লিখেছেন নিলয় নীল
নারীনিয়ন্ত্রণ পুরুষতন্ত্রের জন্য অন্যতম দুশ্চিন্তার কারণ। বোধিসত্ত্বের প্রতিটি উপদেশের মধ্যে নারীকে নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি প্রকট ভাবে দেখা যায়। কিন্তু তারপরও ‘নারী হলো দুর্নিবার, তাকে কখনোই নিয়ন্ত্রণ করা যায় না’ এই উপদেশও দিয়েছেন স্বয়ং বোধিসত্ত্ব।
মৃদুপাণি জাতকের (২৬২ নম্বর জাতক) বর্তমানবস্তুতে কোনো এক উৎকণ্ঠিত ভিক্ষুকে উদ্দেশ্য করে বোধিসত্ত্ব বলেন, “রমণীরা স্বীয় প্রবৃত্তির অনুসরণ আরম্ভ করিলে তাহাদিগকে রক্ষা করা অসম্ভব। পুরাকালে পণ্ডিতজনেও নিজের কন্যা রক্ষা করিতে পারেন নাই। পিতা কন্যার হাত ধরিয়াছিলেন, তথাপি সেই কন্যা প্রণোদিত হইয়া পিতার অজ্ঞাতসারে পুরুষান্তরের সহিত পলায়ন করিয়াছিলো।”
এই জাতকের অতীত বস্তুতে জানা যায়, বোধিসত্ত্ব পুরাকালে বারানসীর রাজপদে অধিষ্ঠিত হন। তার কন্যা ও ভাগিনেয় পরস্পর প্রেমাসক্ত হয়ে পড়ে। পুরুষের প্রেমে নারীটি এতোই উদ্বেলিত ছিল যে, সংকেতস্থলে মিলনের জন্য কৌশলে পলায়ন করে। এজন্যই বোধিসত্ত্ব বলেছেন, ‘হাত ধরিয়া বেড়াইলেও কেহ রমণীদিগকে রক্ষা করতে পারে না। রমণীরা এমনই অরক্ষণীয়া।’ এ বিষয়ে বোধিসত্ত্ব যে গাঁথাটি বলেন তা হলো:
কে পারে তুষিতে বল রমণীর মন
সাবধানে বলি সদা মধুর বচন!
নদীতে ঢালিলে জল,
কে কবে লভিবে ফল?
ললনার বাসনার অন্ত নাহি পাই।
নিয়ত নরক পথে নারীর গমন
দূর হতে সাধু তারে করে বিসর্জন।
তুষিতে নারীর মন যে করে যতন,
ভালোবাসে দেয় তারে যত পারে ধন,
ইহা মুত্র নাশ তার
যেন নারী দুর্নিবার,
ইন্ধনে লভিয়া পুষ্টি তাহাই যেমন
মুহূর্তের মধ্যে নাশ করে হুতাশন,
তেমনি নারীগণে যেবা ভালোবাসে
তাহাকেই পিশাচীরা অচিরে বিনাশে।
(চলবে)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন