মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০১৪

আমার 'আমার অবিশ্বাস' পাঠ - ০১

হুমায়ুন আজদের 'আমার অবিশ্বাস' নামের বইটা পড়তে শুরু করেছিলাম বেশ আগে। ধর্মকারী তখন স্থগিতাবস্থায়। কিন্তু কিছুদূর পড়ার পরে লক্ষ্য করলাম, বইটিতে উদ্ধৃতিযোগ্য ছত্রের ছড়াছড়ি। পড়া তখনই থামিয়ে দিয়ে স্থির করলাম, ধর্মকারী আবার সচল হলে ধর্মকারীর পাঠকদের (অনেকেরই বইটা পড়া আছে, জানি, তবুও...) সঙ্গে টাটকা পাঠমুগ্ধতা ভাগাভাগি করবো। তাই পড়তে শুরু করলাম আবার। বিসমিল্যা।

১. 
মহাজগতের রহসীকরণে ধর্ম নেয় প্রধান ভূমিকা; তার কাজ হয়ে ওঠে রহস্যবিধিবদ্ধকরণ, আলো সরিয়ে অন্ধকার ছড়ানো, মানুষের মনে বিশ্বাস সৃষ্টি করা সে-সব সম্বন্ধে যা সম্পূর্ণরূপে অস্তিত্বহীন।

২.
মানুষের জন্য যা কিছু ক্ষতিকর, সেগুলোর শুরুতেই রয়েছে বিশ্বাস; বিশ্বাস সত্যের বিরোধী, বিশ্বাসের কাজ অসত্যকে অস্তিত্বশীল করা। বিশ্বাস থেকে কখনও জ্ঞানের বিকাশ ঘটে না; জ্ঞানের বিকাশ ঘটে অবিশ্বাস থেকে, প্রথাগত সিদ্ধান্ত দ্বিধাহীনভাবে না মেনে তা পরীক্ষা করার উৎসাহ থেকে। 

৩.
পৃথিবী জুড়ে মানুষ গড়ে তুলেছে বিচিত্র বিশ্বাসের জগত, বিশ্বাস দিয়ে তারা ভাগ ক'রে ফেলেছে বিশ্বকে, তারা কাউকে বিশ্বাসের জগতের বাইরে থাকতে দিতে রাজি নয়। 

৪.
পৃথিবীর দীর্ঘস্থায়ী মহামারীর নাম বিশ্বাস। 

৫.
যা সত্য, যা প্রমাণিত, যা সম্পর্কে কোনো সন্দেহ নেই, তাতে বিশ্বাস করতে হয় না; কেউ আমরা বলি না যে আমি বিদ্যুতে বিশ্বাস করি, বা রোদে বিশ্বাস করি, বা গাড়িতে বিশ্বাস করি, কেননা সত্য বা প্রমাণিত ব্যাপারে বিশ্বাস করতে হয় না, বিশ্বাস করতে হয় অসত্য, অপ্রমাণিত, সন্দেহজনক বিষয়ে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন