আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বৃহস্পতিবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৩

ইসলামোরফোসিস - ০৩

লিখেছেন কৌশিক

৪.
জয়তুনের মেসওয়াক দিয়ে দাঁত ঘসতে ঘসতে বায়তুল মোকাররামের ওজুখানায় দাঁড়াতেই নিয়মানুবর্তিতার অপূর্ব নিদর্শন দেখলাম। পায়ের গিরার ওপরে সবার প‌্যান্ট কাচানো। গিরার নিচে কাপড় পরিধান করা নিষেধ। আমার সঙ্গী দ্বীনি ব্লগার ভাই একটা ঘটনা বয়ান করলেন, অসমর্থিত সূত্রে, পায়ের গিরার নিচে কাপড় পরিধানকারীদের জন্য রয়েছে কঠিন আজাব। অজুখানার পাশে সাড়িসাড়ি এস্তেনজাখানা। আল্লাহর অসীম রহমতে সেখানে সবাই সুন্নত তরীকায় এস্তেনজা পালন করতেছে। কারো লজ্জাস্থানে নাপাকী যেন লেগে না থাকে, সেজন্য টয়লেট পেপার ঢিলা-কুলুবের মত ব্যবহার করে চল্লিশ কদম হাঁটতেছে। এটা সায়েন্টিফিক্যালী প্রমাণিত যে, চল্লিশ কদম হাঁটলে এস্তেনজার সকল ছিটেফোঁটা দূরীভূত হয়ে যায়। 

জুম্মার নামাজে আমরা কাঁধে-কাধ মিলিয়ে নামাজ পড়লাম। সমস্ত মুসলিম উম্মাহর জন্য শান্তি আর অমুসলিমদের হেদায়েতের জন্য দোয়া করা হলো। যদি হেদায়েত না দেয়া হয়, তবে তাদের ধ্বংস করে দেয়ার জন্য আল্লাহর কাছে কেঁদে-কেঁদে দোয়া করলাম। আমার দ্বীনি বুজুর্গ ভাই এত বেশি কাঁদলেন যে, তার দাড়ি মোবারক ভিজে গেল। 

নামাজান্তে বাড়ি ফেরার ইরাদা বদল করতে হলো। দ্বীনি ভাই তার বাড়ীতে দুপুরের মেহমান হবার জন্য অনুরোধ করলো। আমরা গাড়িতে করে তার বাড়ির দিকে রোক করলাম। গাড়ির সিডি প্লেয়ারে বাংলা অনুবাদসহ কুরআনুল মোবারকের মধুর তেলওয়াত এক ভিন্ন জাগতিক উপলব্ধি দান করলো। আমার দ্বীনি ভাই গাড়ী নিউডিওএইচএসের মধ্যে ঢোকানোর সময় ডান পায়ের এক্সেলেটারে একটু বেশি দাবালেন। বললেন, মহল্লায় ঢোকার সময় ডান পায়ে ঢোকা উচিত। সেজন্য ডান পায়ে একটু ভর বেশি দিলাম। 

বাসায় ঢুকে দ্বীনি ভাই সবাইকে সালাম দিলেন। ভাবীসাহেবা পর্দার অন্তরাল থেকে খায়রিয়াত জানতে চাইলেন। অতপর দ্বীনি ভাই আমাকে মেহমানখানায় তশরীফ রাখতে বললেন। ইরানী নকশার দস্তরখানা দেখে আমার সাহাবাদের আমলের দ্বীনি জীবনের কথা ইয়াদ হলো। টেবিলে খাদ্য গ্রহণের বিষয়ে নবীজির সম্মতি থাকতো না, তিনি পছন্দ করতেন জমিনে বসে খানাপিনা করতে। এতে সমস্ত মখলুকাতের জন্য শান্তি বর্ষিত হয়। 

দ্বীনি ভাই আমাকে বসার তরীকা শেখালেন। আল্লাহর কী অসীম দয়া। নবীজি এই বসার বিষয়ে তিনটা তরীকা আমাদের সামনে রেখেছেন। এমন জীবন পদ্ধতি, যা মানুষের প্রতিটা কাজে গাইডলাইন দিয়ে দিয়েছে এবং সবই বৈজ্ঞানিক, দেখে আমার মন ভরে উঠলো। খানা গ্রহণের সময় হাঁটু আসন করে বসা ঠিক নয়। এতে পেটে খাদ্য পৌঁছুতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। দ্বীনি ভাই এক পা ভেঙে বসা দেখালেন। দুই পায়ের পাতার ওপরে ভর করে বসা দেখালেন। 

খানা গ্রহণের সময় দোয়া পড়া জরুরি। যদি সম্ভব হয়, একটা হাদিস। প্রথমে একটু নুন দিয়ে শুরু করলে ভাল। এতে মুখ ও পেটের অভ্যন্তরে কোন খারাপ কেমিকেল থাকলে সেটা নষ্ট হয়ে যায়। এরপরে প্লেটের ডান দিকে ছোট ছোট লোকমায় খানা খাওয়া শুরু করতে হয়। খানার মাঝখানে আল্লাহামদুলিল্লাহ পড়তে হয়। অনেক তরকারি থাকলে প্রথমে ভাল তরকারিটা দিয়ে শুরু করা সুন্নত। আমাদের মসজিদের হুজুর বলেন, ভাল খানাটা আগে না খেলে লোভ থেকে যায়। সেজন্য সেটা আগে খাওয়া জরুরি। 

দ্বীনি ভাবীসাহেবানের রান্নার শুকরিয়া আদায় করে খানাপিনা শেষ করে আমি দ্বীনি জীবনের তাৎপর্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হই। এস্তেনজা থেকে শুরু করে খানাপিনায় এত বৈজ্ঞানিক জীবনপদ্ধতি ইসলাম তার উম্মতের জন্য তৈরি করেছে - যা কখনই কোনো মানবরচিত বিধান হতে পারে না। আহার শেষে আমার দ্বীনি ভাই মোনাজাত করেন, হায় পরোয়ারদেগার, আমাদের হালাল রুজি খাবার তৌফিক দান করো, পৃথিবীর সমস্ত মাখলুকাতকে হালাল রুটি-রুজির তৌফিক দান করো।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন