লিখেছেন নিলয় নীল
পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯
পিতা দ্বারা কন্যার সতীত্ব পরীক্ষার আরও উদাহরণ পাওয়া যায় জাতকগুলোতে। ১০২ নম্বর জাতকের মতো প্রায় একই ধরণের কাহিনী আমরা দেখতে পাই ২১৭ নম্বর জাতকে। এই জাতকের নাম সেগগু জাতক। জাতকটির অতীতবস্তুতে পিতা তার কন্যার চরিত্র পরীক্ষাকালে জানায়:
পিতা দ্বারা কন্যার সতীত্ব পরীক্ষার আরও উদাহরণ পাওয়া যায় জাতকগুলোতে। ১০২ নম্বর জাতকের মতো প্রায় একই ধরণের কাহিনী আমরা দেখতে পাই ২১৭ নম্বর জাতকে। এই জাতকের নাম সেগগু জাতক। জাতকটির অতীতবস্তুতে পিতা তার কন্যার চরিত্র পরীক্ষাকালে জানায়:
সর্বত্র দেখিতে পাই নরনারীগণ
ইচ্ছামতো হয় ভোগবিলাসে মগন।
তুমি কিলো সেগগু
একা এতবড় সতী
না জান বৃষলীধর্ম হইয়া যুবতী?
বনে ধরিয়াছি হাত, কান্দো সে কারণ,
রয়েছে কুমারী যেন সারাটা জীবন।
কন্যাটি এ কথা শুনে তার সতীত্ব সম্পর্কে নিঃসংশয় হতে বলে পিতাকে এই ভাবে:
যে জন রক্ষার কর্তা সেই পিতা মম
বনমাঝে দুঃখ কেন দেন অতীব বিষম।
বনমাঝে কেবা মোর পরিত্রাতা হবে?
রক্ষক ভক্ষক হয় কে শুনেছে কবে?
প্রাচীন বিভিন্ন গ্রন্থে কন্যার সতীত্ব পরীক্ষা করতে দেখা যায়, সেক্ষেত্রে বৌদ্ধধর্মের ধর্মগ্রন্থও এমন কোন ব্যতিক্রম নয়। তবে ঐ সব গ্রন্থে সতীত্ব প্রমাণ করতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মাকে দেখা গেছে, কিন্তু বৌদ্ধধর্মে পুরুষতন্ত্র এতোই প্রকট যে, এ ক্ষেত্রে কন্যার সতীত্ব পরীক্ষা করে স্বয়ং তার পিতা। সতীত্ব পরীক্ষার পাশাপাশি নারীর চরিত্র পরীক্ষার দিকে আবার মনোনিবেশ করলে এই সংক্রান্ত একটি জাতক খুব বেশী চোখে পড়ে, তা হলো ১২০ নম্বর জাতক যার নাম বন্ধনমোক্ষ জাতক।
এই জাতকের অতীতবস্তুতে বারানসীরাজ তার অন্তঃপুরে ষোড়শ সহস্র নর্তকী থাকলেও শুদ্ধভাবে জীবনযাপন করতো, কিন্তু তার রাণী ছিল ব্যভিচারিণী। রাজা রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্রোহ দমনে গেলে রাণী ৬৪ জন দূতের সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়, কিন্তু সর্বশেষ রাজপুরোহিতরূপী বোধিসত্ত্ব রাণীর আহ্বানে সারা দেয় না। তাতে রাণী রেগে গিয়ে বোধিসত্ত্বের ওপরেই কাম প্রস্তাবের অভিযোগ আনে, তবে শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হয়, বোধিসত্ত্ব নির্দোষ। তখন রাজা বোধিসত্ত্ব বাদে বাকি ৬৪ জনকে প্রাণদণ্ডাদেশ দিতে চাইলে বোধিসত্ত্ব মহারাজকে বলেন: “মহারাজ ইহাদের বা দোষ কী? ইহারা দেবীর আদেশ মতো তার অভিলাষ পূরণ করিয়াছে। স্ত্রী জাতি স্বভাবতই দুষ্প্রবৃত্তি ও দুর্দমনীয়া, তাদের প্রয়োজনেই এরা সাড়া দিয়েছে, সুতরাং এদের আর দোষ কী?”
(চলবে)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন