছে। ফিনিক ফাটা জোছনায় কবরটিকে মনে হতে থাকে চন্দ্রালয়। পূর্ণচন্দ্রের অপার্থিব আলোয় এক অশরীরী পিতা তাঁর সন্তানদের জন্য অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছেন। আহারে!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন