লিখেছেন গোলাপ
পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩
বদর যুদ্ধে কুরাইশরা ছিলেন সংখ্যায় ও শক্তিতে স্বঘোষিত আখেরি নবী হয়রত মুহাম্মদ (সাঃ) ও তাঁর অনুসারীদের তুলনায় অনেক বেশি। কুরাইশদের সংখ্যা ছিল প্রায় ৯৫০ জন আর মুহাম্মদ অনুসারীদের সংখ্যা ছিল তাঁদের সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশেরও কম (প্রায় ৩১৩ জন)। এতদস্বত্বেও তাঁরা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের কাছে অত্যন্ত করুণভাবে পরাজিত হয়েছিলেন! কী কারণে তা সম্ভব হয়েছিল?
বিজয়ী মুহাম্মদের দাবী:
মুহাম্মদ তাঁর এই সফলতার পেছনের কারণ হিসাবে তাঁর কল্পিত আল্লাহর পরম করুণা ও অলৌকিকত্বের দাবি করেছেন।তিনি দাবি করেছেন যে, এই অলৌকিক সফলতার দৃষ্টান্তই হলো তাঁর সত্যবাদিতা আর কুরাইশদের মিথ্যাচারের প্রমাণ। তাঁর দাবি, "এই সত্য" প্রতিষ্ঠার জন্য মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ কুরাইশ কাফেরদের খুন করার জন্য বদর প্রান্তে আসমান থেকে জিবরাইল সহ প্রায় এক হাজার দুর্ধর্ষ সশস্ত্র বীর ফেরেশতার আগমন ঘটান! [1][2][3][4]
মুহাম্মদের ভাষায়,
৮:৭-৯ - "আর যখন আল্লাহ দু’টি দলের একটির ব্যাপারে তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছিলেন যে, সেটি তোমাদের হস্তগত হবে, আর তোমরা কামনা করছিলে যাতে কোন রকম কণ্টক নেই, তাই তোমাদের ভাগে আসুক; অথচ আল্লাহ চাইতেন সত্যকে স্বীয় কালামের মাধ্যমে সত্যে পরিণত করতে এবং কাফেরদের মূল কর্তন করে দিতে,যাতে করে সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে দেন, যদিও পাপীরা অসন্তুষ্ট হয়। তোমরা যখন ফরিয়াদ করতে আরম্ভ করেছিলে স্বীয় পরওয়ারদেগারের নিকট, তখন তিনি তোমাদের ফরিয়াদের মঞ্জুরি দান করলেন যে, আমি তোমাদিগকে সাহায্য করব ধারাবাহিকভাবে আগত হাজার ফেরেশতার মাধ্যমে।"
>>> পাঠক, আসুন আমরা মুহাম্মদের এই দাবিটিকে একটু মনোযোগের সাথে পর্যালোচনা করি। মুহাম্মদের স্ব-রচিত ব্যক্তি-মানসজীবনী গ্রন্থে (কুরান) তাঁর এই জবানবন্দিটি ভালভাবে বুঝতে হলে তাঁর এই দু'টি বাক্যের আগের দুটি বাক্য (৮:৫-৬) থেকে শুরু করতে হবে। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে যে, আবু সুফিয়ায়ের বাণিজ্য কাফেলার খবর পেয়ে মুহাম্মদ তাঁর অনুসারীদের ডেকে ঘোষণা দিয়েছিলেন,
"'এই সেই কুরাইশদের ধন-সম্পদ সমৃদ্ধ বাণিজ্য-বহর। যাও তাদের আক্রমণ কর, সম্ভবত: আল্লাহ এটি তোমাদের শিকার রূপে দান করবেন।' তাঁরা তাঁর ডাকে সাড়া দেয়; কিছু লোক আগ্রহের সাথে, কিছু লোক অনিচ্ছায়। কারণ আল্লাহর নবী যে যুদ্ধে যেতে পারেন তা তাঁরা চিন্তা করেন নাই।" [পর্ব ৩০]"
মুহাম্মদ সেই ঘটনারই বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে:
৮:৫-৬ – “যেমন করে তোমাকে তোমার পরওয়ারদেগার ঘর থেকে বের করেছেন ন্যায় ও সৎকাজের জন্য, অথচ ঈমানদারদের একটি দল (তাতে) সম্মত ছিল না। তারা তোমার সাথে বিবাদ করছিল সত্য ও ন্যায় বিষয়ে, তা প্রকাশিত হবার পর; তারা যেন মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে দেখতে দেখতে।"
>>> অর্থাৎ মুহাম্মদের কিছু অনুসারী [আনসার] তাঁদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই মুহাম্মদের নির্দেশ ও পীড়াপীড়ির কারণে (‘তারা তোমার সাথে বিবাদ করছিল’) এই আগ্রাসী অনৈতিক লুণ্ঠনকর্মে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁদের ধারণা ছিল যে, এই লুণ্ঠনকর্মটি হবে ঝুঁকিহীন ('যাতে কোন কণ্টক নেই')। ঝুঁকিহীন এই কারণে যে, তাঁরা ছিলেন সংখ্যায় ৩১৩ জন, আর আবু-সুফিয়ানের সাথে ছিল মাত্র ৭০ জন। কিন্তু তাঁরা বদর প্রান্তে এসে অপ্রত্যাশিতভাবে কুরাইশ দলের সম্মুখীন হন। বদর প্রান্তে পৌঁছার আগে তাঁরা এই কুরাইশ দলের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। কুরাইশ দলটিকে দেখে মুহাম্মদ অনুসারীরা স্বভাবতঃই অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ [তাঁদের দলে ৩১৩ জন আর কুরাইশ দলে ৯৫০ জন] সংঘর্ষে জড়িত হতে চাননি। কিন্তু মুহাম্মদ চান কুরাইশদের সাথে যুদ্ধ করতে।
মুহাম্মদ তাঁর এই জবানবন্দির পরের দু'টি বাক্যে (৮:৭-৯) ঐ ঘটনারই বর্ণনা দিচ্ছেন, এবং দাবী করছেন:
ক) - "আর যখন আল্লাহ দু’টি দলের একটির ব্যাপারে তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছিলেন যে, সেটি তোমাদের হস্তগত হবে, আর তোমরা কামনা করছিলে যাতে কোন রকম কণ্টক নেই, তাই তোমাদের ভাগে আসুক;"
>>> এখানে দু'টি দল বলতে মুহাম্মদ বুঝাতে চাচ্ছেন:
১) আবু সুফিয়ানের বাণিজ্য কাফেলা, ও
২) বদর অভিযানে সমবেত কুরাইশ দল
সুরা আনফাল ((৮ নম্বর সুরা) নাজিল হয় বদর যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর। যুদ্ধ শেষে ফলাফল মুসলমানদের অনুকূলে আসার পর বিজয়ী মুহাম্মদ দাবি করছেন যে, তাঁর আল্লাহ আগে থেকেই এই বিজয়ের “ওয়াদা’ করেছিলেন। সাক্ষী কে? বক্তা নিজেই! দাবিকারী নিজেই তাঁর দাবির "একমাত্র সাক্ষী"!
খ) - "অথচ আল্লাহ চাইতেন সত্যকে স্বীয় কালামের মাধ্যমে সত্যে পরিণত করতে এবং কাফেরদের মূল কর্তন করে দিতে, যাতে করে সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে দেন, যদিও পাপীরা অসন্তুষ্ট হয়"
>>> মুহাম্মদ দাবি করছেন যে, তাঁর অনুসারীরা যদিও ঝুঁকিহীন লুটতরাজ [ডাকাতি] জনিত উপার্জন কামনা করেছিলেন, কিন্তু তাঁর আল্লাহ চাইতেন কাফেরদের 'মূল কর্তন' করে দিতে। আর তার জন্য মুহাম্মদের আল্লাহ সাহায্য পাঠিয়েছিলেন। কীভাবে?
গ) - “তোমরা যখন ফরিয়াদ করতে আরম্ভ করেছিলে স্বীয় পরওয়ারদেগারের নিকট, তখন তিনি তোমাদের ফরিয়াদের মঞ্জুরি দান করলেন যে, আমি তোমাদিগকে সাহায্য করব ধারাবাহিকভাবে আগত হাজার ফেরেশতার মাধ্যমে।"
>>> এই অনন্ত চমকপ্রদ মহাবিশ্বের কোনো স্রষ্টা আছে, এমন কোনো প্রমাণ নেই। আলোচনার খাতিরে ধরে নেয়া যাক যে, এই অনন্ত বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের একজন স্রষ্টা আছেন, যিনি মহাক্ষমতাধর এক সত্তা। অন্যত্র মুহাম্মদ দাবি করেছেন যে, তাঁর ‘আল্লাহ যখন কোনো কিছু করতে ইচ্ছা করেন, তখন তাকে কেবল বলে দেন, ‘হও’ তখনই তা হয়ে যায় ["কুন ফা ইয়া কুন” (৩৬:৮২)]'। আর এই খানে মুহাম্মদ দাবি করছেন যে, সেই মহাক্ষমতাধর “আল্লাহ চাইতেন কাফেরদের মূল কর্তন করে দিতে"। কোনো সত্তার "ইচ্ছা করার" সঙ্গে সঙ্গেই যদি তা কার্যে পরিণত হয়, তাহলে সঙ্গত কারণেই সে সত্তাটির পক্ষে একজন অতি সাধারণ মানুষের মত খুনি ক্যাডার বাহিনী পাঠানো অসম্ভব, অবাস্তব ও অপ্রয়োজনীয়। কারণ ইচ্ছা করার সঙ্গে সঙ্গেই তার সেই ইচ্ছার বাস্তবায়ন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে তার ইচ্ছা = তার কর্ম। কর্ম সম্পাদনের জন্য তার কোনো কিছুরই সাহায্যের কোনোই প্রয়োজন নেই। [পর্ব-১১]
এর পরেও ধরে নেয়া যাক, যে কোনো কারণেই হোক, মুহাম্মদের দাবিকৃত মহা-মতাধর আল্লাহ আকাঙ্ক্ষা করেছেন যে, তিনি কাফেরদেরকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে কুপিয়ে খুন করবেন। [৮:১২] আর সেই অভিপ্রায়ে আল্লাহ তাঁর প্রিয়পাত্র স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদকে সাহায্য করার জন্য আসমান থেকে ঢাল-তলোয়ার সজ্জিত দুর্ধর্ষ ফেরেশতাকে বদর প্রান্তরে পাঠিয়েছিলেন। এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে যে-প্রশ্নটি অত্যন্ত জরুরি, তা হলো,
“৯৫০ জন কুরাইশ কে শায়েস্তা করার জন্য ঠিক কত জন অতিরিক্ত সৈন্য প্রয়োজন?”
উচ্চ কর্তৃপক্ষ (Superior authority) যদি "নিশ্চিতরূপে জানেন" যে, তাঁর একজন ফেরেশতা একাই ৯৫০ জন কাফেরকে পরাস্ত করতে সক্ষম, তবে তিনি কেন দশ জন ফেরেশতা পাঠাবেন? যদি তিনি নিশ্চিতরূপে জানেন যে, ৯৫০ জন কাফেরকে পরাস্ত করার জন্য ৫০০ জন ফেরেশতার প্রয়োজন, তবে ১০০০ জন ফেরেশতাকে তিনি মাঠে নামাবেন কোন অজুহাতে?
অপরপক্ষে, উচ্চ কর্তৃপক্ষ যদি এই একান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি সম্পর্কে "সম্পূর্ণ অজ্ঞ"হন, তবে তিনি সফলকাম হওয়ার জন্য অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই যথাসম্ভব অধিক পরিমাণ সাহায্যকারী সৈন্য পাঠাবেন। যা হতে পারে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক অধিক। আর তা তিনি নির্ধারণ করবেন "তাঁর ধারণায়" শত্রু পক্ষের সৈন্যদলের এক একটি সৈন্যের গড় শক্তির বিরুদ্ধে তাঁর সৈন্যদলের এক একটি সৈন্যের গড় শক্তির আনুমানিক তারতম্যের ওপর ভিত্তি করে। তবে যে কোনো মনুষ্য সন্তান [যেমন, মুহাম্মদ]এরূপ অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে বিজয় নিশ্চিত করার জন্য একজন কুরাইশের শক্তির পরিমাণ একজন ফেরেশতার শক্তির সমতুল্য জ্ঞানে ৯৫০ জন কুরাইশকে পরাস্ত করার জন্য কমপক্ষে সমপরিমাণ অথবা তার অধিক সংখ্যক অস্ত্রসজ্জিত সাহায্যকারী সৈন্য মাঠে নামাবেন।
মুহাম্মদ দাবী করেছেন যে, তাঁর আল্লাহ ৯৫০ জন কাফেরকে পরাস্ত করার জন্য ১০০০ জন ফেরেশতাকে মাঠে নামিয়েছিলেন!
অর্থাৎ, স্বঘোষিত আখেরি নবী মুহাম্মদের বর্ণিত এই দাবীটি “হুবহু” একজন মনুষ্য সন্তান অনিশ্চিত বিষয়ে ঠিক যেমনটি "ধারণা" করেন ঠিক তেমনই।
সেই ১০০০ জন বহিরাগত দুর্ধর্ষ স্পেশাল ফেরেশতা বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য মুহাম্মদের নেতৃত্বে ছিল আরও ৩১৩ জন মানবসন্তান। অর্থাৎ, আল্লাহ ও মুহাম্মদের সম্মিলিত সৈন্যের পরিমাণ ১৩১৩ জন। যা কুরাইশদের সৈন্য সংখ্যার প্রায় দেড় গুণ! এই দেড় গুণ বেশী সৈন্য নিয়ে আল্লাহ ও মুহাম্মদের সম্মিলিত সৈন্যরা সারাদিন যুদ্ধ করে “মাত্র” ৭০ জন নরাধম কাফের কুরাইশকে খুন এবং ৭০ জনকে বন্দী করতে সফলকাম হয়েছিলেন। বাকি ৮১০ জন (৮৫ শতাংশ) কুরাইশ সফলভাবে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন।
মুহাম্মদের দাবীর সার সংক্ষেপ:
(১) আল্লাহর অদ্ভুত বিবেচনাবোধ!
- ডাকাতি নয়, যুদ্ধ করে নিজেরই একান্ত পরিবার পরিজনদের খুন করার আকাঙ্ক্ষা
(২) অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে সাধারণ মানবসন্তানের মতই আল্লাহর অতি সাবধানতা!
- ৯৫০ জন যুদ্ধে অনিচ্ছুক কাফের মানবসন্তানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র ১০০০ ফেরেশতা প্রেরণ
(৩) মহা সফলতার এমন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত!
- তার ও তার নবীর সম্মিলিত চেষ্টার পরও ৮৫% শত্রুর সফল পলায়ন!
স্বঘোষিত আখেরি নবী মুহাম্মদ বিন আবদুল্লাহর ওপরোক্ত উদ্ভট (৮:৭-৯) দাবি স্রষ্টার শক্তিমত্তাকে নিয়ে চরম তামাশা ছাড়া অন্য কোনোভাবে ব্যাখ্যা করার সুযোগ নেই।
মুহাম্মদ ছিলেন সপ্তম শতাব্দীর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাবঞ্চিত এক আরব বেদুইন। তাঁর এ সকল উদ্ভট দাবি ও উক্তিতে অবাক হওয়ার কোনোই কারণ নেই। অবাক হওয়ার বিষয় হলো, আজকের পৃথিবীর ঐ সকল ইসলাম বিশ্বাসীদের মানসিকতা ও কর্মকাণ্ড, যারা মুহাম্মদের এই সব অর্থহীন ও উদ্ভট দাাবিকে পরম সত্য জ্ঞানে প্রচার ও প্রতিষ্ঠার ব্রতে ব্রতী।
এই মহাবিশ্বের কোনো স্রষ্টা আছে এমন কোন প্রমাণ নেই; তা সত্ত্বেও বর্তমান পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ কোনো না কোনো স্রষ্টায় বিশ্বাসী। তাঁদের প্রায় প্রত্যেকেই তাঁদের সেই নিজ নিজ স্রষ্টার পরিচয় পেয়েছেন তাঁদের পিতা-মাতা, নিজ পরিবার-পরিজন, সমাজ-সংস্কৃতি ও পরিপার্শ্বিকতা থেকে। স্বাভাবিক পরিবেশে ধর্মান্তরিতের সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য। যারা এই সত্যকে হৃদয়ঙ্গম করতে অসমর্থ, তাঁদের কাছে আমার অতি সরল প্রশ্ন, "আপনি যে ধর্ম ও স্রষ্টায় বিশ্বাসী, তা আপনি কীভাবে পেয়েছেন? জন্মসূত্রে নাকি ধর্মান্তরিত হয়ে?" যদি আপনি ধর্মান্তরিত ব্যক্তিদের একজন হয়ে থাকেন তবে আপনার কাছে আমার প্রশ্ন, "আপনার পিতা-মাতা, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব এবং আপনার পরিপার্শ্বের প্রায় সকল লোক তাঁদের নিজ নিজ ধর্ম ও স্রষ্টার বিশ্বাস কোথা থেকে পেয়েছেন? ধর্ম ও ঈশ্বর বিশ্বাস যে মূলত: পরিবার থেকে প্রাপ্ত বিষয়, এই সত্যকে বুঝতে কোনো মহাজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই।
মুহাম্মদের বিজয় ও কুরাইশদের পরাজয়ের প্রকৃত কারণ:
আদি ও বিশিষ্ট মুসলিম ঐতিহাসিকদের বর্ণনায় আমরা অতি সহজেই বুঝতে পারি যে, কুরাইশদের এই করুণ পরাজয়ের পেছনে কোনো অলৌকিকত্ব লুকিয়ে নেই। মুহাম্মদের প্ররোচনায় যে সমস্ত কুরাইশ মুহাম্মদের মতবাদে দীক্ষিত হয়ে মুহাম্মদের আদেশে মদিনায় হিজরত করেছেন, তাঁরা সবাই ছিলেন মক্কাবাসী কোনো না কোনো কুরাইশদেরই একান্ত নিকটাত্মীয়, পাড়া-প্রতিবেশী অথবা বন্ধু-বান্ধব। তাঁরা এই সব পথভ্রষ্ট স্বজন ও আনসারদের বিরুদ্ধে কোনরূপ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়াতে চাননি - যা ছিল তাঁদের অন্তর্নিহিত মানবিক বৈশিষ্ট্যেরই বহিঃপ্রকাশ। (পর্ব- ৩১)
বদর যুদ্ধের প্রাক্কালে সহকারীদের উদ্দেশে মুহাম্মদের আদেশ,
৮:১২ -১৩ - "--আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব। কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাট জোড়ায় জোড়ায়। যেহেতু তারা অবাধ্য হয়েছে আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের, সেজন্য এই নির্দেশ। --"।
সহি বুখারি: ভলিউম ৪, বই ৫২, নং ২২০
আবু হুরাইরা হইতে বর্ণিত: আল্লাহর নবী বলেছেন,
"--সন্ত্রাসের মাধ্যমেই আমি জয়যুক্ত হয়েছি” ---[5]
>>> নিঃসন্দেহে, কুরাইশদের পরাজয়ের প্রকৃত কারণ হলো মুহাম্মদ ও তাঁর সহচরদের প্রতি তাঁদের মানবিক দুর্বলতা, স্বজনদের প্রতি তাঁদের সহিষ্ণুতা, অনুকম্পা ও মানবতাবোধ। আর মুহাম্মদের দীক্ষায় দীক্ষিত নব্য মুসলমানদের জয়লাভের প্রকৃত কারণ হলো কুরাইশদেরই প্রতি তাঁদের সীমাহীন ঘৃণা, আক্রোশ ও নৃশংসতা।
ইসলামের ইতিহাসের প্রথম রক্তক্ষয়ী এই যুদ্ধটিই ছিল বিরুদ্ধবাদীদের প্রতি মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের প্রচণ্ড ঘৃণা, আক্রোশ ও নৃশংসতার সর্বপ্রথম চরম বহিঃপ্রকাশ ও দৃষ্টান্ত। তাই স্বাভাবিকভাবেই কুরাইশদের পক্ষে কল্পনা করাও সম্ভব ছিল না যে, মুহাম্মদ ও তাঁর মতবাদে দীক্ষিত স্বজনরা কতটা ভয়ংকর ও নিষ্ঠুর।
বিরুদ্ধবাদীদের মনে ভীতি সঞ্চারের জন্য তাঁদেরকে নৃশংসভাবে জবাই করার আদেশ জারির প্রয়োজন মুহাম্মদের। আর সেই প্রয়োজনেই তাঁর এই নৃশংসতার আদেশ। এখানে এই "আমি" আর কেউ নয়, স্বয়ং মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ! কুরাইশদের মনে ভীতি সঞ্চার করার জন্য মাফিয়া স্টাইলে "সন্ত্রাসী খুনি বাহিনী" পাঠানোর প্রয়োজন হয় রক্ত মাংসের মানুষের; স্রষ্টার নয়। মুহাম্মদ বিন আবদুল্লাহর ওপরোক্ত হাস্যকর দাবী ও আদেশের সাথে স্রষ্টার কোনোই সম্পর্ক নেই।
মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা (যদি থাকে) কি এত ক্ষুদ্র ও নীচ হতে পারেন?
(চলবে)
[কুরানের উদ্ধৃতিগুলো সৌদি আরবের বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ (হেরেম শরীফের খাদেম) কর্তৃক বিতরণকৃত বাংলা তরজমা থেকে নেয়া; অনুবাদে ত্রুটি-বিচ্যুতির দায় অনুবাদকারীর। কুরানের ছয়জন বিশিষ্ট অনুবাদকারীর পাশাপাশি অনুবাদ "এখানে"।]
তথ্যসূত্র:
[1] Tafsir Jalalayn:
[2] Tafsir Ibne Kathir:
[3] সহি বুখারি: ভলিউম ৫, বই ৫৯, নং ৩২৭
Narrated Rifaa: (who was one of the Badr warriors) Gabriel came to the Prophet and said, "How do you look upon the warriors of Badr among yourselves?" The Prophet said, "As the best of the Muslims." or said a similar statement. On that, Gabriel said, "And so are the Angels who participated in the Badr (battle)."
[4] সহি বুখারি: ভলিউম ৫, বই ৫৯, নং ৩৩০
Narrated Ibn 'Abbas: The Prophet said on the day (of the battle) of Badr, "This is Gabriel holding the head of his horse and equipped with arms for the battle.
[5]সহি বুখারি: ভলিউম ৪, বই ৫২, নং ২২০
Narated By Abu Huraira : Allah's Apostle said, "I have been sent with the shortest expressions bearing the widest meanings, and I have been made victorious with terror (cast in the hearts of the enemy), and while I was sleeping, the keys of the treasures of the world were brought to me and put in my hand." Abu Huraira added: Allah's Apostle has left the world and now you, people, are bringing out those treasures (i.e. the Prophet did not benefit by them).
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন