পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮
মহিলাদের জিহাদে যোগদান
ইসলাম বিশারদরা প্রায়শঃ বলেন যে, মহিলাদের জন্য প্রধান জিহাদ হচ্ছে হজ্জ। এটা সত্যি যে, এ ব্যাপারে কিছু হাদিস আছে (যেমন সাহিহ বোখারী ভলুম ২, বই ২৬, হাদিস ৫৯৫), কিন্তু যে বিষয়টা ইসলামী বিশারদরা চেপে যান তা হচ্ছে ঐ হাদিস অর্ধ সত্য। এই হাদিসের প্রসঙ্গ হচ্ছে এই যে, যখন বিবি আয়েশা জিহাদে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করলেন তখন নবীজি আয়েশাকে বলেছিলেন যে, তাঁর (আয়েশার) জন্যে সবচাইতে ভাল জিহাদ হবে হজ্জ মাবরুর (সিদ্ধ হজ্জ)।
এখন দেখা যায়, অনুবাদকরা তাঁদের ইচ্ছামত ব্রাকেটে (নারীদের জন্যে) জুড়ে দিয়েছেন। বিবি আয়েশা যখন জিহাদে যাবার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন তখন তিনি নিতান্তই নাবালিকা ছিলেন - তাই নবীজি হয়ত চাননি ঐ অল্প বয়সী মেয়েটা জিহাদে যোগদান করে বেঘোরে প্রাণ হারায়।
আমরা আরও দেখি, কেমন করে এইসব ইসলামী পণ্ডিতেরা, যাঁরা বেশীরভাগই পাশ্চাত্যের দেশে বাস করেন, তাঁদের দ্বৈত ভূমিকা দেখান - অর্থাৎ দুই মুখে কথা বলেন। যখন পাশ্চাত্যে থাকেন, তখন বলেন জিহাদ মানে মানসিক যুদ্ধ করা, নিজেকে উন্নত করার জন্যে, নিজের বিরুদ্ধে নিজেই যুদ্ধ করা। কী সুন্দর কথা! এ কথায় কার না মন ভিজবে! কিন্তু এই ইসলামী পণ্ডিতেরাই যখন ইসলামী স্বর্গে যাবেন, তখন বলবেন জিহাদ মানে ইসলাম প্রচারের জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম করা - কাফেরদের হত্যা করে বিশ্বব্যাপী ইসলাম কায়েম করা।
এই ব্যাপারেও আমরা লক্ষ্য করি ইসলামের অন্যায় আচরণ - মহিলাদের ওপর। শারিয়া আইন বলে মহিলাদের জন্যে জিহাদে যোগদান করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু যখন জিহাদে-লব্ধ লুটের মাল ভাগ হবে তখন মহিলা জিহাদিরা কোন নির্দিষ্ট ভাগ পাবে না। তারা শুধু পাবে একটুমাত্র পুরস্কার - এই আর কি।
দেখা যাক শারিয়া আইন এ ব্যাপারে কী বলে।
শারিয়া আইন ও ৯.৩ (ঐ বই পৃঃ ৬০১)জিহাদ বাধ্যতামূলক (O.ব্যক্তিগতভাবে) সবার জন্য (O.যারা সমর্থ, পুরুষ এবং মহিলা, বৃদ্ধ ও তরুণ) যখন শত্রু মুসলিমদেরকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলবে।
….একজন মহিলা যে জিহাদে যোগদান করবে, যখন শত্রু চারিদিকে ঘিরে ফেলবে তখন তার কাছে দু’টি সিদ্ধান্ত থাকবে যুদ্ধ করে মৃত্যুবরণ করা অথবা শত্রুর কাছে আত্মসমর্পণ করা, যদি মহিলা মনে করে যে আত্মসমর্পণ করলে তার প্রতি কোন অসদাচরণ করা হবে না। কিন্তু যদি মহিলা মনে করে যে আত্মসমর্পণের পরেও সে নিরাপদে থাকবে না, তখন তাকে লড়াই করতেই হবে, সে মহিলা কোনক্রমেই শত্রুর কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।
তাহলে আমরা দেখছি যে,মহিলারা জিহাদে যোগদান করতে বাধ্য, এমনকি জিহাদে তারা মৃত্যুবরণও করে নিতে পারে। লক্ষ্য করবেন, আজকাল বেশ কিছু ইসলামী আত্মঘাতী বোমারুরা হচ্ছে মহিলা। এই সকল মহিলারা যে অক্ষরে অক্ষরে শারিয়া আইন মেনে চলেছে, তাতে আমাদের কোন সন্দেহ থাকা উচিত নয়।
এখন আমরা পড়ব নিচের হাদিস, যেখানে মহিলা জিহাদিদের পুরস্কারের কথা বলা হয়েছে। এই হাদিস বেশ লম্বা, তাই প্রাসঙ্গিক অংশটুকুই উদ্ধৃত করা হবে।
সহিহ মুসলিম বই ১৯, হাদিস ৪৪৫৬ইয়াজিদ বিন হুরমু্য বর্ণনা করলেন যে নাজদা একটা পত্র লিখলেন আব্বাসকে পাঁচটা ব্যাপারে।
… আমাকে বলুন আল্লাহ্র রসুল (সাঃ) যখন মহিলাদেরকে জিহাদে নিলেন তখন কি রসুলুল্লাহ মহিলাদের জন্য যুদ্ধে-লব্ধ মালের (খুমুস) জন্যে কোন নিয়মিত অংশীদার করেছিলেন? … ইবনে আব্বাস উত্তরে লিখলেন: …কখনও কখনও রসুলুল্লাহ মহিলা জিহাদিদের সাথে মিলে যুদ্ধ করেছেন। এছাড়া মহিলা জিহাদিরা আহত যোদ্ধাদের সেবা করত। জিহাদে লব্ধ মালের কিছু পুরষ্কার মহিলারা পেত। কিন্তু রসুলুল্লাহ মহিলাদের জন্য কোন নিয়মিত অংশভাগ রাখেননি।…
(চলবে)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন