এবারে আল্যাফাকে বিশ্বাস আনতেই হলো। সবই তার ইচ্ছা। তার হুকুম ছাড়া গাছের একটা পাতা তো নড়েই না, এমনকি লেখার একটা পাতাও বাদ পড়ে না। ঘটনা হচ্ছে এই: এই রচনার লেখক তাঁর লেখাটা আমার কাছে পাঠিয়েছিলেন, অথচ আমি সেটা পেয়েছিলাম অসম্পূর্ণ, লেজ-কাটা অবস্থায়! এবং আমি, নাদান নাস্তিক, সেটা না বুঝেই অসম্পূর্ণ লেখাটি ছাপিয়ে দিয়েছি। আজ লেখকের কাছ থেকে পাওয়া এই রচনার লেজাংশ জুড়ে দিয়ে আবার প্রকাশ করছি। - ধর্মপচারক
লিখেছেন শুভজিৎ ভৌমিক
জেহাদি মুসলিম সমাজের একটা পুরাতন অভ্যাস আছে। ধরা যাক, একটা নতুন বিষয় আবিষ্কৃত হলো। সাথে সাথে ইসলামি ব্লগবাজেরা আরবী ডিকশনারি নিয়ে গবেষণায় বসে পড়েন আয়াত খুঁজতে, যে সেই বিষয়টা কত আগেই ইসলামে বলা হয়ে গেছে। আল্লাহ'র রহমতে তাদের সাকসেস রেট শতভাগ।
এই বিষয়টা এখন আর কারোই অজানা নেই যে, ইসলামের সবচেয়ে বড় দুশমন কাফেরি দেশ আমেরিকায় পেয়ারা নবী হযরত মুহম্মদকে নিয়ে একটা চলচ্চিত্র বানানো হয়েছে। এই নিয়ে সমগ্র মুসলিম জাহানের নুনুভুতি যারপরনাই আহত হয়েছে। তারা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে এবং দিচ্ছে বিভিন্ন জায়গা। বেশ কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে, ফাকিস্তানি রেলমন্ত্রী ছবির পরিচালকের মাথার দাম ঘোষণা করেছেন এক লক্ষ ডলার। লিবিয়াতে আমেরিকান দূতাবাসে আগুন দেয়া হয়েছে।
আমেরিকার ইসলাম ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের জবাব দেয়ার অংশগ্রহণে বাংলাদেশের ইসলামি ব্লগসমাজ পিছিয়ে থাকবে কেনু? এ তো তাদের ঈমানি দায়িত্ব! আসুন দেখা যাক, কয়েকদিনের মধ্যেই কী ধরনের পোস্ট নাজেল হতে পারে সোনা, সবুজ বাংলা, আল বাইয়্যেনাত জাতীয় ব্লগগুলোতে:
"প্রমাণিত হইলো, চলচ্চিত্র বিষয়টার আবিষ্কারক ওয়ান অ্যান্ড অনলি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন।" সবাই বলেন সুবহান আল্লাহ !
আমেরিকান শালারা চলচ্চিত্রে হাত দেয়ার ১৪০০ বছর আগে ইসলাম দিয়া রাখছে চলচ্চিত্রের আলামত। ইহুদি নাছারাগুলা খালি সেইগুলা কপি-পেস্ট করতেছে।
খেয়াল কইরা দেখেন ভাইয়েরা, একটা সিনেমাতে আসলে কী কী থাকে? নায়ক, নায়িকা, ভিলেন, নাচ-গান থাকে একটা সিনেমায়। এই নায়ক নায়িকাদের পৃথিবীতে প্রথম আগমন, দ্যা কামিং, ঘটে ইসলামের মাধ্যমে। আমাদের আদম-হাওয়া হইলেন পৃথিবীর সর্বপ্রথম নায়ক-নায়িকা, যাদের প্রেমের বাম্পার ফলন হিসাবে আমরা দুনিয়াতে আইছি। সুবহান আল্লাহ!
এক নজরে ইসলাম থেইকা বিভিন্ন ভাবে চুরি করা ছবিগুলার তালিকা:
১. মমিনদের জন্য যেমন অজস্র রসময় কথা গুপ্ত থাকে হাদিসে, তেমনই চলচ্চিত্রের ব্যাপারগুলাও এতোদিন গুপ্ত ছিলো কোরানে। নিচের ছবিটি দেখা যাক:
হে হে হে। কী বুঝলেন মোমিন ভাইসকল ? এরপরেও আপনারা তার কোন কোন অবদানকে অস্বীকার খাইবেন ?
২. থ্রি এক্স কইতে আপনারা কী বোঝেন? হে হে হে, ছোট ভাইয়েরা কানে হাত দাও, তোমাগো এডি বোঝনের বয়স হয় নাই। এই থ্রি এক্স জিনিসটা আইছে মূলত ইসলাম থেইকাই। আমাদের মহানবীর জীবনখানাই তো এক জলজ্যান্ত থ্রি এক্স !
৩. এখন কথা হইছে, এই জীবনজোড়া থ্রি এক্সের এক পর্যায়ে আমাদের পেয়ারা নবী শাদী করলেন ৬ বছর বয়সী হযরত আয়েশারে। এই বাল্যবিবাহের জন্য কাফিরদের শুরু হয়া গেলো মাথাব্যাথা। মুক্তি পাইলো বাংলা ছবি "স্বামী কেন আসামী - দ্য ক্রিমিন্যাল।"
৪. নূহ নবীর নৌকার বিষয়ে আপনেরা সকলেই অবগত আছেন। ব্যাপার হইছে, এই নূহ নবীর কাহিনী নিয়াই হারামজাদা কাফের জেমস ক্যামেরন বানাইছে টাইটানিক ছবিটা। নীচে দেখা যাক নূহের নৌকা আর টাইটানিকের একটি তুলনা। তেলেছমাতির দিক থেইকা বহুত আগায়া আছে নূহ নবীর নৌকাঃ
৫. অ্যাকশন ছবির ব্যাপারে আমাদের মুসলিম উম্মাহ'র ধারেকাছে কেউ নাই। যাবতীয় অ্যাকশন ছবির ধারণা আসছে ইসলামিক জেহাদ থেইকা। আজকে হলিউড থেইকা শুরু কইরা তামিল ছবি পর্যন্ত যেসব অ্যাকশন দেখায়, সবেরই মূলে আছে ইসলাম। এছলামে জেহাদের কথা ১৪০০ বছর পূর্বেই বইলা দেয়া আছে, তাদের হত্যা করো যেখানে পাও সেখানেই !!
৬. সম্প্রতি মালাউনদের দেশ ইন্ডিয়াতে বানানো হইলো জিসম টু। সেই ছবি আপনাদের মিস করার কথা না। ছবির মূল আকর্ষণ ছিলো পর্নস্টার সানি লিওন। সানি লিওন যে খেইল দেখানোর জন্য বিখ্যাত, মুহম্মদের বিবিরা ঠিক সেইভাবেই তার সামনে বিছানায় আইসা উপস্থিত হইতো। এই বিষয়টা আর কেউ বুঝুক না বুঝুক, সানি লিওন পরিষ্কার ফকফকা ভাবে বুঝতে পারছিলেন।
খবরে প্রকাশ, বিছানায় "ওইসব" করতে যাওনের সময় সানি লিওনের মনে ইসলামিক ধর্মভাব জাগ্রত হয়। থ্রি এক্সরে ইসলামের সাথে মিলায়া তিনি বুঝতে পারলেন যে, ইসলামই থ্রি এক্স, আর থ্রি এক্সই ইসলাম। তাই তিনি কলেমা তাইয়্যেবা পইড়া ইসলাম গ্রহণ করলেন। সুবহান আল্লাহ! মোসাম্মৎ সানি লিওনের জন্য কয়টা লাইক ?
৭. যাবতীয় সাই-ফাই ছবি অনুপ্রাণিত হইছে ইসলাম থেইকা। সাই-ফাই ছবিতে আমরা যেইসব তেলেছমাতি দেখি, ইসলামও প্রায়ই সেইরকম তেলেছমাতি দেখায়। এইসব তেলেছমাতি আবার আল্লায় দিলে সায়েন্স দিয়া জাস্টিফায়েড। এই যেমন ধরেন: মোবাইল টেকনোলজি দিয়া ১৪০০ বছর আগে আল্যাফাকের কাছ থেইকা দুনিয়াতে কোরানের ডেটা ট্র্যান্সফার। এইখানে পাওয়া যাবে ইসলামিক সায়েন্স ফিকশন নিয়া কিছু ব্যাপক গবেষণা।
এইরকম আরও উদাহরণ দেয়া যায়। পশ্চিমা ষড়যন্ত্র, ইহুদি, নাছারা, ফাসিক, কাফির, নাস্তিক, মালাউন, হিন্দু, ভারতীয় দালাল আর ইন্ডিয়ান এজেন্টদের জন্য আজকে ইসলামের আকাশে অমানিশার অন্ধকার, দ্যা ডার্ক নাইট রাইজেস।
আপনারা বুঝতেই পারতেছেন, চলচ্চিত্র নির্মাণে অনেক পিছায়া আছে মোমিন মুসলমান সমাজ। তাই আসেন আমরা ইহুদি নাছারাদের উচিত শিক্ষা দেই। চলচ্চিত্র শিল্পে ইসলামরে ফুল গিয়ারে আগায়া নিয়া যাই। আমরা দুনিয়ার সকল মোমিন মুসলমান জেহাদি ভাই-বেরাদার মিলিয়া আসেন, ইসলামের উপর আর কী কী চলচ্চিত্র বানানো যায়, তার একটা তালিকা তৈরি করি। আমীন, চুম্মা আমীন !
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন