রিক্সা থেকে নামতে গিয়ে রিক্সার নাট-বল্টুতে মহিলাটির শাড়ির আঁচল আটকে গেলো। টান লেগে কিছুটা ছিঁড়ে গেলো কি না, বোঝা গেল না, কিন্তু সেই টানে তার পেটের কাছের কিছুটা অংশ যে উন্মুক্ত হয়ে গিয়েছিলো, তা নিঃসন্দেহ। কেননা নয়তো রাস্তার পাশে হেফাজতের তিন ছাগল-দাড়ির সদস্য মহিলাটির দিকে এগিয়ে আসতো না।
মুখে রাগ আর চোখে হিংস্রতা নিয়ে তারা মহিলাটির কাছে এগিয়ে গেলো। কাছে যেতেই তাদের চোখে মুখের রাগ আর হিংস্রতা বদলে গেলো কামাতুক দৃষ্টিতে। মহিলার উন্মুক্ত ফর্সা পেট আর কোমর থেকে তাদের তিনজনের কারোরই চোখ সরছে না। মহিলার কোমরে সুন্দর একটা তিল, একবার তাকালে আর চোখ ফেরানো যায় না। হাসনাতের খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো মহিলার ফর্সা কোমরে একটু হাত বোলাতে।
বড় হুজুর তাদের তিনজনকে এই রাস্তাটার ইসলামী পরিবেশ হেফাজত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। ইহুদী-নাসারাদের আধুনিক পোশাকে বা হিন্দুয়ানী পোশাক শাড়ি দেখলেই তাদের সেই নারীকে ১০-১২ টা বেত মারার কড়া নির্দেশ দিয়েছেন বড় হুজুর। দেশে ইসলাম কায়েম করতে নাকি এই ব্যবস্থার বিকল্প নেই। ওরা তিনজন কথাটা হৃদয় দিয়েই মানে। আল্লার ধর্ম ইসলাম যেভাবেই হোক প্রতিষ্ঠা করতেই হবে; তার জন্য যদি জান যায়, তাও কোনো পরোয়া নেই। দেশটা মালাউন সংস্কৃতিতে ভরে যাচ্ছে।
তাই গত চার দিন তারা পালা করে এই রাস্তাটা পাহারা দিচ্ছে। হুজুর টাইপের চেহারার হাসনাত কিছুটা এগিয়ে মহিলাটির সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। মহিলাটি ঘুরে দাঁড়ালো। হাসনাতের চোখ এখনো মহিলার নাভিতে আটকানো। অনেক চেষ্টা করেও সে চোখ ফেরাতে পারছে না বেহেস্তী শরাবের সেই কুয়ো থেকে। মহিলাটি অবাক চোখে হাসনাতের দিকে তাকিয়ে আছে, ছেলেটা এভাবে কী দেখছে, সে বোঝার চেষ্টা করেও বুঝতে পারছে না।
ওদিকে হাসনাতের চোখে কামের আগুন। ভাগ্য ভালো, আজ সে নতুন একটি জাঙ্গিয়া পরে বের হয়েছিলো, নয়তো এখন তার ঈমানদণ্ডের কুতুবমিনার-অবস্থা জুনিয়র দুই হেফাজতির সামনে প্রকাশিত হয়ে পরে একটা লজ্জাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়ে যেত। নিজেকে আর আটকে রাখতে না পেরে যা আছে কপালে ভেবে মহিলার কোমরে হাতটা সে গলিয়েই দিলো।
এটাও ইসলাম রক্ষার একটা কৌশল, এতে কোনো গুনাহ নাই; খালি সোয়াব আর সোয়াব। সাথে ফ্রি আরাম আর আরাম। আল্লার রাস্তায় ইসলামের জন্য যা করা হয় সবই হালাল, আমরা তো আল্লার সৈনিক। আমাদের জন্য সব জায়েজ। এতক্ষনে হাসনাতের মহিলার মুখ দেখার ফুসরত মিলল। অবশ্য চেহারা কোনো বিষয়ই না, অন্ধকারে সব একই রকম লাগে তার কাছে। তার এই ২৪-২৫ বছরের জীবনে গনিমতের মাল নাম করে কম তো যায়নি সে অন্ধকার ঘরে। অবশ্য বড় হুজুরদের উচ্ছিষ্টই জুটেছে সব সময় তার ভাগ্যে। বড় হুজুরদের উচ্ছিষ্টেও নাকি বরকত থাকে। তাই সে উচ্চবাচ্য না করে সব সময় হাসিমুখে সেই উচ্ছিষ্টের ওপরে হামলে পরেছে। ছিঁড়ে-কুটে খেয়েছে বড় হুজুরদের উচ্ছিষ্টের অবশিষ্টাংশ।
মহিলার মুখটা এখনো দেখা হয়নি হাসনাতের। তার চোখ মহিলার কোমর থেকে স্তন পর্যন্ত উঠতে না উঠতেই প্রচণ্ড এক শব্দের সাথে সাথে হাসনাত চোখে সর্ষে ফুল দেখলো। অবস্থা বেগতিক দেখে পাশে দাঁড়ানো অন্য দুই হেফাজতি এক ছুটে তাকে রেখেই পাশের গলিতে লুকিয়ে গেলো। মহিলার মুখ রাগে ও অপমানে লাল।
- ছি ছি হাসু, এখন তুই নিজের বড় বোনের দিকেও নজর দিচ্ছিস। ছি ছি ছি। তোর লজ্জা করে না?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন