ইউটিউবে একটি ভিডিও দেখা যাচ্ছে আজান ফ্লাওয়ার নিয়ে। এই ভিডিওটি নিয়ে দেশের একাধিক অনলাইন নিউজ পেপার খবর ও করেছে।
ভিডিও লিংক: http://youtu.be/owtU6uD6toc
সিএনএন-এ আজারবাইজান-এর লোকাল টিভি "লিডার টিভি"-র একটি রিপোর্ট টেলিকাস্ট করা হয়েছিল। ইউটিউবে সেই রিপোর্টটাই দেখানো হয়েছে। লিডার টিভির রিপোর্টারের নাম ফুয়াদ তাগাজাদি। সিএনএন-এর কোন সাংবাদিক আজারবাইজানে যায়নি।
নেটে সরাসরি লিডার টিভি আপনি দেখতে পারেন। আমি আজ বিকাল ৫ টায় দেখলাম, এরা হ্যারি পটারের সিনেমা ওদের ভাষায় ডাবিং করে দেখাচ্ছে। লিডার টিভির লিঙ্ক।
খবরে আমাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে আজারবাইজান এর শাকিরেট (সম্ভবত) নামে এক গ্রামে মোহাম্মদ রহিম এলদোরাদ-এর ফুলের খামারে। রহিম সাহেবের কাছে অনেক ফুল আছে। সাংবাদিক সাহেবকে তিনি আজান ফ্লাওয়ার নামে বিস্ময়কর একটি ফুল দেখালেন। যেটি আজানের সাথে সাথেই ফোটে। ভিডিওতে দেখানো হল, মসজিদের মাইকে আজান দিচ্ছে আর ফুল ফুটচ্ছে। লক্ষ্য করার ব্যাপার হল, ক্যামেরা ফোকাস করা হয়েছিল কেবল একটি ফুলের ওপরেই। পুরো ফুলবাগান বা গাছের সব ফুলের ওপরে না। সম্ভবত গাছের সব ফুল একসাথে আজানের সময় ফোটে না। যদি ফুটত, তাহলে নিশ্চয়ই দেখাত।
রিপোর্টটিতে ফুলের নাম বলা হয় নি। ফুলের ছবি দেখে যা বুঝলাম, এটি evening primerose ফুল হতে পারে। সায়েন্টিফিক নাম Oenothera (জেনাস এর নাম অন্থেরো। স্পেসিস এর নাম ক্লিয়ার বুঝলাম না); এই ফুল বিকালে/সন্ধ্যায় ফোটে। এই জন্য এর নাম ইভিনিং প্রাইমরোজ।
এই ফুলের বৈশিষ্ট্য হল - ফুলটি সম্পূর্ণ ফুটতে সময় নেয় খুব কম। প্রায় ১ মিনিটের মধ্যেই ফুলের সবগুলো পাপড়ি ফুটে যায়।
ছবিতে ফুলসহ একটি ইভিনিং প্রাইম রোজ এর গাছ দেখা যাচ্ছে
ফুলটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে উইকিপিডিয়া দেখুন।
আজান দিতেও কিন্তু সময় লাগে এক মিনিটের মতই। আসর/মাগরিব/ইশার আজানের সময়েই ফুলটিকে কেউ ফুটতে দেখে সম্ভবত এই ফুলের ওপরে অলৌকিকত্ব আরোপ করেছে।
আর আজারবাইজান দেশের লোকাল ফুল না এটি। এটি মূলত মেক্সিকো এবং মধ্য আমেরিকার ফুল। তবে ইউরোপের কয়েক জায়গাতেও দেখা যায়। কোনো একভাবে আজারবাইজানে মোহাম্মদ রহিমের কাছে ফুলটি এসেছে এবং স্থানীয় লোক অচেনা এই ফুলের অদ্ভূত এই বৈশিষ্ট্যকে অলৌকিক কাহিনী বানাতে বেশি সময় নেয়নি।
আজানের প্রচলন শুরু হয়েছে ৬০০ সালের পরে। শিয়া মুসলমান এবং সুন্নি মুসলমানদের আজানের বাক্য আলাদা।মাইক্রোফোনের বিকাশ ঘটেছে ১৯০০ সালের পরে। আর ইভিনিং প্রাইম রোজ এর অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায় প্লাইস্টোসিন যুগেও (আজ থেকে ২৫ লাখ বছর আগে)।
এই দীর্ঘ সময়ে ইভিংনি প্রাইম রোজ প্রাকৃতিক নিয়মেই ফুল ফুটিয়েছে ,পরাগায়ন ঘটিয়েছে, ফল এবং বীজ হয়েছে এবং মারা গিয়েছে। আজান এর ধ্বনির জন্য সে অপেক্ষা করেনি বা বর্তমানের আজানের শব্দে তার কোনো লাভ-ক্ষতি হয় না। মেক্সিকোর যে সব অমুসলিম এলাকায় ইভিনিং প্রাইম রোজ জন্মায়, সেখানে কখনো কেউ আজান দেয় না, কিন্তু প্রাইম রোজ সেখানে ও সন্ধ্যায় ১ মিনিটের ভেতরে ফুল ফুটিয়ে যাচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন