লিখেছেন বাংলার উসমান মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ ইসলাম
কয়েক বসর আগে যখনো মসজিদে মাইক লাগানি হয় নি,কত কষ্ট!কারণ সিয়াম সাদনার মাসটির রজনিগুলাতে সারা গেরামে দৌড়াইয়া দৌড়াইয়া সিতকার কোরি বলতে হইত, সেরি খাইবার শময় হয়েসে, সবাই উঠি যান, সবাই উঠি যান।
অন্দকার রাইতে ভুত জ্বিনে আসর করা গাছগুলার নিস দিয়া নিরব নিস্তব্দ জনমানবশূইন্য রাস্তায় ডরাইয়া ডরাইয়া হাটাহাটির গটনাগুলা মনে আইশলে আমার এখন শুদু হাসি ফায়....
গত বসর মসজিদে আল্লাহরবাস্তের টাকা-ফয়সা দিয়া খরিদ করা নতুন মাইক ফেয়ে আমি তখন আনন্দে কী খুশি! আজানের সময় হবার আগেই খুশিতে মাইক অন করি দেতাম। তারফর মাইকের একেবারে কাসে মুখ নিয়া কাশি দিতুম,বা কারো লগে হুদা হুদাই কথা বলা শুরু করি দিতুম। কল্পনায় দেখতুম,মসজিদের বাহিরে গেরামের লুকজন আমার কাশির আবাজ,গলা খাকারির আবাজ কান খাড়া করি শুনতেসে আর মাইক আবিষ্কার নিয়া বিস্মিত হইতেসে।
তখন,রমজান মাসে সেহিরি খাওনের কমসেকম দুই ঘন্টা আগে উঠিয়া মাইকে গজল গাওয়া শুরু কইত্তাম,আর একটু ফরফর কইতাম, সবাই মশজিদে সোলি আশুন। আমার সুমধুর কণ্ঠের দুয়া দুরুদ গজল ও আজানের সুমিশটো ধ্বনি নাসারাদের তৈয়ারি মাইকের চোংগার মধ্য দিয়া বিকট আবাজ ধারণ করিয়া, নিরব রাতের আধারে সারা গাঁয়ের গায়ের উফর বিস্ফোরিত হই ছড়াই ফড়ত।
দীর্গ সময় ধরিয়া মাইকে আমার সিল্লাসিল্লির বেফারটা, অতিষ্ঠ জনজিবনে হয়তবা এক চাপা ক্রোদ সৃষ্টি করে। কিন্তুক কেউ কিসু কৈইতারেনা।... হাহাহা। কারণ কিসু কোইতে গেলেই ত ধরা; কী, আল্লাহর কালামের বিরুদ্দে কথা কয়! আল্লাহর কালাম ভালো লাগে না! কে সে নাস্তেক নাফরমান! ধরি আন তাকে!... হাহাহা, মূলত এসব কিসুর মুখামুখি হতে হবে বলিয়া কেউ মুখ খুলিত না। তবে ফাবলিকের রাগ আর ঘিনার বহিফ্রকাশ আমি বুইজতে ফাইত্তাম দুইটা বেফার লক্ষ্য কোইল্লে।
এক।। মাইকে আমার এত আহবান সত্ত্বেও মসজিদে নামাজির উফস্থিতি অতি নগইন্য।
দুই।। দিনের বেলায় রাস্তা দিয়া হাটি যাওয়ার সময় আমার দিকে সবাই কেমুন যেন এক বিশেশ রকুম দৃষ্টি নিবদ্দ করত।
হয়ত বছর খানিক ধরিয়া আমার অত্যাসারেই মাইকটাতে নানান গোলযোগ দিখা দেয়, বেটারি অবলস্টো হই যায়।
কিন্তুক আমি ত "ইসলামের বন্দু"! সামাইন্য মাইক নষ্ট আর তার জন্য দ্বীনের দাওয়া হবে না বা সবাইকে ইসলামের সায়াতলে চলি আইশতে বলা হবে না, তা হতে ফারে না!
তাই এই বসর আমি রাতের ৩টায় নিজ নিবাস থিকা বের হয়ে মানষের বাড়ি যাইয়া তাদের টিনের দরজায় ধড়াম ধড়াম আঘাত কোইত্তে কোইত্তে বলি, উঠেন উঠেন সময় আর বেশি বাকি নাই,সেরি খাইতে উঠেন।
মধ্য রাইতে তাদের ঘরের দরজায় বাড়ি মারি, আর তাদের ঘুমের ডিশটাব কোইত্তে পারিয়া এবং কল্পনায় তাদের বিরুক্তিমাখা মুখ দেখিয়া মনে মনে হাইশতে থাকি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন