লিখেছেন থাবা বাবা
চাপা-০১২
হিমালয়ের চিপায় একটা দেবতা-ক্লাস-অডিটোরিয়াম বানাইছে হিমালয়ের দেবতারা। আর্কিটেক্ট স্বয়ং বিশ্বকর্মা স্থপতি। মহা সমারোহে নারিকেল, ঘটি ইত্যাদি ভেঙ্গে সেটার গৃহ থুক্কু মিলনায়তন প্রবেশ হলো শুভ লগ্ন দেখে। ব্রহ্মার সাথে প্রধান অতিথি ছিল জিউস আর আমন। সব দেশের সব দেবতা আর ঈশ্বর হিমালয়ের চিপায় স্থাপিত স্বর্গের মিলনায়তনে আমন্ত্রিত অতিথি। খালি আসে নাই আরবের আল্লা। আল্লার তিন কন্যা উজ্জা, মানাত আর লাত এসেছে ঠিকই, কিন্তু লুইচ্চা মোহাম্মকের পাল্লায় পড়ে তাদের বাপ ডিগবাজী খেয়ে নাকি নিরাকার হয়ে গেছে। মোহাম্মক তারে বুঝাইছে যে, সে হইলো এক ও অদ্বিতীয় আর সেও সেই এক ও অদ্বিতীয় ভাব ধইরা বইসা আছে কাবাঘরের ছাদের এন্টেনার ওপর। অবশ্য আল্লার না আসাতে যে খুব একটা ক্ষতিবৃদ্ধি হইছে, তাও না। ওরে আজকাল কেউ আর পোছে না।
দেবতাদের বক্তৃতা আর লেকচারবাজী, আর্কিটেক বিশ্বকর্মার ডিজাইন কনসেপ্টের নামে গাব বেচা শেষ। আসলে জিউস বুঝাইছে যে সেও অলিম্পাসের পাদদেশে একটা অ্যাম্ফিথিয়েটার বানাবে তারে দিয়ে, তাই বিশ্বকর্মা গাববাজী করে গেল স্টেজের ওপর। সাথে অবশ্য আশা আমনের মন্দির আর থরের প্রাসাদ রেনোভেশনের কাজটাও যদি পেয়ে যায়। যা হোক, বিশ্বকর্মার গাবের সাথে গল্পের কোনো সম্পর্ক নেই। বিশ্বকর্মার পরে শিব স্টেজে উইলো, এমনই প্রলয় নাচন দিল যে, বিশ্বকর্মার ডিজাইন আর্থকুয়েক-প্রুফ বলে সার্টিফিকেট পেয়ে গেল।
এর পরে শুরু হইলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নাচতে নামলো রম্ভা আর ঊর্বশী। গাছের বল্কল পরিধান কইরা এমনি ভারত নাট্যম নাচলো যে, জিউস পর্যন্ত দুইপাশে বসা বউ হেরা আর কন্যা এথেনারে লুকায় তিনবার ওয়াশরুম ঘুইরা আসছে। নাচের শেষের দিকে দ্রুততার জন্য যখন কটিদেশের বল্কল উড়ু ছাড়ায় কোমরের ওপর উঠে যাচ্ছিল, তখনি অডিটোরিয়ামের পেছন থেকে একটা রাগান্বিত চিৎকার শোনা গেল, "লাড়ায়া দে..."; কিন্তু অনেক খুঁইজাও চিৎকারের উৎস খুঁইজা পাওয়া গেল না।
অডিটোরিয়াম আবার ঠাণ্ডা হবার পর শুরু হলো এথেনা, হেরা আর আফ্রোদিতির ফ্যাশন প্লাস স্ট্রিপ শো। যে শো দেখে ঐ ব্যাটা ভেড়ার রাখান প্যারিসের মাথা আউলায় গেছিল। অবশ্য আজকের অনুষ্ঠানে প্যারিস তো দূরের কথা, কোনো মানুষই অ্যালাউড না, তাই আরেকটা যুদ্ধ লাগারও কোনো সম্ভাবনা নাই। যা হোক, তিনজনের ক্যাটওয়াকের শেষে স্ট্রিপ শুরু হইলো, এথেনা আর হেরার পরে আফ্রোদিতি বিবসনা হবার সাথে সাথে... "ঐ... লাড়ায়া দে..." তিন দেবী বিদ্যুৎগতিতে নিজেদের বুক ঢাইকা স্টেজের পিছে গিয়া লুকাইলো। "এইসব আনকালচার্ড আফ্রিকান আর সাউথ আমেরিকান দেবতাগুলারে যে কে কইছিল দাওয়াত দিতে" বলে একটা গুঞ্জন উঠলো! কিন্তু লাভ হইলো না। কে যে কারে লাড়ায়া দিতে কইলো খুঁইজা পাওয়া গেল না।
লাড়ানি ব্রেক শেষে আবার শুরু হইলো অনুষ্ঠান। শেষ পর্যায়, দি হট পিনাপ শো শুরু হবে। তিন আরব কন্যার সেক্সী লেসবিয়ান শো। অডিটোরিয়াম পুরা লক, ক্যামেরা তো দূরের কথা মাছিও যেন গলতে না পারে... হাজার হোক উজ্জা, মানাত আর লাত সম্মানিত দেবী। দেবতাকূলের অনুরোধে প্রাইভেট শো করতে রাজী হইছে, শুধুমাত্র এন্টারটেইনমেন্ট পারপাসে। তাদের শো শুরু হবার সাথে সাথে দেবতারা নড়েচড়ে বসলো। দেবীদের শুরু হলো চরম অস্বস্তি। তার পরেও সবার চোখ আল্লার তিন কন্যার ওপর। তিন বিবসনা দেবীর শীৎকারে অডিটোরিয়াম কাঁপছে। শুধু দেবতা কেন, দেবীদের অবস্থাও কাহিল। বোঝা যাচ্ছে ভলান্টারি হলেও এই শো তিন কন্যার ফিউচার লাইফের জন্য ক্রুশাল। তাদের আর কাজের অভাব হবে না। দেবরাজ ইন্দ্র মতলব ভাঁজছে কেমনে এই তিনজনকে হিমালয়ে স্থায়ী করে রেখে দেয়া যায়, কার সাথে বিয়া দিলে সেও তার ভাগ পাইতে পারে... ! জিউস করুণ দৃষ্টিতে হেরার দিকে তাকায় দীর্ঘশ্বাস ফেলতে লাগলো। আমন আর ওডিন পাশাপাশি বইসা নিজেদের মধ্যে লাতের শেভড পিউবিক আর মানাতের হিয়ারি আন্ডার আর্ম নিয়া গবেষনা শুরু কইরা দিল, আর মনে মনে উজ্জার জিভের টেস্ট কেমনে নেয়া যায় মতলব খুঁজতে লাগলো।
স্টেজের ওপর লাত, মানাত আর উজ্জার যখন চরম মূহুর্ত উপস্থিত সাথে অডিয়েন্সেরও শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা, ঠিক তখনি "ঐ উষ্ট্রীর পুত, লাড়ায়া দে...!!!" সাথে সাথে লাইট জ্বলে উঠলো, খোঁজ দ্যা সার্চ শুরু হইলো কে তাদের স্ক্যান্ডাল রেকর্ড করার জন্য লুকায় ঢুকে পরছে। এই সুপার হট শো বাইরে বাইর হইলে কেলেঙ্কারী হয়ে যাবে, সেটা তো হতে দেয়া যায় না। স্টেজের ওপর তিন কন্যার যা অবস্থা, তাতে তারা ঠিক থামার মতো অবস্থায় ছিল না। তাই তাড়াতাড়ি করে বিশ্বকর্মা স্টেজের পর্দা ফেলে তিন হর্নি দেবীর প্রাইভেসির ব্যবস্থা করে দিল ঠাণ্ডা হবার জন্য।
মিনিট তিনেকের গরু খোঁজার পরে লাড়ানির পাবলিকরে পাওয়া গেল। এক কোণায় আধা অন্ধকারে আল্লা বইসা আছে। যেহেতু নিরাকার, তাই হাত পা মাথা নাই। খালি একটা আধাস্বচ্ছ অবয়ব, আর কোমরের কাছে তার ঈমান ধইরা বইসা আছে চেলা মোহাম্মক। আল্লার না, নিজের। আর সে জন্যই আল্লারে চরম মূহুর্তে চিল্লানি দিতে হইছিল। এমন অশালীন আচরন কোনো দেবতাই আশা করে নাই। এমনই আনকালচার্ড অডিয়েন্স যে কি না নিজের মেয়েরে দেখেও... এমন অডিয়েন্স থাকার চেয়ে কোনো অডিয়েন্স না থাকাই ভাল। তার ওপর নিজে আসছে তাই না, সাথে কইরা একটা মানুষও নিয়া আসছে তার ঈমান ঠিক রাখার জন্য। সবাই মিল্লা আল্লা আর সাথে মোহাম্মকরে চিরকালের জন্য বাইর কইরা দিল লাত্থি দিয়া। এই অপমান আল্লা বা মোহাম্মদ কোনোদিন ভোলে নাই। দুঃখে আল্লা পৃথিবী ছেড়ে সাও আসমানের আগায় চলে গেল, আর মোহাম্মক রাগে দুঃখে অপমানে কাফের মারা শুরু করলো।
সেই থেকেই মোহাম্মক আল্লা ছাড়া অন্য কোনো দেবতার ফলোয়ার দেখলেই "লারায়া দে..." বইলা তলোয়ার নিয়া ঝাপায় পড়তো। কালক্রমে অনেক কিছুই বিবর্তিত হয়। "লারায়া দে" কথাটারও বিবর্তন হইছ... কালক্রমে পরিবর্তন হতে হতে আজকে আমরা যা শুনি তা হলো "নারায়ে টাকবির..."।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন