সোমবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১২

যুক্তির কাঠগড়ায় কুরান-হাদিস - ০২

লিখেছেন রাইট হার্ট

যুক্তি – ৩ 

ইসলামে বর্ণিত সৃষ্টিকর্তা ‘আল্লাহ’ কর্তৃক প্রেরিত কুরানের দু'টি আয়াত দেখুন ~
So blessed is Allah, the best of creators.
এ সবই আল্লাহর আশীর্বাদ, যিনি সৃষ্টিকর্তাদের মাঝে অন্যতম।
(Quran 23:14) 
Do you call upon Ba'l and leave the best of creators – 
তোমরা কি বা’আল দেবতার এবাদত করবে এবং সর্বোত্তম স্রষ্টাকে পরিত্যাগ করবে।
(Quran 37:125) 
উক্ত আয়াতদ্বয়ে ব্যবহৃত আরবি শব্দ l-khāliqīna এর ইংলিশ প্রতিশব্দ Creators অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার বহুবচন। এখানে আল্লাহ নিজেই নিজেকে অন্যান্য সৃষ্টিকর্তা থেকে শ্রেষ্ঠ বা অন্যতম বলে স্বীকার করে নিচ্ছেন। প্রশ্ন হল, সৃষ্টিকর্তা আসলে কতজন? নাকি ‘আল্লাহ’ খ্রিষ্টানদের ‘গড’ বা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ‘কৃষ্ণ’-র অস্তিত্বও স্বীকার করে নিচ্ছেন? বিষয়টার সহজ ব্যাখ্যা মেলে যদি ধরে নেই, মুহম্মদ তার সৃষ্ট চরিত্র ‘আল্লাহ’-কে তৎকালীন মূর্তিপূজক সমাজে প্রতিষ্ঠা পাবার জন্য আল্লাহকে দিয়েই নিজের বাণী আনিয়েছেন যে উক্ত ‘আল্লাহ’ চরিত্র অন্যান্য পূজিত দেবতা বা ঈশ্বর থেকে শ্রেষ্ঠ, অন্যতম! 

যুক্তি - ৪ 
যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করে নেই, যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে। কাজেই আমার হুকুম মান্য করা এবং আমার প্রতি নিঃসংশয়ে বিশ্বাস করা তাদের একান্ত কর্তব্য।
(Quran 2:186) 
উক্ত আয়াত অনুসারে, আল্লাহ বলেছেন যে, তাঁর কাছে কোনো বিষয়ে প্রার্থনা করলে তা তিনি কবুল করে নেন। ধরে নিতে পারি, ইসলামে বর্ণিত সৃষ্টিকর্তা ‘আল্লাহ’ মিথ্যা বলেন না, ফলে কুরানের বাণীতেও তিনি কিছুই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন না! শর্ত শুধু একটাই যে, তাঁর উপর পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপনসহ তাঁর নির্দেশিত কুরানের বাণী মেনে চলা। এখন কথা হল, আল্লাহ কি তাঁর এই প্রতিশ্রুতি রাখতে প্রকৃতপক্ষেই সক্ষম? কেউ যদি শর্ত পূরণ করে ৩০০ বছর বেঁচে থাকার প্রার্থনা করে তবে কি তা মঞ্জুর হবে? আল্লাহর প্রিয় নবী মুহম্মদের কথাই ধরুন, যিনি মারা গিয়েছেন কোন পুত্রসন্তান না রেখেই, আপনার কি মনে হয় তিনি সন্তানের জন্যে আল্লাহর কাছে আর্জি জানান নি? আল্লাহর প্রিয় হয়েও যখন তাঁর প্রার্থনা পূরণ হয়নি, তখন আপনি কি করে ধরে নিচ্ছেন, আল্লাহ তাঁর প্রতিশ্রুতি রাখতে সক্ষম ! বস্তুত দেখা যাচ্ছে আল্লাহ এক মিথ্যাবাদী চরিত্র! 

যুক্তি - ৫ 

আল্লাহ দাবি করেছেন যে, পৃথিবীতে যত প্রাণী রয়েছে, প্রত্যেকেই মানুষের মতন একেকটি কমিউনিটি শ্রেণীবদ্ধভাবে বাস করে । আয়াতটি দেখুন ~ 
And there is no creature on [or within] the earth or bird that flies with its wings except [that they are] communities like you. (umamun means ‘communities) 
আর যত প্রকার প্রাণী পৃথিবীতে বিচরণশীল রয়েছে এবং যত প্রকার পাখী দু’ ডানাযোগে উড়ে বেড়ায় তারা সবাই তোমাদের মতই একেকটি শ্রেণীবদ্ধ জীব । 
(Quran 6:38) 
হাস্যকর বিষয় হচ্ছে, একজন সৃষ্টিকর্তার কাছে জাগুয়ার (jaguar), লেপার্ড (leopard) বা মাকড়সাদের (spiders) ব্যাপারে কোনো তথ্যই ছিল না। ফলে তিনি জানতেন না যে বহু প্রাণী আছে, যারা শ্রেণী বা দলবদ্ধভাবে থাকতে পছন্দ করে না। এ ধরনের মিথ্যা উদ্ধৃতি থেকেই প্রতীয়মান হয় কুরান রচয়িতা মুহম্মদের অজ্ঞতা। কেননা এটা আশা করাই যায়, একজন সৃষ্টিকর্তা, যিনি এত নিখুঁত (আপাত দৃষ্টিতে) সৃষ্টি করতে সক্ষম, তিনি এমন প্রাইমারি লেভেলের জ্ঞান নিয়ে কথা বলবেন না!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন