আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বৃহস্পতিবার, ১ নভেম্বর, ২০১২

মুহাম্মদ হিমুর কৈলাসযাত্রা

লিখেছেন হিমালয় গাঙ্গুলী 

ঝোলাটা কাঁধে চাপিয়ে আমি হাঁটা শুরু করলাম। নগর পরিব্রাজনের উদ্দেশ্যে যাত্রা না, একেবারে অগস্ত্য যাত্রা। আমার অপরাধ গুরুতর, আমি মানুষের ধর্ম নাশ করে বেড়াচ্ছি।

পাকা খবর আছে, কোরাইশরা আমাকে গরুখোঁজা খুঁজছে। কোনোভাবে ধরা খেয়ে গেলে আর দেখতে হবে না। স্ট্রেইট কল্লা নামিয়ে দেবে। আমার বাবা তার বিখ্যাত উপদেশ মালায় বলেছেন, “জান বাঁচানো ফরজ।" আমি ফরজ পালন করতে গিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি।

আমার সহ-হন্টক নাপিতসম্রাট জিব্রাইল। সে হাঁটার মধ্যে মাঝেমাঝে থমকে দাঁড়াচ্ছে এবং বিড়বিড় করে কী কী যেন বলছে। আমি কান পেতে শোনার চেষ্টা করলাম। জিব্রাইল বলে যাচ্ছে: “এস/সচন্দন/পুষ্প/বিল্বপত্রাঞ্জলি/............/দুর্গায় নমঃ’’

আমি ধাক্কার মত খেলাম। আমার দলের লোক হয়েও সে মালাউন টাইপ কথাবার্তা বলছে। ঘটনা খারাপ। আমি গম্ভীর গলায় বললাম, “এই সবের মানে কী?”

জিব্রাইল কাঁচুমাচু করে বলল, “এক জেনানাকে দেখার পর থেকে মনটা কিঞ্চিৎ চঞ্চল হয়েছে।”

জেনানা শব্দটা শুনলেই আমার জেনা করতে ইচ্ছে করে। জিব্রাইলের কাহিনীতে যথেষ্ট যৌনক্ষুধা বোধ করলাম। 

শরীর গরম থেকে হঠাৎ আমার মেজাজ গরম হয়ে গেল। জিব্রাইলকে কষে একটা থাপ্পড় লাগালাম। জিব্রাইল হতভম্ভ হয়ে গেল। ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞাসা করল, “হুজুরে আলা, গোস্তাকি মাফ হয়, কী অপরাধ করেছি, জনাব? বললে মনটা শান্ত হত।"

আমি উদাস গলায় বললাম, “আমাকে না দেখিয়ে কোনো বেগানা নারীর প্রতি দৃষ্টিপাত ইছলামে সম্পুর্ন নিষিদ্ধ। এই গুনাহের শাস্তি হিসেবে আল্লাহ তোমাকে এই থাপ্পড় পাঠিয়েছেন, আমি উছিলা মাত্র। বল আলহামদুলিল্লাহ।”

জিব্রাইল বিড় বিড় করে বলল, “ আল হামদুলিল্লাহ”

আমাকে আর কিছু বলতে হল না। জিব্রাইল তার অন্তর্বাসের চিপা থেকে একখানা ছবি বের করল। 

আমি ছবি দেখলাম। যে নারীকে দেখে জিব্রাইলের মন কিঞ্চিৎ চঞ্চল হয়েছে, তাকে দেখে আমার শরীর-মন দুটোই চঞ্চল হয়ে গেল। এই মেয়ের কাছে বেহেস্তের হুর মাতারি শ্রেণীর। আমি মনের অজান্তে আবৃত্তি করে ফেললাম:
“কে বলে শারদ শশী সে মুখের তুলা
পদনখে পড়ে আছে তার কত গুলা” 
জিব্রাইল এই মেয়ে সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য দিতে পারল না। যেটুকু জানা গেল, তা হচ্ছে:

১) এর নাম দুর্গা (জিনিসপত্রের যে সাইজ দেখছি, তাতে দুধ-গা নাম হওয়া উচিত ছিল)

২) এর স্বামীর নাম শিব কুমার। পেশায় বৃষপালক, সারাদিন গাঁজা খায়। (জিব্রাইল হারামজাদাও গাঁজা খায়, এই দুইটাকে একসাথে বসিয়ে দিতে পারলেই কেল্লা ফতে)

৩) প্রতিবছর সে হিমালয় এলাকায় “মহিষাসুর মর্দিনী” নামক যাত্রাপালায় অভিনয় করতে আসে। (মর্দিনী মানে কী, কে জানে! মাতারী মনে হয় মহিষাসুরকে মর্দন করে)

মহিষাসুর চরিত্রটি যে ভাবে হোক, সিস্টেম করতে হবে। আমি জিব্রাইলকে শিব বাবাজির কাছে পাঠিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিলাম। তার কাজ হবে শিবকে গাঁজার নানা প্রিপারেশন খাইয়ে দিলখোশ রাখা। অরিজিনাল মহিষাসুরকে কী করা যায়, সেই ধান্ধা ভাঁজতে ভাঁজতে আমি বোরাক এক্সপ্রেসে চড়ে বসলাম। 

ঝাড়া তিন ঘন্টা পর আমি এবং জিব্রাইল হিমালয়ের পাদদেশে পৌঁছালাম। আকাশে অর্ধেক চাঁদ, মনে হচ্ছে, জোছনায় দুনিয়া ভেসে যাচ্ছে। জিব্রাইলের বন্ধু মিকাইল হারামজাদাকে কষে থাপ্পড় মারা দরকার। আরবে এই সৌন্দর্যের ছিটেফোঁটাও নেই। মালাউন দেশে একেবারে আবহাওয়া ঢেলে দিয়েছে। হারামজাদা আবহাওয়ার ফেরেশতা হয়েছে! বদের হাড্ডি! 

জিব্রাইল বিড়বিড় করে যাচ্ছে: “যা দেবি সর্বভুতেষু শক্তি রূপেন সংস্থিতা...”

আমি গভীর আনন্দ বোধ করলাম। দেবীকে শক্তি দেখানোর ব্যবস্থা করছি। ৩০ অশ্বশক্তি দিয়ে একেবারে ভূতের হিসু বানিয়ে ফেলব। ঘুঘু, ফাঁদ সব একসাথে দেখিয়ে দেব।

যাত্রার ব্যাক স্টেজে দাঁড়িয়ে আমার আক্কেলগুড়ুম হয়ে গেল। দুর্গার সাথে আরো দুটো কচি মাল দেখা যাচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে, বোরাকের মতই একটা মিক্সচার প্রানী (হাতির মাথা, মানুষের বডি) বিরাট ভুঁড়ি নিয়ে আশে পাশে ঘুরঘুর করছে। তার পাশে আবার একটা কলাগাছ, সেই গাছে দুটো বেল ঝুলছে। জিব্রাইল জানালো পেট মোটা লোকটার নাম গণেশ, এই কলাগাছ নাকি তার বউ। আমি আকাশ থেকে পড়লাম। জিব্রাইল তথ্য দিল, আরো একটা ছেলে আছে, ঘাটু গানের ছেলে, নাম কার্তিক। অতি ভাল কথা। দু'জনই রমণীবঞ্চিত ক্ষুধার্ত পুরুষ।কার্তিককে আয়েশা আর গণেশ মটকু মিয়াকে খাদিজা বেগমের ঠিকানা দিয়ে এবং ভুজুং ভাজুং বুঝিয়ে আমি বোরাকে উঠিয়ে দিলাম। দু'জনের কাছে একটা করে হাত চিঠি পাঠালাম, 
৭৮৬
খাদিজা বেগম / আয়েশা খাতুন
দোয়াগো,
পরসমাচার এই যে, আল্লাহের কাজে হঠাৎ ভারতভ্রমণে আসিতে হইয়াছে। কোনোরূপ সংবাদ দিয়া আসিতে পারি নাই, ইহাতে কিঞ্চিৎ চিন্তাযুক্ত আছ বলিয়া বোধ করিতেছি। আমার অবর্তমানে তোমাদিগের খেদমতের নিমিত্ত দুইটি ক্রীতদাস পাঠাইলাম। আমি নুতন ওহীপ্রাপ্ত হইয়াছি, ইহাতে বলা হইয়াছে, স্ত্রীলোক তাহার ক্রীতদাসের সহিত পুরুষের অনুরূপ যৌনসম্পর্ক স্থাপন করিতে পারিবে।
বিশেষ আর কী। ক্রীতদাসদ্বয়ের সদব্যবহার করিয়া দোজাহানের অশেষ নেকী হাছেল কর, আল্লাহের দরবারে এই দোয়া করি। আমিন।
ইতি
আরজগুজার
তোমাদের হতভাগ্য পতি।
জিব্রাইল আসলেই কাজের ছেলে। এর মধ্যে সে ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে। মহিষাসুরকে গাঁজা খাইয়ে বেহুঁশ করে পাছায় লাথি দিয়ে হিমালয় থেকে ফেলে দিয়েছে। আমি জিব্রাইলের দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতায়-মরে-যাচ্ছি এমন একটা ভাব করলাম। জিব্রাইল আমার কৃতজ্ঞতা পাত্তা দিল না। সে অতি গম্ভীর ভঙ্গিতে তরতর করে পাহাড় বেয়ে উঠে গেল। পাহাড়ের চূড়ায় শিব বাবাজী গাঁজার মচ্ছব বসায়। আমি দেরি না করে মহিষাসুরের জায়গায় দাঁড়িয়ে গেলাম এবং মর্দন শুরু হবার অপেক্ষা করতে লাগলাম। কচি মাল দুটো আরো রসবতী। এরাও মর্দন করবে কি না, কে জানে।

প্রায় দুই ঘন্টা আমি ঠায় দাঁড়িয়ে আছি, মর্দনের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। জিব্রাইল নিয়মিত ওহী মারফত খবর পাঠাচ্ছে। লেটেস্ট আপডেট: মহাদেব শিব এখন অ্যাপেটাইজার হিসাবে ভাং-এর শরবত খাচ্ছেন, এরপর চরস দিয়ে ডিনার হবে। আমার মন খুশি-খুশি লাগছে। আমার ডিনার হবে ফোরসাম দিয়ে। সাদা রঙের মালটার নাম সরস্বতী। স্ট্রাকচার দেখে ভার্জিন মনে হচ্ছে। আল্লাহ অসীম করুণাময়, নাহলে এই জিনিস আমার ভাগ্যে জোটার কথা না।

রাত বেড়ে যাচ্ছে কিন্তু মর্দন শুরু হচ্ছে না। জিব্রাইলের শেষ খবর অনুযায়ী, মহাদেব এখন ঘুমে। মহাদেব নেই এখন মহানবীর খেল শুরু হবে। এক বনে দুই বাঘ থাকে না। এক যাত্রাপালায়ও দুই "মহা" থাকা উচিত না। সবই আল্লাহের কুদরত। আমার সহ্য হচ্ছে না। তারপরও ধৈর্য ধরে বসে আছি। আমার বাবা তার বিখ্যাত উপদেশমালায় বলেছেন, “হে মানব সন্তান, তোমাদের বড়ই তাড়াহুড়া।”

পিতার উপদেশ শিরোধার্য। আমি তাড়াহুড়ার মধ্যে গেলাম না। ঢুলুঢুলু চোখ আর উত্থিত ঈমান নিয়ে আমি অপেক্ষা করতে থাকলাম এবং একসময় ঘুমিয়ে পড়লাম। স্বপ্নও দেখে ফেললাম। স্বপ্নে দুর্গা লক্ষ্মী এবং সরস্বতী ইয়া হাবিবি গানের তালে তালে আমাকে নগ্নবক্ষ নৃত্য দেখাল।

বিরাট হৈচৈ শুনে আমার ঘুম ভাঙ্গল। ঘটনা ভয়াবহ। শিব বাবাজির ঘুম ভেঙ্গে গেছে। জিব্রাইল হারামজাদা কুরবানী ঈদ এসে গেছে এই অজুহাতে শিবের ষাঁড় জবাই দিয়ে ফেলেছে এবং মুণ্ডুবিহীন ষাঁড় লাফাতে লাফাতে গিয়ে পড়েছে শিবের গায়ে। বৃষহত্যার দায়ে বাবা শিব তার বিরাট ভুঁড়ি নিয়ে জিব্রাইলকে তাড়া করছেন। 

আমি দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। এই নাপিতটার জন্য আমার ফোরসামের প্ল্যান মনে হয় মাঠে মারা গেল। আমি উঁকি মেরে দুর্গার পিনোন্নত পয়োধর দেখার চেষ্টা করলাম। চেষ্টা সফল হল না। লাস্যময়ী দেবি আমার দিকে বর্শার মত একটা জিনিস তাক করে আছেন। আমার ধারনা ছিল, অতি সুন্দরীদের হাতে ঈমানদণ্ড ছাড়া আর কিছু শোভা পায় না। আমার ধারনা সম্পূর্ণ ভুল। এই নারীর হাতে বর্শাদণ্ড ভালোই শোভা পাচ্ছে।

পরবর্তী ঘটনা ভয়ংকর। আমি আর জিব্রাইল ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটছি। আমাদের পেছনে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ছুটছে এক দল মালাউন। 

হিমালয়ের ফিনিক ফাটা জোছনায় আমরা দৌড়াচ্ছি। মানুষের স্বপ্ন তৈরিই হয়েছে ভাঙার জন্য। আমার নিষিদ্ধ স্বপ্নের ভাঙা টুকরো নিয়ে আমি এগোচ্ছি। আমার পেছন পেছন নিঃশব্দে আসছে দশমীর অসম্পূর্ণ চাঁদ। আমার মনে হল সমগ্র জগত সংসারই জোছনাধোয়া একটা অসম্পূর্ণ স্বপ্ন। চাওয়া-পাওয়ার চক্র কখনও সম্পূর্ণ হয় না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন