বুধবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১২

যুক্তির কাঠগড়ায় কুরান-হাদিস - ০১

লিখেছেন রাইট হার্ট

যুক্তি - ১

ইসলামে বর্ণিত সৃষ্টিকর্তা, যিনি কুরআনে নিজেকে 'আল্লাহ' নামে পরিচিত করেছেন, তিনি তাঁর ধর্মে মানুষকে দীক্ষিত করতে প্রলুব্ধ করেছেন বিধর্মীদের মালামাল লুটের প্রতিশ্রুতি দিয়ে । নিচে আয়াত দেখুন ~
আল্লাহ তোমাদেরকে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধলব্ধ সম্পদের ওয়াদা দিয়েছেন, যা তোমরা লাভ করবে। তিনি তা তোমাদের জন্যে ত্বরান্বিত করবেন । (কোরান ৪৮:২০) 
এভাবে বিধর্মীদের সাথে পরিচালিত ধর্মের নামে যুদ্ধে প্রাপ্ত মালামালের বন্টনের ব্যবস্থাও সেই অসীম শক্তিশালী আল্লাহ করে দিয়েছেন। এতে প্রাপ্ত মালের পাঁচ ভাগের এক ভাগ আল্লাহর এবং তার প্রাণপ্রিয় স্বেচ্ছাসেবী মুহম্মদের, যিনি নিজ উদ্যোগে আল্লাহর মনোনীত ধর্ম প্রচারে নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন। নিচে আয়াত দেখুন ~
কোন বস্তু-সামগ্রীর মধ্য থেকে যা কিছু তোমরা গনীমত হিসাবে পাবে, তার এক পঞ্চমাংশ হল আল্লাহর জন্য, রসূলের জন্য, তাঁর নিকটাত্নীয়-স্বজনের জন্য। (কোরান ৮:৪১) 
এ ছাড়াও আল্লাহ তাঁর শান্তির পথে ছুটে আসা পুরুষ সমাজের বিনোদনের জন্যে বিধর্মী স্ত্রী-কন্যাদের যৌনাঙ্গ তথা সম্ভ্রম ভোগের অনুমোদন দিয়ে রেখেছেন। এতে করে শান্তির পথে থাকা আল্লাহর বান্দারা ধর্মযুদ্ধে নিজেদের পুরুষাঙ্গের জ্বালা মেটাতে বন্দি রমণীদের ইচ্ছেমত ভোগ করতে ও বিক্রি করে কিছু আয় করতে পারবেন। আয়াত দু'টি দেখুন ~
এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। (কোরান ৪:২৪)
হে নবী! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি মোহরানা প্রদান করেন। আর দাসীদেরকে হালাল করেছি, যাদেরকে আল্লাহ আপনার করায়ত্ব করে দেন। (কোরান ৩৩:৫০)
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, আল্লাহ নামক সৃষ্টিকর্তার শান্তির ধর্ম একজন পুরুষকে দিতে পারে স্বার্থ উদ্ধারের এক মহান পথের সন্ধান, যেখানে পকেট ভর্তি + পুরুষাঙ্গ তৃপ্তি দুটোরই নিশ্চয়তা দিচ্ছেন সেই মহান কারিগর।

যুক্তি - ২

কোরান ৪৯:১৬ অনুসারে আল্লাহ সর্বজ্ঞ অর্থাৎ তিনি 'কী ঘটছে' বা 'কী ঘটবে' সে বিষয়ে জ্ঞাত রয়েছেন। আবার কোরান ২:১৫৫ অনুসারে আল্লাহ তার বান্দাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরীক্ষা করে দেখবেন, সে বিষয়ে জানাচ্ছেন। 

কিন্তু প্রশ্ন হল, যিনি সর্বজ্ঞ আছেন, তিনি কোন উদ্দেশ্যে পরীক্ষার কথা উল্লেখ করবেন, কেননা ফলাফল তো তাঁর জানা থাকার কথা! এখন আপনি যদি দাবি করেন, মানুষ তার কাজের দ্বারা ফলাফল পরিবর্তন করতে পারে, তাতে আবার অন্য এক প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। যদি মানুষের এমন ক্ষমতা থেকে থাকেই, তাহলে বলা যায়, আল্লাহ সর্বজ্ঞ নন, যেহেতু তিনি পরিবর্তন হওয়া ফলাফল সম্বন্ধে জ্ঞাত নন! তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, কুরানের উল্লেখিত দুই আয়াত পারস্পরিক সাংঘর্ষিক! এক আয়াত সত্য ধরলে অন্য আয়াত এখানে মিথ্যা প্রমাণিত হচ্ছে।

কোরান ১০:১০০ অনুসারে আল্লাহর ইচ্ছে ব্যতিত কারো সাধ্য নেই তাঁর ওপর বিশ্বাস নিয়ে আসে। আবার কোরান ৪:৮৮ অনুসারে আল্লাহই তাদেরকে ভুল পথে অর্থাৎ খারাপ কাজে বা অবিশ্বাসি হওয়ার পথে চালিত করেন। 

প্রশ্ন হল, মানুষের খারাপ কাজ বা অবিশ্বাসী হওয়ার মূলে যদি সেই আল্লাহই থেকে থাকেন, তবে এমন বান্দাদের জাহান্নামের আগুনে পোড়ানো বা তাদেরকে ধরে ধরে হত্যা করো জাতীয় নির্দেশনা দেওয়ার অর্থ কী হতে পারে? এক্ষেত্রে 'আল্লাহ' নামক সৃষ্টিকর্তাকে শয়তান বলে বোধ হয়, যে নিজেই একজন মানুষকে ভুল পথে চালিত করে উক্ত ভুলের জন্যে সাজা নির্ধারণ করে রেখেছে!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন