শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

লুক্স লিখিত সুসমাচার - ২৯

লিখেছেন লুক্স

২৭৬.
মাদ্রাসাই হোক, নর্থ সাউথই হোক, আর বুয়েটই হোক, স্বর্গীও হুর ও গেলমান পাবার স্বপ্নে জিহাদী ইসলাম পালন ও কায়েম করার অধিকার সব মুসলমানেরই সমান। কোরান যখন একটা, বিশ্বব্যাপী মুসলমানও একই রকম।

২৭৭.
ভাই আপনি মুসলমান না?
ইসলামিক নাম নিয়া ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলেন, লজ্জা করে না আপনার? আগে নিজের নাম বদলান, পরে কথা বলেন।
আপনার নামের আগে মোহাম্মদ নাই কেন?
আপনি আমাদের নবীজির নামের সঙ্গে (সঃ) ব্যবহার করেন না কেন?
ইসলামের পিছে লাগছেন কেন? আর কোনো ধর্ম চোখে পড়ে না? 
ইসলামের সমালোচনা কইরা কত টাকা পান? আপনি কাদের এজেন্ট?
মরলে তুই তোর লাশ কি করবি? তোরে কবর দিবো না? 
আল্লাহ বিশ্বাস করস না, তোর কি মরার ডর নাই?
আল্লাহ না থাকলে তোর জন্ম কেমনে হইছে?

কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের লেভেলের আস্তিকদের এই ধরনের প্রশ্নগুলো থেকে নাস্তিকদের রেহাই দিতে প্রশ্নগুলোর উত্তর ছাপিয়ে একটি ছোট পকেট পুস্তক প্রকাশিত করে দেশের পাবলিক বাসে ও ট্রেনে বিক্রি করার দায়িত্ব নেয়ার জন্য দেশের কোন হৃদয়বান ব্যক্তি বা সংগঠনকে করজোড়ে অনুরোধ করা যাচ্ছে।

২৭৮.
কোরানে কাফেরদেরকে “অকৃতজ্ঞ”, “অবাধ্য”, “জঘন্য” বিশেষণে বিশেষিত করা হয়েছে। বইটি পড়ে আমি শিখলাম যে, আমার সাথে কারও মতবিরোধ থাকলে তাকে মনে-প্রাণে ঘৃণা করা উচিত। আরো বলা হয়েছে যে, শিরক ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ, তবে কোনো মুশরিক নিবেদিত প্রাণে ক্ষমা প্রার্থনা করলে এবং আল্লাহর সুমতি হলে আল্লাহ এই পাপ ক্ষমা করে দিতে পারেন। এখানে আমি “ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ” অংশটির ওপর গুরুত্ব আরোপ করছি। এ থেকে আমরা খুব সহজেই বুঝতে পারি, হিন্দু ও অন্য সব পৌত্তলিকদের ব্যাপারে একজন আদর্শ মুসলমানের দৃষ্টিভঙ্গি কী রকম।

২৭৯.
দুইটা ব্যাপারে আমার খুব মেজাজ খারাপ হয়: একজন নারী যখন ইসলামের পক্ষে কথা বলে, আর একজন মুসলমান যখন কাফেরদের দেশে বাস করে ইসলামকে ডিফেন্ড করতে চায়। শুধু তা-ই নয়, ইসলামকে একমাত্র সত্য ধর্ম দাবী এবং প্রচার করে, আর মোহাম্মদের জীবনী না জেনেই তার জীবনাদর্শ অনুসরণ করার কথা বলে।

২৮০.
যদি কোনো দেশে ফেসবুকে বা ব্লগে ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে লিখলে নাস্তিকদের জেলে যেতে হয়, যদি কোনো দেশে মোল্লারা শিশুদেরকে ধর্ষণ করলে ধর্ষককে গ্রেপ্তার করার আগে শয়তানের দোষ দেয়া হয়, তাহলে বুঝতে হবে সেটা একটা ইসলামী দেশ।

২৮১.
ধার্মিকরা এক আশ্চর্য প্রানী। আপনি যদি সমকামীদের প্রেম ও বিয়ের অধিকারের পক্ষে কথা বলেন, ধার্মিকরা ভাবে, আপনি নিজেও বোধ হয় সমকামী। এরা আরো ভাবে, আপনি সমাজের সবাইকে সমকামী হয়ে যাবার জন্য উৎসাহ দিচ্ছেন। মানুষের শারীরিক গঠন, যৌন চাহিদা এবং রুচি যে ভিন্ন হতে পারে,- এটা ধার্মিকদের মাথায় ঢোকে না। 

২৮২
ধার্মিকদের কাছে যৌনতা মানেই হচ্ছে তাদের ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত অশ্লীলতা, বহুবিবাহ, ধর্ষণ আর পরকালের হুর ও গেলমানের স্বপ্ন। প্রেমের মতো শাশ্বত ও মানবিক চারিত্রিক গুণ ধার্মিকদের কাছে এই সভ্য যুগেও অশ্লীল ও অনৈতিকই রয়ে গেছে।

২৮৩.
মাদ্রাসার ছাত্ররা ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্ব মানবে কী করে, যেখানে মাদ্রাসার শিক্ষকরাই বিবর্তনবাদ তত্ত্ব বোঝে না। বাংলাদেশের বেশির ভাগ মাদ্রাসার শিক্ষকদের ধারণা - বিবর্তনবাদ তত্ত্ব মানেই মানুষের জন্ম হচ্ছে বানরের গর্ভ থেকে। আমার কথা বিশ্বাস না হলে একজন মাদ্রাসার শিক্ষক বা ছাত্রের সঙ্গে বিবর্তনবাদ তত্ত্ব নিয়ে কথা বলে দেখুন।

২৮৪.
আল্লামা শফি মুরুব্বী মানুষ। শ্রদ্ধা করি বলেই তাঁকে আমি কখনোই ছাগল বলি নাই, ছাগলের মতো বলেছি।

২৮৫.
যদি কোনো ধার্মিক দাবী করেন যে, 
তার ধর্ম ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে, 
অন্য সকল ধর্মকে সমান ভাবে বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধা করে, 
তার ধর্মের উদ্দেশ্য হলো স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভ করা,

- তাহলে বুঝতে হবে যে, সে ধর্মে গাঞ্ছা খাওয়া নিষেধ না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন