লিখেছেন থাবা বাবা
চাপা-০১১
মোহাম্মক কিছুতেই জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে পারতাছে না। কোনো একটা গোত্র ধ্বংস করার পরেও তাদের জনসংখ্যা দশমাস দশদিনের মাথায় কমপক্ষে দ্বিগুণ হয়ে যাইতাছে। কোনোভাবেই তার সাহাবীদের থামানো যাইতাছে না। দখল করা গোত্রের পোলাগুলারে বিনাশ করার পরে এরা তলোয়ার ধোয়ারও দরকার মনে করে না, তার আগেই গনিমতের মালের ওপরে ঝাপায় পরে। এমন করলে তলোয়ারে জং ধইরা যায়, এইটা কে তাদের বোঝায়! আল্লার দোহাই দিয়াও লাভ হইতাছে না। হইবো কেমনে? সাহাবীগো লিডার মোহাম্মক্কই তো তাদের পথপ্রদর্শক। তাই আল্লার দোহাই দেয়ার আর চেষ্টা করে না মোহাম্মক। কিন্তু সমস্যা হলো, স্ব-বৎস দুধেল উট ভাল দামে বেচা যায়, স্ব-বৎস দুধেল গনিমতের মাল কেউ নিতে চায় না।
প্র্যাওইই মোহাম্মক এইটা নিয়া আল্লার দরবারে বিচার দিতো একটা ব্যবস্থা করার জন্য। তাই একদিন গিব্রাইল আইসা আল্লার শর্ট ম্যাসেজ দিয়া গেল। আল্লার ইচ্ছায় যে আসার সে আসবেই, মোহাম্মক শত চেষ্টা করলেও আটকাতে পারবে না। মোহাম্মক মনে মনে খেপলো... আল্লা এখন তার ওপরে কথা বলা শুরু করছে। আল্লা মোহাম্মকের ওপর খোদকারি শুরু করছে; ব্যাপারটা তার পছন্দ হইলো না। তাই গিব্রাইলরে দিল কৃষ্ণ ঝাড়ি। হালায় সেই দুই হাজার বছর আগে ষোল হাজার গুপিনী লইয়া ফূর্তি কইরাও দ্যাশের জনসংখ্যা একজনও বাড়ায় নাই, আর সে আর তার সাহাবীরা একটা কইরা গনিমতে মাল এস্তেমাল করে, আর তাতেই গোডাউনের উষ্ট্রদ্বার খুইলা যায়। ফাক ম্যান... এমনে চলতে থাকলে ইনকাম কমতে কমতে জিরো হইয়া যাইবো বাজারে। রেপুটেশন লাল হইয়া যাইতাছে এমনিতেই। কৃষ্ণ পয়েন্টে গিব্রাইল কোন জবাব দিতে পারলো না। তবে মোহাম্মক অনুমান করলো যে, কৃষ্ণ আন্ডারএজ আছিল, হের খালি জিনিসই খাড়াইতো, মাল পড়তো না, তাই জনসংখ্যা বাড়ে নাই। কিন্তু এইখানে তো কাহিনী অন্য।
গিব্রাইল কৃষ্ণের খবর দিতে না পারলেও অন্য জিনিস আইনা দিল। আল্লায় তো ভবিষ্যত দেখতে পারে, আল্লা তারে দিয়া ফ্রান্সের লুই ফর্টিনের গল্প পাঠায় দিল। লুই আছিল তার নামের মতোই লুইচ্চা। তারও মোহাম্মকের মতোই সমস্যা - জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা যাইতেছিল না। এমনে চললে তো রাজ্য ভাগ করতে করতে শেষে ঢাকার শাঁখারি পট্টি হয়ে যাবে, তাই শেষমেষ তার ডাক্তার ওরে পলিথিন এস্তেমাল করতে কইলো। আর পলিথিনের সাথে শুকরের চর্বি। গিব্রাইল আরো কইলো যে এই জিনিসই কালক্রমে কনডম হইছে। এই জিনিস নাকি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনে অব্যর্থ। সাথে কইরা স্যাম্পলও নিয়া আইছে কয়েকটা। মোহাম্মক তক্ষুনি গিব্রাইলরে বাইরে খাড়া করায় ঘরে গিয়া আয়েশা বিবির ওপর একটা অ্যাপ্লাই কইরা আইলো। হেব্বি খুশি সে। সামনে বনু অমুক গোত্র জয়ের টাইম আসতাছে, ঐখানেই এইটা এস্তেমাল করতে হবে। গিব্রাইলরে এই জিনিসের একটা বড় অর্ডার প্লেস করে দিল, সাথে অগ্রিম হিসেবে দশটা উটের দড়ি অগ্রিম, ডেলিভারির পরে উটগুলা দেয়া হবে। কনডম ডেলিভারি না, উটগুলার ডেলিভারি হইলে। গিব্রাইল তক্ষুনি টাইম মেশিনে কইরা দৌড় লাগাইলো।
মাস খানেক পরে বনু অমুক গোত্র দখলের পরে মোহাম্মক সবার তলোয়ার পরিষ্কার করাইলো আগে, তার পরে সাহাবীদের হাতে একটা কইরা বাক্স ধরায় দিল। নেক্সট কোন বাজারে কারে কতো ট্যাকায় বেচা যায় সেই হিসাব করতে করতে মাস খানেক কাইটা গেল, সাথে বাক্সও খালি। সবাই বাড়ি ফিরার প্রস্তুতি নিতাছে, দাসী বান্দি কোনটা কোন বাজারে নেয়া হবে তার হিসাব চলতাছে... এই সময় সবাই টের পাইলো কাম তো সারা। গিব্রাইলের জিনিসে কাম হয় নাই। ভাত খাইতে গিয়া দেখে আচার শেষ... মর জ্বালা, আচার শেষ হইবো কেন? এই ইনভেস্টিগেশন করতে অবশ্য শার্লক হোমস লাগে না, নিজেরাই বুইঝা লইলো। কি আর করা, কম দামেই বান্দীর বেডিগুলারে ছাইড়া দিতে হইলো। আল্লা এসেমেস পাঠাইলো গিব্রাইল নেটুয়ার্কে, “কইছিলাম না যে, যতোই পলিথিনের থইল্যা ব্যাভার করো না ক্যান যার আসার কথা, যেমনেই হোক না কেন, আমি তারে পাঠামুই। খিকয!”
আসল কথাটা হইলো মাথামোটা নুনু-চিকন সাহাবীরা জানতো না কেমনে কনডম এস্তেমাল করতে হয়। সামান্য বুদ্ধি খরচ কইরা বাইর কইরা নিবো সেই ক্ষমতাও তাগো ছিল না। প্যাকেট খোলার কায়দা তারা জানতো না। মোহাম্মক তাদের খাবারের টিন ধরায় দিছে, মাগার টিন কাটার যন্তর দেয় নাই। জিনিস দিলেও এস্তেমাল করার কায়দা বইলা দেয় নাই। যদিও গিব্রাইল প্রতি বাক্সের সাথে তিন পাতার লিখিত খেজুর পাতার ইউজার ম্যানুয়াল দিছিল, কিন্তু নিরক্ষর উটমূর্খ সাহাবীরা সেগুলা প্যাকেট খোলার কাজে লাগাইতে গিয়া সবগুলা কনডম ফুটা কইরা ফালাইছে। আর ফুটা কনডমে কী হয় সেটা তো আর ব্যাখ্যা করা লাগে না। কিন্তু মোহাম্মক জানতো না এই কথা। সে ভাবলো আল্লার ওয়ার্নিং ফলে গেছে। আল্লা যারে পাঠাবে, সে দরকার হলে থইল্যা ভেদ কইরাই আসবে।
আল্লা যারে আনবে বলে মনস্থ করছে, সে আসবেই। দরকার হইলে আল্লা নিজে আইসা কনডম ফুটা কইরা দিয়া যাবে।
ভগ্ন-মনোরথে এর পরে থেকে মোহাম্মক কনডমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি কইরা দিল, বইলা দিল কনডম এস্তেমাল করা আর ভ্রূণ হত্যা একই জিনিস। এমনিতেই বান্দীর বাজারে ভাল দাম তো পায়ই না, উলটা এই জিনিসের জন্য গিব্রাইলরে মাসে ১০টা কইরা উট দিতে হয়। তার চেয়ে তাদের খাস আরবীয় নিয়মই ভাল, অন্তত কোনো উট খরচ হয় না। আর আল্লায় তো কইছেই যে, মুখ আইলে খানা খাইদ্যও আইবো। শেষমেশ আরবীয় আজলই ভরসা। তাই এর পর থেকে গনিমতে মাল এস্তেমাল করার আগে মোহাম্মক সবাইরে ওয়ার্নিং দিয়া দিত যে, “তোমরা আজল করতে পার, কিন্তু আল্লা যারে আনবে সে আসবেই”, কী দুঃখ থেইকা কথাডা কইতো সেটা তো আর কেউ জানতো না! মাসে মাসে দশটা কইরা উট, সেই কষ্ট কি সহজে ভোলা যায়!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন