মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০১৪

পাঁচ ফোড়ন - ১০

লিখেছেন সাদিয়া সুমি

৪৬.
কুরান পড়লে বোঝা যায় যে, মহামদ যা করতেন বা ভাবতেন, আল্লা সেটাকেই বৈধতা দিয়ে দিতেন। পুরো কুরানে আল্লা মহামদকে নিয়ে যত কথা বলেছেন, আর কোন কিছু নিয়েও অত কথা বলেননি। মানবজাতি সম্পর্কে তার তেমন কোনো চিন্তা ছিল না। নবীর বউরা পরপুরুষের সাথে কথা বলবে না কিংবা পুত্রবৎ জেয়াদের বউকে বিয়ে করা যেতে পারে - এসব নিয়ে আল্লার প্রচণ্ড মাথা ব্যথা ছিল। অথচ জ্ঞান-বিজ্ঞান নিয়ে তার কোন আগ্রহই ছিল না। আল্লার জীবনের সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি হলো: এত মিথ্যা কথা বলা সত্ত্বেও পৃথিবীর আশি ভাগ মানুষকে তার ধর্মে টানতে পারেন নি।

বেচারা! মহামদের দালালি করে আর কত বড় হওয়া যায়!

৪৭.
আমি বহুবার ঈশ্বরকে চ্যালেঞ্জ করেছি আমাকে মেরে ফেলার জন্য। তিনি পারেননি। অথচ আমি কোনো সন্ত্রাসী বা জামাতিকে যদি বলতাম, তবে সে অবশ্যই তা পারত।

৪৮.
জীবন মানেই টিকে থাকার প্রতিযোগিতা। ব্যাকটেরিয়া থেকে শুরু করে মানুষ পর্যন্ত সকলেই এই সংগ্রামে লিপ্ত। ক্ষুদ্র জীবের বেঁচে থাকার ব্যাপারটা খুবই অনিশ্চিত। দেখা গেছে, প্রতিদিন যে সংখ্যক ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়, তার সামান্য একটি ভগ্নাংশ এক দিন সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকে। খাদ্যের অভাব ও প্রতিকুল পরিবেশ এর প্রধান কারণ। পৃথিবীর জীববৈচিত্র ধ্বংস হবার অন্যতম কারণ মানুষ। মানুষ তার খাদ্য সংগ্রহ, বসতি স্থাপন, চাষাবাদের জন্য এই প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করেছে। এছাড়া বিভিন্ন কারনে প্রতিদিন প্রায় ২০০ ধরনের জীব [এককোষী ও বহুকোষী] অবলুপ্তির শিকার হচ্ছে। আবার সমান সংখ্যক নতুন জীব জন্মও নিচ্ছে। আমাদের জানা মতে পৃথিবীতে মোট জীব আছে প্রায় ৯০ লক্ষ ধরনের। প্রতিটি জীবের প্রধান লক্ষ্য জীবনের ধারাকে প্রবাহিত রাখা। সেজন্য দরকার পর্যাপ্ত খাদ্যগ্রহনের মাধ্যমে বেঁচে থাকা এবং প্রজননের মাধ্যমে বংশ গতিধারা অব্যাহত রাখা। আর এ কারণেই সকলে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ।

একজন আরেকজনকে ধরে ধরে খাওয়া - জীবজগতের এই প্রিমিটিভ ফুড চেইন সিস্টেম প্রমাণ করে যে, মহাবিশ্বের কোনো অধিকর্তা বা ঈশ্বর নেই।

৪৯.
জীবন আনন্দের। কোনো কৈফিয়তের জন্য নয়। প্রাণভরে একে উপভোগ করতে চাই। কারণ এ জীবন এটাই। এর কোন পুনর্জন্ম নেই। নৈরাশ্যবাদীরাই ওসব কল্পনা করে।

৫০.
সৃষ্টির একটি অনাবিল আনন্দ আছে। যৌনতা হচ্ছে সৃষ্টির পূর্বরাগ। পৃথিবীর যত সৌন্দর্য্য, তার সবটাই যৌনতাকে আবর্ত করে। পাখির কলকাকলি, ফুলের বর্ণ এবং গন্ধ, পশুপাখীর ডাক, মানুষের সঙ্গীত - সবই প্রেম বা যৌনতাকে কেন্দ্র করে। যৌনতা একটি শিল্প, একটি দর্শন, একটি বিজ্ঞান এবং জীবের বেঁচে থাকার প্রধান আকর্ষণ। বিপরীত লিঙ্গ না থাকলে এই কষ্টকর জীবনে কেউ বাঁচতে চাইত না।

যৌনতাকে নিয়ে ভয়, সংকোচ, লজ্জা বা পাপবোধের কিছুই নেই। সহজভাবে নেয়াটাই বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক। এটা জীবনের অপরিহার্য একটি অংশ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন