লিখেছেন লুক্স
৪০০.
রমনা বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আট জনের এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত ছয় জনের প্রত্যেকের নামের সঙ্গেই শোভা পাচ্ছে ''মুফতি'', ''মাওলানা'' অথবা ''হাফেজ'' - এ ধরনের ইসলামী জ্ঞান ও শ্রদ্ধাসূচক বিশেষণ। অথচ এ ভয়াবহ অপরাধীরাই আবার দেশের সহজ সরল মানুষদেরকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে - ধর্মের যৌক্তিক সমালোচনাকারী ও মানবতাবাদী নাস্তিকরাই ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্রু।
৪০১.
আমাদের আকাঙ্খা অনেক বড়। আমরা যেতে চাই অনেক দূরে। কিন্তু ধর্মই আমাদের সামনে এগুতে দিচ্ছে না।
৪০২.
দিনে একবারও ঠিকমতো খেতে পায় না- বাংলাদেশের এরকম অসংখ্য মানুষকে আমি বলতে শুনেছি - এত দুঃখ-কষ্টের পরও আমি খুব ভাগ্যবান রে বাবা যে, আমি একজন মুসলিম হয়ে জন্মগ্রহণ করেছি।
একবার একটা প্রামাণ্য চিত্র দেখেছিলাম মাইন বিস্ফোরণে আহতদের জীবন সংগ্রাম নিয়ে। আফগানিস্তান আর চেচনিয়ার মতো দেশে কাঠের তৈরি রেডিমেড কৃত্রিম পা কিনতে পাওয়া যায়। আমরা যেমন গাড়ি কিনতে পারলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি, মাইন বিস্ফোরনে পা হারানো লোকগুলো একটা কৃত্রিম পা কিনতে পারলে নিজেকে সেরকমই ভাগ্যবান বলে মনে করে। প্রামাণ্য চিত্রটিতে মাইন বিস্ফোরণে এক পা হারানো এক যুবককে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, আপনার এখন কেমন লাগছে? তার উত্তর ছিল, নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। একটা পা গেছে, কিন্তু আমার প্রাণটাওতো যেতে পারতো। আমি নিশ্চিত, আমি মুসলিম বলেই আল্লাহ সেদিন আমাকে প্রাণে মারেননি।
আরেক চলচ্চিত্রে দেখেছি- সোমালিয়া আর ইথিওপিয়ার খরা দুর্গত অঞ্চলে টানা তিন বছর ধরে এক ফোঁটা বৃষ্টিও হয়নি। কঙ্কালসার মানুষগুলো না খেয়ে লাল মরুভূমিতে মরে আছে। শিশুদের শরীর ঠুকরে ঠুকরে খাচ্ছে শকুনেরা। এমন সময় দূরের মসজিদ থেকে ভেসে আসলো আজান। হাড্ডিসার অনাহারে মৃতপ্রায় মানুষের মুখে ফুটে উঠলো স্বস্তি। একজন তো বলেই ফেললো, আমি খুবই ভাগ্যবান মুসলমান, মৃত্যুর আগে অন্তত আজানটা শুনতে পারছি।
এরকম অসংখ্য উদাহরণ আমি জীবনে দেখেছি, অবর্ণনীয় আর অমানবিক কষ্ট ভোগ করেও মুসলমানরা শুধু তার পারিবারিক সূত্রে পাওয়া ধর্মের কারণেই নিজেদেরকে ভাগ্যবান বলে মনে করে। আমাকেও মাঝে মাঝে কেউ কেউ জিজ্ঞেস করে, তুমি কি নিজেকে ভাগ্যবান মনে কর না? আমি বলি, হুম, আমি অনেক ভাগ্যবান যে, আমি ভাগ্যে বিশ্বাস করি না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন